নবীগঞ্জে ১৪৪ ধারা জারি

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় পুরোনো বিরোধের সূত্র ধরে দুই গ্রামের লোকজনের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে একজনের প্রাণ গেছে। আহত হয়েছেন শতাধিক।
গতকাল সোমবার বিকেলে উপজেলার কুকুটিয়া ইউনিয়নের আনমুন ও তিমিরপুর গ্রামের মধ্যে এ সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনায় আহতদের মধ্যে ১৯ জনকে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষ থামাতে উপজেলা সদরে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন।
এলাকাবাসী ও পুলিশের ভাষ্যমতে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একে অপরের বিরুদ্ধে নানা মন্তব্যকে ঘিরে এই উত্তেজনার সূচনা হয়। গত ৪ জুলাই স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী আশায়েদ আলীকে আনমুন এলাকায় মারধর করেন আরেক সাংবাদিক সেলিম তালুকদার ও তাঁর অনুসারীরা। ঘটনার সময় আনমুন গ্রামের বাসিন্দারা হামলাকারীদের মধ্য থেকে দুজনকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন। আটক দুই তরুণ তিমিরপুর গ্রামের বাসিন্দা হওয়ায় ওই গ্রামে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
এরপর থেকেই উত্তেজনা বাড়তে থাকে। তিন দিন আগে দুই গ্রামের লোকজনের মধ্যে প্রথম দফায় সংঘর্ষ হয়। সেই ঘটনার রেশ না কাটতেই গতকাল সোমবার দুপুর থেকে আনমুন ও তিমিরপুর গ্রামের মানুষ লাঠিসোটা, ধারালো অস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জড়ো হতে থাকেন। একপর্যায়ে বিকেলে দুইপক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চলে এ সংঘর্ষ। দুপক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ, বল্লম ও ধারালো অস্ত্রের ব্যবহারে আহত হন শতাধিক ব্যক্তি। সংঘর্ষ চলাকালে বেশ কয়েকটি দোকানে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগও পাওয়া গেছে। পরিস্থিতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে উঠলে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রের রূপ নেয়। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সংঘর্ষে গুরুতর আহত ফারুক নামে এক যুবককে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, একজনের মৃত্যুর খবর শোনা যাচ্ছে, তবে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ঘটনার পরপরই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সোমবার বিকেল ৪টা থেকে নবীগঞ্জ শহরে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুহুল আমিন বলেন, ‘বিকেল ৪টা থেকে আগামীকাল মঙ্গলবার রাত ১২টা পর্যন্ত নবীগঞ্জ শহরে ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকবে।’