ঢাকা রবিবার, ১৪ই সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩০শে ভাদ্র ১৪৩২


দু’দিন ব্যাপি এনএসইউতে ওআইসি ইয়ুথ ফোরামের কৃষি জৈবপ্রযুক্তি কর্মশালার উদ্বোধন


প্রকাশিত:
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২৩:৫২

 

কৃষিতে জৈব প্রযুক্তির জিনোম এডিটিং টেকনোলজি সম্পর্কিত গবেষণা, পলিসি ও বাস্তবায়ন নিয়ে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় (এনএসইউ) এ দু’দিন ব্যাপী এক কর্মশালা আয়োজন করা হয়েছে।

ওআইসি-কমস্টেক, ইসলামিক ফুড সিকিউরিটি সংস্থার সঙ্গে শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দু’দিন ব্যাপী যৌথ কর্মশালার আয়োজন করে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় (এনএসইউ) কর্তৃপক্ষ।

এ তৃতীয় ওআইসি যুব ফোরামের উদ্বোধনী সেশনে অংশগ্রহন করেন তুরস্ক, মালয়েশিয়া, আজারবাইজান, পাকিস্তান, কাজাখস্তানের প্রতিনিধিরা। কৃষি-জৈবপ্রযুক্তিতে সাফল্য অর্জনে নতুন নতুন আবিষ্কার, বিশ্লেষণ, তাত্ত্বিক গবেষণা ও তথ্য-প্রযুক্তি ভাগাভাগির মাধ্যমে উন্নতি সাধনে একত্রে কাজের অঙ্গীকার নিয়ে কর্মশালায় ওআইসি-কমস্টেক, ইসলামিক ফুড সিকিরিটি সংস্থার সাথে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গবেষক, পলিসি মেকাররা এই কর্মশালায় তাঁদের গবেষণা, তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ ও ফলাফল তুলে ধরবেন।

স্বাগত বক্তব্যে কমস্টেক ফোকাল পারসন ফর বাংলাদেশ ও এনএসইউ’র বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক হাফিজুর রহমান বলেন, জৈব-প্রযুক্তি কৃষি ও পুষ্টি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় যুব সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। গবেষণার প্রয়োগ ও ফলাফলকে বাস্তবে রূপ দিতে হবে। স্বাগত বক্তব্যে ওআইসি,কমস্টেক ও আইওএফসি হতে উপস্থিত সকল অতিথিকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অর্থ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল অর্জনে এ ধরণের কর্মশালা আমাদের মতো দেশের কৃষি-প্রযুক্তি খাতকে আরও শক্তিশালী করবে। বাংলাদেশে উন্নত কৃষি-প্রযুক্তি ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। জিনোম এডিটিং কৃষি-প্রযুক্তিতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। জৈব প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে দেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। নিম্নাঞ্চলের দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ও মালদ্বীপ সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। কৃষি অর্থনীতিতে জৈব প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়লে কৃষি খাতে বিপ্লব আনা সম্ভব। কৃষিতে পুষ্টি, স্থিতিশীলতা ও উৎপাদন রাড়াতে জিনোম গবেষকদের ধন্যবাদ জানান।

অনুষ্ঠানে এনএসইউ’র বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান আজিজ আল কায়সার বলেন, জিনোম এডিটিং ও জৈব প্রযুক্তির উদ্ভাবনের মাধ্যমে কৃষকদের স্থিতিশীল ও স্থায়ী সমাধান দিতে পারছে। এনএসইউ হতে প্লাটফর্ম তৈরি করে দিয়েছি কিন্তু মূল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে যুব গবেষকদের। ওআইসি যুব ফোরাম হতে কৃষি-প্রযুক্তির দ্বার উম্মোচন করে নতুন নতুন গবেষণা, উদ্ভাবনী কলাকৌশলের প্রয়োগ ও ব্যবহার সারা বিশ্বে তুলে ধরা হবে বলে মনেকরি।

ইসলামী ফুড সিকিউরিটি সংস্থার সহকারী মহাপরিচালক রাষ্ট্রদূত খুসরভ নোজিরি খাদ্য নিরাপত্তার কথা তুলে ধরে বলেন, যুব ফোরামের গবেষকদের মধ্যে জ্ঞান ও গবেষণালদ্ধ ফলাফল ভাগাভাগির মাধ্যমে বিশ্বে খাদ্য নিরাপত্তাকে টেকসই করতে সম্মিলিত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। জনসাধারণের মাঝে জৈব-প্রযুক্তির ব্যবহারের গুরুত্ব তুলে ধরতে হবে। জৈব-প্রযুক্তির সম্মিলিত প্রয়াসে বিশ্বের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে যুব গবেষকদের জিনোম প্রযুক্তির নিরাপদ, স্বচ্ছ ও নৈতিক ব্যবহারের কথা তুলে ধরেন।

ওআইসি-কমস্টেক এর কো-অর্ডিনেটর জেনারেল অধ্যাপক মুহাম্মদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, ৩য় ওআইসি যুব ফোরাম খাদ্য নিরাপত্তার সমস্যা সমাধানে নতুন তথ্য উপাত্ত যুব গবেষক ও বিজ্ঞানীরা আমাদের মাঝে তুলে ধরবেন। বৈশ্বিক খাদ্যনিরাপত্তায় আধুনিক কৃষির প্রয়োগ ও ব্যবহার মাঠপর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে গবেষকদের আধুনিক সম্বলিত ল্যাবরেটরি সুবিধা এবং দেশী ও বিদেশী প্ল্যাটফর্মের কাছ থেকেও দক্ষতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা নেওয়া উচিত।

সেশন চেয়ার এনএসইউ’র ভিসি অধ্যাপক আবদুল হান্নান বলেন, জৈব-প্রযুক্তি আধুনিক কৃষি ব্যবস্থার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় মাইলফলক অর্জন করেছে। খাদ্য নিরাপত্তায় দিন দিন জৈব-প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। জিনোম এডিটিং জৈব-প্রযুক্তির আধুনিক বাস্তব সম্মত জ্ঞান। যুব বিজ্ঞানী, গবেষকরা খাদ্য নিরাপত্তা ও চাহিদা পূরণ, ফসলের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি ও ফসলের উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধির করতে এ জ্ঞানের প্রয়োগ করবে।

এ অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন এনএসইউ’র বোর্ড অব ট্রাস্টি ও অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি এম. এ হাশেম, প্রো-ভিসি ও ট্রেজারার অধ্যাপক আবদুর রব খান।

এ আয়োজনে নীতিনির্ধারক, শিক্ষাবিদ, গবেষক, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি, সরকারী ও বেসরকারী কৃষিভিত্তিক সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশগ্রহন করেন। উদ্বোধন অনুষ্ঠানের সেশন বিরতির পরে দিনব্যাপী কর্মশালাটি অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট হলে অনুষ্ঠিত হবে।