ঢাকা মঙ্গলবার, ১৪ই মে ২০২৪, ৩১শে বৈশাখ ১৪৩১


ভারতে নির্মাণ করা হলো ‘স্ট্যাচু অব ইউনিটি’


১ নভেম্বর ২০১৮ ০২:৩১

আপডেট:
১৪ মে ২০২৪ ০০:১৭

ভারতের গুজরাটের নর্মদা বাঁধের ওপর স্থাপিত হয়েছে প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের ভাস্কর্য। আজ বুধবার প্যাটেলের ১৪৩তম জন্মবার্ষিকীতে ১৮২ মিটার উঁচু ভাস্কর্যটি উদ্বোধন করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

ভাস্কর্যটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্ট্যাচু অব ইউনিটি।’ গুজরাটের নর্মদা জেলার কেভাদিয়া এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে ওই ভাস্কর্য।

ভাস্কর্যটি উদ্বোধন করে মোদি বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় একতা দিবস পালন করছে গোটা দেশ।’ তিনি আরো বলেন, ‘সর্দার প্যাটেলের সংকল্পেই দেশ অখণ্ড আছে।’ কংগ্রেসের এই নেতা ছিলেন দেশটির প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর অন্যতম সহযোগী এবং দেশটির প্রথম উপপ্রধানমন্ত্রী।

উদ্বোধনের পর নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘দিনটি ভারতের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। বর্তমান সরকার প্যাটেলকে যোগ্য সম্মান দিয়ে নতুন ইতিহাস তৈরি করেছে। এত দিন সর্দার প্যাটেলকে যোগ্য সম্মান দেওয়া হয়নি।’ মোদি বলেন, ‘তিনি ভারতের জন্য প্রচুর করেছেন। সর্দার প্যাটেলের এই ভাস্কর্য নতুন ভারতের অভিব্যক্তি। এটা কৃষকদের আত্মমর্যাদার অভিব্যক্তি।’ মোদি দাবি করেন, এই ভাস্কর্য স্থাপনের ফলে গুজরাট রাজ্যে পর্যটন শিল্পের উন্নতি হবে এবং এর ফলে আদিবাসী সমাজও লাভের মুখ দেখবে।

ভাস্কর্য উদ্বোধন করার সময় আকাশপথে ফুল দিয়ে সম্মান জানান ভারতের বিমানবাহিনীর সদস্যরা। সর্দার প্যাটেলের সম্বন্ধে বলতে গিয়ে মোদি বলেন, ‘সংবিধানে মৌলিক অধিকার স্বীকৃতিতে বলভভাইয়ের অবদান যথেষ্ট। নারীদের রাজনীতিতে আসা নিয়েও তিনি উৎসাহ দিতেন। ভারত যখন অবহেলার পাত্র ছিল, সেই সময় একমাত্র আশার আলো ছিলেন সর্দার প্যাটেল। তিনি বলেছিলেন, অন্তকলহ হারের কারণ। বল্লভভাইয়ের মধ্যে ছিল কৌটিল্যের কূটনীতি।’

১৮২ মিটারের এই ভাস্কর্য গড়তে প্রায় আড়াই হাজার শ্রমিক কাজ করেছেন। খরচ পড়েছে দুই হাজার ৯৮৯ কোটি রুপি। মোদি বলেন, ‘আমি যখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলাম তখন ভাবিনি কোনোদিন দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে আমি এই ভাস্কর্য উন্মোচন করতে পারব। আজ সত্যিই গর্ব হচ্ছে।’

এই ভাস্কর্য দেখতে প্রতিদিন ১৫ হাজার পর্যটক যাবে বলে মনে করছে গুজরাটের পর্যটন বিভাগ।

এদিকে ভাস্কর্যটি উদ্বোধনের আগে গুজরাটের নর্মদা জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কেভাদিয়াতে যাওয়া ১৬ জন আদিবাসী নেতাকে আটক করে গুজরাট পুলিশ। পুলিশের অভিযোগ ভাস্কর্যটি উদ্বোধনের সময় তারা বিক্ষোভ দেখানোর পরিকল্পনা করেছিল।

জানা যায়, আটককৃতদের প্রত্যেকেই বিলিস্তান টাইগার সেনা এবং ভারতীয় ট্রাইবাল পার্টির সদস্য। ভাস্কর্যটির ব্যাপারে বেশ কিছুদিন ধরেই ক্ষোভ প্রকাশ করে নর্মদা জেলার আদিবাসীরা। তাদের অভিযোগ, এই ভাস্কর্যটি তৈরি করতে গিয়ে নষ্ট করা হয়েছে পরিবেশ। যার ওপর নির্ভরশীল এই অঞ্চলের আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজন। তারা এর আগে নরেন্দ্র মোদিকে লেখা এক চিঠিতে জানায়, এখানকার বন, জলপ্রপাত, নদীর ওপর তারা নির্ভরশীল। এই ভাস্কর্য তৈরির জন্য সবকিছু ধ্বংস করা হচ্ছে।

ভাস্কর্য উদ্বোধনের প্রতিবাদে স্থানীয় আদিবাসী অধ্যুষিত সাড়ে পাঁচ হাজার গ্রামে বনধের ডাকও দেওয়া হয়।