কাশ্মীরে হামলার দায় স্বীকার করল পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন ‘লস্কর-ই-তৈয়বা’

ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামের কাছে বৈসারণে ভয়াবহ বন্দুকধারীর হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৬ জন। দেশ-বিদেশের পর্যটকে ঠাসা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য খ্যাত এই এলাকায় গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে অতর্কিত গুলিবর্ষণ চালানো হয়। ভয়াবহ এই হামলার দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তান-ভিত্তিক নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার (এলইটি) প্রক্সি গোষ্ঠী ‘রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ)। খবর: এনডিটিভি
টিআরএফ এর দায় স্বীকারের পর বিষয়টি নিয়ে কড়া নজর দিয়েছে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। হামলায় নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ভারতীয় নৌবাহিনীর একজন কর্মকর্তা এবং কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা ব্যুরোর (আইবি) এক কর্মী। এ ঘটনায় ভারতের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।
‘মিনি সুইজারল্যান্ড’ নামে পরিচিত বৈসারণ তার তৃণভূমি ও অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বহু বছর ধরেই পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ। পেহেলগাম থেকে প্রায় ছয় কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই অঞ্চলটিতে বসন্ত ও গ্রীষ্মকালে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের ভিড় জমে। সেই সময়েই এই নির্মম হামলা চালায় সশস্ত্র জঙ্গিরা।
হামলার পরপরই এলাকাজুড়ে ব্যাপক অভিযান শুরু করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী, সিআরপিএফ ও জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ। গোটা অঞ্চল ঘিরে ফেলে শুরু হয় তল্লাশি। দুর্গম তৃণভূমি থেকে আহতদের উদ্ধারে হেলিকপ্টার মোতায়েন করা হয়েছে। এদিকে স্থানীয়রাও আহতদের ঘোড়ায় চাপিয়ে পেহেলগামে পৌঁছে দিতে সহায়তা করছেন।
ঘটনার পর পরই জম্মু ও কাশ্মীর প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনন্তনাগ ও শ্রীনগরে চালু করা হয়েছে জরুরি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ শোকাহত পরিবার ও আটকে পড়া পর্যটকদের সহায়তায় জোরালো পদক্ষেপ নিয়েছে। এয়ার ইন্ডিয়া ও ইন্ডিগো অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনার সিদ্ধান্তও ঘোষণা করেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর এটিই সবচেয়ে বড় ও প্রাণঘাতী জঙ্গি হামলা। টিআরএফ-এর দায় স্বীকার কেবল হামলার ভয়াবহতাই নয়, দক্ষিণ এশিয়ায় নিরাপত্তা সংকটের নতুন মাত্রাও স্পষ্ট করছে। ভারত সরকার ঘটনার তদন্তে পূর্ণ শক্তি প্রয়োগের কথা জানিয়েছে।