অনৈতিক কাজগুলো আমাকে ভীষণভাবে আহত করছে,
নৈতিকতা সম্পন্ন সুশিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড: আহমদ শফি

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফি বলেছেন, দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বিরাজমান অরাজকতা ও অনৈতিক কাজগুলো আমাকে ভীষণভাবে আহত করছে। দেশ ও জাতির স্বার্থে এসব দূর করতে আমি বারবার বলে যাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, অভিভাবকগণ একবুক প্রত্যাশা ও বিশ্বাস নিয়ে সন্তানদের সুনাগরিক হিসেবে তৈরি করার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠান। তাদের আশা, তাদের সন্তান শিক্ষিত হবেন, মা-বাবার মুখ উজ্জ্বল করবেন, সমাজে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেন। অথচ সেই শিশুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই শিক্ষক দ্বারা অথবা সহপাঠি দ্বারা নির্যাতিত হচ্ছে। ফলে স্বপ্নগুলো চুরমার করে দিচ্ছে। যা অত্যন্ত বেদনাদায়ক ও লজ্জাজনক।
‘নুরানী তা’লীমুল কুরআন বোর্ড, চট্টগ্রাম বাংলাদেশ’ এর অধীনে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় সনদ পরীক্ষায় এ+ প্রাপ্ত ছাত্র-ছাত্রীদের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বোর্ডের মহাসচিব আল্লামা মুফতি জসিমুদ্দীন।
বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাওলানা আনাস মাদানীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে শাহ আহমদ শফি আরও বলেন, নৈতিকতা সম্পন্ন সুশিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। এ কথাটি এখন আর উচ্চারিত হয় না। শুধু শিক্ষিত হলে চলবে না। আমাদের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা সম্পন্ন সুশিক্ষিত করতে হবে। তবেই তারা দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করবে এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তারা কখনো দুর্নীতিগ্রস্ত হবে না, অন্যের হক নষ্ট করবে না।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে অনেক শিক্ষিত ব্যক্তি আছেন যারা তাদের কর্মক্ষেত্রে বসে প্রতিনিয়ত মানুষ হয়রানি করছেন, প্রতারিত করছে। নৈতিক ও আদর্শিক শিক্ষায় শিক্ষিত না হওয়ার কারণে দুর্নীতির মাধ্যমে দেশ ও জাতির অকল্পনীয় ক্ষতি সাধন করছেন। মনে রাখতে হবে দেশকে সুসন্তান, সুনাগরিক উপহার দিতে হলে অবশ্যই সুশিক্ষিত হতে হবে। প্রকৃত আলেম দ্বারা দ্বীনি ও নৈতিক শিক্ষা দিতে হবে।
পত্রিকায় পাতায় যখন কোমলমতি শিক্ষার্থীদের স্বীয় শিক্ষক দ্বারা নির্যাতনের খবর পড়ি তখন আহত বোধ করি। এসব থেকে আগামীর ভবিষ্যৎকে পরিত্রাণ দিতে হলে পাঠদান পদ্ধতি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভিন্নতা আনতে হবে।
পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মেখল মাদরাসার পরিচালক ও বোর্ডের সহসভাপতি আল্লামা নোমান ফয়জি, মাওলানা জমিরউদ্দীন, মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মাওলানা মুফতি মুহাম্মদ আলী কাসেমী, মাওলানা মীর আনিস, মাওলানা আবুল হাশেম, মাওলানা এমদাদ, মাওলানা মঞ্জুর ও মাস্টার আনিসসহ আরও অনেকে।
উল্লেখ্য ২০১৮ সালের কেন্দ্রীয় সনদ পরীক্ষায় নুরানী তালীমুল কুরআন বোর্ড, চট্টগ্রাম বাংলাদেশ এর অধীনে সারা দেশ থেকে দুই লক্ষাধিক পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। গত ২৪ ডিসেম্বর ফলাফল প্রকাশ করা হয়। পাশের হার ছিলো ৯০.২%।