মন্ত্রীদের সতর্ক করলেন প্রধানমন্ত্রী

শ্রীলঙ্কায় হামলার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে যে কোনো ধরনের সন্ত্রাসী ও জঙ্গি হামলার বিষয়ে মন্ত্রীদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মন্ত্রিসভার সব সদস্যকে নিজ নিজ অবস্থানে থেকে নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি এলাকার খোঁজখবর রাখারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে একজন জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী নাম প্রকাশ না করার শর্তে দেশ রূপান্তরকে এসব কথা জানান। প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে গতকাল তার তেজগাঁও কার্যালয়ে এ বৈঠক হয়।
ওই মন্ত্রী দেশ রূপান্তরকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রীদের বলেছেন, ‘বাঙালি জাতি রক্ত দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছে। বহু রক্তের বিনিময়ে আমরা দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছি। এ দেশকে এগিয়ে নিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার পরিবারসহ জীবন দিয়েছেন। আমাদের সমস্ত অর্জন ম্লান করতে দেশি-বিদেশি নানা ধরনের ষড়যন্ত্র এখনো চলছে। তাই জঙ্গি বা সন্ত্রাসী হামলার মাধ্যমে বাংলাদেশকে অস্থির করে তোলার চেষ্টা হতে পারে। এ বিষয়ে সতর্ক থাকার পাশাপাশি মন্ত্রী, এমপি ও জনপ্রতিনিধিদের নিজ নিজ এলাকায় মুসলমান হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টানসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান-প্রধানদের সঙ্গে নিয়ে সব ধরনের জঙ্গি ও সন্ত্রাসী হামলার বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে হবে। ’
মন্ত্রিসভায় জঙ্গি হামলা নিয়ে কোনো কথা হয়েছে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব (সংস্কার ও সমন্বয়) ড. শামসুল আরেফিন সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে সতর্ক থাকার এবং নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব আরও জানান, মন্ত্রিসভা বৈঠকে শ্রীলঙ্কায় সন্ত্রাসী হামলায় হতাহতের ঘটনায় শোকপ্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে। ওই ঘটনায় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের নাতি জায়ান চৌধুরী নিহতের ঘটনায়ও শোকপ্রস্তাব গ্রহণ করেছে মন্ত্রিসভা।
প্রধানমন্ত্রী এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে তিন বাহিনীর প্রধানসহ পুলিশ ও বিজিবি প্রধান এবং অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় তিনি যে কোনো ধরনের জঙ্গি বা সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে সতর্ক থাকার ও নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেন। পরদিন পুলিশপ্রধানের বাসায়ও এ বিষয়ে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক হয়। ব্রুনাই সফর সম্পর্কে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনেও প্রধানমন্ত্রী জঙ্গি বা সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন।
রমজানে অফিস ৯টা থেকে সাড়ে ৩টা : আসন্ন রমজান মাসে সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে অফিস শুরু হবে সকাল ৯টায়। শেষ হবে বিকেল সাড়ে ৩টায়। মাঝে দুপুর সোয়া ১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত জোহরের নামাজ আদায়ের বিরতি থাকবে। গতকাল মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়। পরে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ সিদ্ধান্ত জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) শামসুল আরেফিন। তিনি আরও জানান, সুপ্রিম কোর্ট, ব্যাংক, বীমা, রাষ্ট্রায়ত্ত কলকারখানা ও সেবা সংস্থা নিজেদের সুবিধামতো অফিস সময় নির্ধারণ করবে।
মন্ত্রিসভা বৈঠকে বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র আইনের খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। এ ছাড়া লেবাননের সঙ্গে সংস্কৃতিবিষয়ক একটি চুক্তির খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। এই খসড়া চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ ও লেবাননের মধ্যে বিশেষজ্ঞদের অভিজ্ঞতা বিনিময়, প্রকাশনা ও গবেষণাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করা হবে। সভা, সেমিনার ও প্রদর্শনী আয়োজনের মাধ্যমে উভয় দেশের বিশেষজ্ঞদের অভিজ্ঞতা বিনিময় হবে। চারুকলা, শিল্পকলা, শিল্প-সংস্কৃতি বিনিময়ের মাধ্যমে উভয় দেশের সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করা হবে।