শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানকে দেশে আনার প্রক্রিয়া চলছে

বিদেশে পালিয়ে থাকা বাংলাদেশের শীর্ষ সন্ত্রাসী ও রাজধানীর মালিবাগে দুই পুলিশ হত্যা মামলার আসামি জিসানকে দেশে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বুধাবার (২ অক্টোবর) দুবাইতে জিসান আহমেদকে আটক করা হয়। তাকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী দুবাই থেকে দেশে আনা হবে। সেই লক্ষ্যে কাজও শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।
জিসানকে দুবাই শহরে গ্রেপ্তারের তথ্য নিশ্চিত করে পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো) মহিউল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘ইন্টারপোলের মাধ্যমে দুবাই কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাংলাদেশ যোগাযোগ করছে। তারা জানিয়েছে যে, জিসানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মহিউল ইসলাম আরও জানান, দুবাই কর্তৃপক্ষ জিসানকে গ্রেপ্তারের পর যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের প্রস্তুতি নিচ্ছে। সেখান থেকে তাকে দেশে আনার বিষয়ে আলোচনা শুরু করা হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, পলাতক সন্ত্রাসী জিসান একটি ভারতীয় পাসপোর্ট বহন করছেন। সেখানে তার নাম বলা হয়েছে আলী আকবর চৌধুরী। ওই পাসপোর্ট নিয়েই তিনি এতদিন দুবাইয়ে অবস্থান করছিলেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত এক দশক আগে দেশের শীর্ষ ২৩ সন্ত্রাসীর নাম তালিকাভুক্ত করেছে। তাদের অন্যতম হলেন জিসান। তাকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য সরকার মোটা অঙ্কের টাকাও পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল। রাজধানীর গুলশান, বনানী, বাড্ডা, ফকিরাপুল, পল্টন, মতিঝিলসহ বেশ কিছু অঞ্চলে তার একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল। ওই সব এলাকার সরকারি ও বাণিজ্যিক ভবনগুলোতে নিয়মিত চাঁদাবাজি করতেন তিনি। ইন্টারপোল তার নামে রেড অ্যালার্ট জারি করে রেখেছে।
২০০৩ সালে মালিবাগ বাজার সংলগ্ন সানরাইজ নামে একটি আবাসিক হোটেলে ডিবি পুলিশের সঙ্গে জিসান বাহিনীর গোলাগুলিতে মারা যান পরিদর্শক আলমগীর হোসেন ও হুমায়ুন কবির। জিসান বাহিনীর ক্যাডাররা হোটেলে স্বর্ণের ভাগাভাগির সময় সেখানে ডিবি পুলিশ হানা দিলে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। ওই দুজন ডিবি অফিসার হত্যার পর আলোচনায় আসে জিসান। এরপরেই গা ঢাকা দেন। ২০০৫ সালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের মুখে সে দেশ ছাড়ে বলে ধারণা করা হয়।
সূত্র জানায়, সে সময় পালিয়ে ভারতে প্রবেশ করে জিসান। এরপর নিজের নাম পরিবর্তন করে আলী আকবর চৌধুরী নামে পাসপোর্ট সংগ্রহ করে।
সাম্প্রতিক দুর্নীতি বিরোধী অভিযানে দুই যুবলীগ নেতা জি কে শামীম ও খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে আটকের পর তার (জিসানের) নাম ফের নতুন করে আলোচনায় আসে। তাদের মধ্যে একসময় ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। পরে ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্বে জিসান শামীম ও খালেদকে হত্যা করতে লোক ভাড়া করেছিলেন বলে গোয়েন্দা সূত্র জানায়।