ঢাকা শুক্রবার, ৩রা মে ২০২৪, ২১শে বৈশাখ ১৪৩১


বিসিবি প্রধানের হুঙ্কার

ছাড় পাচ্ছেন না সাকিব


২৭ অক্টোবর ২০১৯ ১৪:০২

আপডেট:
৩ মে ২০২৪ ২২:২৭

শঙ্কাটাই কি সত্যি হতে চলল? ধর্মঘটের ডাক দিয়ে নিজেদের দাবি-দাওয়া আদায় করে নিয়েছেন ক্রিকেটাররা। তবে সানন্দে নয়, প্রবল আন্দোলনের মুখে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) তাদের দাবি-দাওয়া মেনে নিয়েছিল। তখনই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল, সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে ক্রিকেটারদের জন্য। তাদের প্রতিটি পদক্ষেপ আতশি কাচ দিয়ে পর্যবেক্ষণ করবে বিসিবি, একটু বেচাল হলেই বিপদ অনিবার্য। আন্দোলনকারী ক্রিকেটারদের ‘নেতা’ সাকিব আল হাসান এবার বুঝি সেই অনিবার্য বিপদেরই সম্মুখীন! ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান কিন্তু তেমন হুমকিই দিয়ে রাখলেন।

২২ অক্টোবর গ্রামীণফোনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন সাকিব। ঝামেলাটা বেঁধেছে ওখানেই। গ্রামীণফোন-রবি-এয়ারটেল-বাংলালিংক এমন টেলিকম প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত চুক্তির ক্ষেত্রে বিসিবির এক ধরনের নিষেধাজ্ঞা আছে। টেলিকম কোম্পানি রবি আজিয়াটা যখন বাংলাদেশ দলের স্পন্সর ছিল, তখন কিছু সাংঘর্ষিক বিষয়াদির কারণে এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল। নিষেধাজ্ঞাটা এমন- বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা কোনো ক্রিকেটার কোনো প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে চুক্তি করতে চাইলে বোর্ডের কাছ থেকে তাকে বাধ্যতামূলকভাবে এনওসি বা অনাপত্তিপত্র নিতে হবে।

গ্রামীণফোনের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার আগে ওই অনাপত্তিপত্র নেননি সাকিব। এমনকি বিসিবিকে এ সম্পর্কে কোনো কিছুই অবহিত করেননি টাইগারদের টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক। অর্থাৎ নিয়মভঙ্গ করেছেন তিনি। তাতেই সুযোগ পেয়ে গেছে বিসিবি। সাকিবকে আইনি নোটিস পাঠানো হচ্ছে। সংবাদমাধ্যম এএফপিকে এমনটাই জানিয়েছেন বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন। তিনি বলেছেন, ‘আমরা বিশ^াস করি সে (সাকিব) যা করেছে তাতে বোর্ডের সঙ্গে চুক্তির শর্ত ভঙ্গ হয়েছে এবং যেভাবে চুক্তি করা হয়েছে তাতে নিয়ম ভাঙা হয়েছে। অবশ্যই আমরা এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’

বাংলাদেশ দলের স্পন্সর হওয়ার দৌড়ে বরাবরই থাকে টেলিকম কোম্পানিগুলো। সেই কোম্পানিগুলোর সঙ্গে যদি শীর্ষ ক্রিকেটাররা ব্যক্তিগতভাবে চুক্তিবদ্ধ হন, স্বাভাবিকভাবেই কোম্পানিগুলো জাতীয় দলের স্পন্সর হবে না। নিজামউদ্দিন সেটাই মনে করিয়ে দিয়েছেন এভাবে, ‘আসলে আমরা খেলোয়াড়দের জানিয়ে রেখেছি, এমন কারও সঙ্গে যেন চুক্তিবদ্ধ না হয়, যেটাতে মূল স্পন্সরের সঙ্গে কোনো জটিলতা তৈরি হবে। এখন আমাদের সঙ্গে ইউনিলিভারের চুক্তি রয়েছে, এই চুক্তি খুব দ্রুতই শেষ হয়ে যাবে। এই সময়েই যদি কোনো ক্রিকেটার কোনো টেলিকম কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করে, তাহলে আর কোনো কোম্পানি আমাদের স্পন্সর করতে রাজি হবে না।’

ভিনদেশি মিডিয়ায় প্রধান নির্বাহী তবু রয়েসয়ে কথা বলেছেন। শনিবার মিরপুরে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান তো উগরে দিয়েছেন মনের যত ক্ষোভ। সংবাদকর্মীদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেছেন, ‘আমাদের আইন অনুযায়ী কোনোভাবেই খেলোয়াড়রা এটা করতে পারে না। সেটা টেলিকম কোম্পানি যেমন জানে, তেমনি খেলোয়াড়রাও জানে। সাকিব এটা কেন করল আমরা জানি না। তারপরও আমরা তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিচ্ছি। তবে এটা বলতে পারি, আইন অনুযায়ী একজন ক্রিকেটার কোনো টেলিকম কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করতে পারে না।’

সাকিবকে কোনোপ্রকার ছাড় দেওয়া হবে কি না, এমন প্রশ্নে নাজমুল হাসানের ঝাঁজাল জবাব, ‘প্রশ্নই ওঠে না।’ এ সময় পাশ থেকে বিসিবি অন্যতম পরিচালক মাহবুব আনাম বলে ওঠেন, ‘আইন ভঙ্গ করলে যে রকম শাস্তি হওয়ার কথা সে রকমই হবে।’ অর্থাৎ বিসিবি কর্তারা এবার আদাজল খেয়েই নামছেন সাকিবের বিরুদ্ধে। শনিবার ভারত সফরের অনুশীলন ক্যাম্পে যোগ দেওয়া সাকিব মিডিয়ার সামনে এ প্রসঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেননি।