ঢাকা বৃহঃস্পতিবার, ৮ই মে ২০২৫, ২৫শে বৈশাখ ১৪৩২


জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জানালেন

‘আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ প্রসঙ্গে কে কী বলল যায় আসে না’


৭ মে ২০২৫ ১৩:০৬

আপডেট:
৭ মে ২০২৫ ১৩:১৪

নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের অধিকাংশ এলাকা দখল করে নিয়েছে সেখানকার বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মি। সীমান্ত সুরক্ষার স্বার্থে বাংলাদেশ অনানুষ্ঠানিকভাবে আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। দুই পক্ষের ওই যোগাযোগ বিষয়ে গত মাসে একটি কূটনৈতিক পত্র দিয়ে নিজেদের আপত্তির কথা জানায় মিয়ানমারের জান্তা সরকার।

এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলি-সংক্রান্ত বিশেষ প্রতিনিধি খলিলুর রহমান বলেছেন, ‘আমরা একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র। সীমান্ত সুরক্ষার সঙ্গে সীমান্তের ওপারে যে-ই থাকবে, তার সঙ্গেই যোগাযোগ রাখবে বাংলাদেশ। নিজ স্বার্থে যার সঙ্গে ইচ্ছা তার সঙ্গে কথা বলব। কে কী বলল, যায় আসে না। আমরা একটা স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি প্রণয়ন করেছি এবং সেটি বাস্তবায়ন করছি।’ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গতকাল সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

মিয়ানমারের সার্বভৌম ও অখণ্ডতার কথা বাংলাদেশ বলছে, আরেক দিকে আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ সাংঘর্ষিক কিনা উত্তরে খলিলুর রহমান বলেন, ‘না, আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগটি বাস্তবিক প্রয়োজনীয়তা। ওপারে সীমান্তে তারা (আরাকান আর্মি) আছে, তাদের সঙ্গে তো আমাদের কাজ করতে হবে।’

খলিলুর রহমান বলেন, ‘মিয়ানমার আরাকান আর্মিকে জঙ্গি সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করেছে, তারাও (মিয়ানমার) তো তাদের (আরাকান আর্মি) সঙ্গে যোগাযোগ করছে। একটি জিনিস বিবেচনায় রাখতে হবে। বাংলাদেশের সীমান্তের ওপারে আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণ। এ সীমান্ত বাংলাদেশকে ম্যানেজ করতে হবে, রক্ষা করতে হবে, শান্তিপূর্ণ রাখতে হবে। ফলে ওপারে যে-ই থাক, তার সঙ্গে আমরা যোগাযোগ রাখব। মিয়ানমার আর্মি যদি সেখানে সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে, তাহলে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করব। আগে তো তাদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল।’

মিয়ানমারের সামরিক সরকারের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ আর বোঝাপড়া নিয়ে জানতে চাইলে খলিলুর রহমান বলেন, ‘তাদের সঙ্গে আমাদের বোঝাপড়া রয়েছে। কিছুদিন আগে ভূমিকম্পে বাংলাদেশ থেকে সহযোগিতা গেছে, মিয়ানমারের অনুরোধের অপেক্ষা করা হয়নি। মিয়ানমারের সঙ্গে রোহিঙ্গা, বাণিজ্যসহ সব দিকে যোগাযোগ রয়েছে। কোনো সমস্যার সমাধান চাইলে সব পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ থাকতে হবে, না হলে সমস্যার সমাধান হবে না।’

মানবিক করিডর বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, ‘সব পক্ষ রাজি কিনা আমরা দেখব। রাজি হলেই যে আমরা মানবিক সাহায্য দেব, এমন কোনো কথা নেই। এখানে অন্যান্য বিষয়ও রয়েছে। আরাকানে যে নতুন কর্তৃপক্ষ তৈরি হচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধিত্ব চায়। সেখানে যেসব রোহিঙ্গা রয়েছে, তাদের ওপর যাতে কোনো অত্যাচার না হয়, তাদের সঙ্গে যেন বৈষম্য করা না হয়, তারা যাতে দলে দলে বাংলাদেশে না আসে—এ বিষয়গুলো মানতে হবে। জাতিগত নিধন কোনো অবস্থায়ই বাংলাদেশ মানবে না।’ রাখাইন থেকে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকে বাংলাদেশ আর স্বাগত জানাবে না বলে উল্লেখ করেন খলিলুর রহমান।