ঢাকা শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল ২০২৪, ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১


শরীফকে দোষী প্রমাণ করতে মরিয়া দুদক, খুঁজছে সাক্ষী!


২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ২২:৫২

আপডেট:
২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৪:২৪

শরীফকে দোষী প্রমাণ করতে মরিয়া দুদক, খুঁজছে সাক্ষী!

সদ্য চাকরিচ্যুত উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনের দোষ খুঁজতে নতুন করে মাঠে নেমেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) লোকজন। এ জন্য তারা চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এলাকায় যেসব প্রকল্প শরীফ উদ্দিন তদন্ত করে দুর্নীতি তুলে ধরেছিলেন, সেসব প্রকল্প এলাকায় মানুষের সঙ্গে দেখা করছেন। অনেককে ফোন করে দেখা করতে বলছেন। গতকাল দিনভর কক্সবাজারের ইনানী, ঝিলংজা ও মহেশখালী এলাকায় প্রভাবশালীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন দুদকের কর্মকর্তারা। সাক্ষী জোগাড় করতে সক্রিয় হয়েছেন ভূমি অধিগ্রহণের সময়ের দালালরাও। স্বয়ং দুদকের আঞ্চলিক কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান এখন কক্সবাজারে আছেন।

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার ইনানী ও মহেশখালী উপজেলার চারজন লোক আমাদের সময়ের কাছে দাবি করেছেন, দুদকের কর্মকর্তারা তাদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেছেন। শরীফের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে জানাতে বলেছেন। তাদের আশ্বাস দিয়ে বলা হয়েছে, লিখিত কিংবা দেখা

করে মৌখিকভাবেও অভিযোগ দেওয়া যাবে। কক্সবাজারের প্রকল্প এলাকার বাসিন্দা কিন্তু চট্টগ্রাম শহরে বসবাস করেন, এমন লোকদের আগামী রবিবার দুদকের চট্টগ্রাম সমন্বিত কার্যালয়ে দেখা করার অনুরোধ করা হয়েছে।

মহেশখালী উপজেলার এক ব্যক্তি চট্টগ্রামে থাকেন। তিনি বলেন, দুদক আমাকে ফোন করেছে। তারা ভুল মানুষকে বেছে নিয়েছে। মহেশখালী এলাকায় ভূমি অধিগ্রহণ নিয়ে যে দুর্নীতি হয়েছে তা এলাকার সবাই জানে। শরীফ কেবল বিষয়টির লিখিত আকার দিয়েছেন। আগামী রবিবার চট্টগ্রাম দুদক কার্যালয়ে যাবেন কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, অবশ্যই যাব। প্রকৃত সত্য ঘটনা তুলে ধরব।

জানতে চাইলে দুদকের আঞ্চলিক পরিচালক মাহমুদ হাসান বলেন, আমি চট্টগ্রামের বাইরে আছি। তিনি কক্সবাজার আছেন কিনা জানতে চাইলে তার সত্যতা স্বীকার করেন। শরীফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে মাঠপর্যায়ে তদন্ত ও সাক্ষী খোঁজার বিষয়ে গতকাল সন্ধ্যায় তিনি বলেন, এমন কোনো বিষয় না। আমি একটি কাজে এসেছি। এখন রুমে বসে বাংলাদেশের ক্রিকেট খেলা দেখছি। কিছুটা হালকা চালে তিনি বলেন, বাংলাদেশের খেলা দেখার মুডটা নষ্ট করবেন না।

মো. শরীফ উদ্দিন এ প্রসঙ্গে বলেন, এর আগেও কিছু কর্মকর্তা আমার বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর ও মহেশখালীতে সাক্ষী তৈরি করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সফল হননি। আমাকে নানাভাবে নাজেহাল করার চেষ্টা করেছেন। এখন নতুনভাবে সেটি শুরু করেছেন।

কক্সবাজার ঘিরে ৭৩ প্রকল্পে সাড়ে তিন লাখ কোটি টাকা বিনিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এসব মেগাপ্রকল্পের প্রয়োজনে ২৫ হাজার কোটি টাকার ভূমি অধিগ্রহণ করতে হবে। তদন্তে দুদক তিনটি প্রকল্পের শুরু থেকেই দুর্নীতির প্রমাণ পায়। প্রকল্পগুলো হচ্ছে- পিবিআইর প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ, কক্সবাজার পৌরসভার পানি পরিশোধনাগার প্রকল্প ও ইস্টার্ন রিফাইনারির সিঙ্গল পয়েন্ট মুরিং নির্মাণ প্রকল্প। অভিযোগ আসে, ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ার সরকারি আমলা, রাজনীতিবিদ, পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং তাদের সৃষ্ট দালালদের একাধিক চক্র দুর্নীতিতে সক্রিয়। এই তিন প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দুদক তিনটি মামলা করেছে। মামলার আসামিরা আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে এসে তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সদ্য সাবেক উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে দুদকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। শরীফের চাকরিচ্যুতির ক্ষেত্রে এই অভিযোগের বিষয়গুলোই তুলে ধরে বলা হয়েছে- শরীফের কর্মকা- দুদকের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করেছে।