নেতৃত্ব পাচ্ছেন ত্যাগী ও পরিচ্ছন্নরা, আলোচনায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা!

দীর্ঘদিন পর সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পর প্রাণচাঞ্চল্য ফিরেছে আওয়ামী লীগের মেয়াদোত্তীর্ণ চার সহযোগী সংগঠন- আওয়ামী যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ ও শ্রমিক লীগে। নতুন কমিটিগুলোর দায়িত্ব কাদের দেয়া হবে- তা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। এ ক্ষেত্রে তারুণ্যনির্ভর, ত্যাগী ও স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নেতৃত্ব চায় ক্ষমতাসীন দলের হাইকমান্ড।
ফলে এই চার সংগঠনের শীর্ষ পদসহ আগামী কমিটি থেকে বাদ পড়তে যাচ্ছেন টেন্ডার ও চাঁদাবাজি এবং ক্যাসিনো পরিচালনার সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িতরা। পাশাপাশি অন্য দল থেকে এসে সংশ্লিষ্টদের ‘ম্যানেজ’ করে যারা বড় পদ বাগিয়ে নিয়েছেন- এমন বিতর্কিত নেতাদেরও জায়গা হচ্ছে না নতুন কমিটিতে।
তাদের পরিবর্তে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে। বিশেষ করে যুবলীগের শীর্ষ পদে এমন নেতাকেও দেখা যেতে পারে, যিনি সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন। তবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে তার পারিবারিক ঐতিহ্য রয়েছে। পাশাপাশি এই সংগঠনে নতুন নেতাদের ক্ষেত্রে বয়সের বিষয়টিও বিবেচনা করা হতে পারে। আওয়ামী লীগের একাধিক নীতিনির্ধারকের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে এসব তথ্য।
জানা যায়, ছাত্রলীগের রাজনীতির পরের ধাপে মূলত আওয়ামী যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের রাজনীতিতে প্রবেশ করে। কিন্তু এই দুটি সংগঠনে দীর্ঘদিন সম্মেলন না হওয়ায় ছাত্রলীগের অনেক পরীক্ষিত নেতা কোথাও নেই। অল্প কিছু নেতা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন উপকমিটির সদস্য হলেও বাকি অনেকেরই পরিচয় এখনও কেবল সাবেক ছাত্রনেতা। ফলে এবারের সম্মেলনে শীর্ষ পদ ছাড়াও এই দুই সংগঠনের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদে ছাত্রলীগের পরীক্ষিত নেতারাই জায়গা পেতে যাচ্ছেন। এছাড়া কৃষক লীগ ও শ্রমিক লীগ সংশ্লিষ্ট ও পরিচ্ছন্ন নেতাদের প্রাধান্য দেয়া হবে এবারের সম্মেলনে।
যুবলীগকে ঢেলে সাজাতে এবং তরুণদের নেতৃত্বে আনতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের মধ্য থেকে শীর্ষ পদে জায়গা পেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে আলোচনায় রয়েছেন- ইসহাক আলী পান্না, বাহাদুর ব্যাপারী, অজয় কর খোকন, নজরুল ইসলাম বাবু, মাহমুদ হাসান রিপন, মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন, এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগের মধ্য থেকে যে কেউ যুবলীগের মূল নেতৃত্বে আসতে পারেন।
এদিকে,আগামী ১৬ নভেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের তৃতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এই সম্মেলন ঘিরে পদ প্রত্যাশীরা তৎপর। কেন্দ্রীয় ও ঢাকার দুই শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হতে লড়াইয়ে অন্তত এক ডজনেরও বেশি নেতা রয়েছেন বলে সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়।
সেচ্ছাসেবক লীগকে ঢেলে সাজাতে এবং তরুণদের নেতৃত্বে আনতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের মধ্য থেকে শীর্ষ পদে জায়গা পেতে পারেন।স্বেচ্ছাসেবক লীগের বর্তমান চার সাংগঠনিক সম্পাদক খায়রুল হাসান জুয়েল, শেখ সোহেল রানা টিপু, সাজ্জাদ শাকিব বাদশা ও আবদুল আলীম বেপারী রয়েছেন কেন্দ্রীয় শীর্ষ পদের লড়াইয়ে। এর মধ্যে খায়রুল হাসান জুয়েল ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন এবং টিপু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবং সাজ্জাদ শাকিব বাদশা সাধারণ সম্পাদক। চারজনই বিএনপি জামায়াত জোট ও এক এগারো সরকারের আমলে ছাত্রলীগকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।