ঢাকা বৃহঃস্পতিবার, ৮ই মে ২০২৫, ২৬শে বৈশাখ ১৪৩২


চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস বন্ধ থাকায় দাম বাড়ল আরেক দফা

পেঁয়াজের কেজি ১৬০ টাকা ছাড়িয়েছে


১২ নভেম্বর ২০১৯ ১২:১৪

আপডেট:
৮ মে ২০২৫ ২০:১৩

পেঁয়াজের উচ্চমূল্যের লাগাম কোনোভাবেই টেনে ধরা যাচ্ছে না। দাম কমা তো দূরের কথা, উল্টো আরেক দফা বেড়ে পেঁয়াজের কেজি ১৬০ টাকা ছাড়িয়েছে। অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে ভোক্তার নাভিশ্বাস উঠেছে। পেঁয়াজ কেনা কমিয়ে দিয়েছে ভোক্তারা। ব্যবসায়ীরা জানান, চট্টগ্রাম বন্দরে দুদিন আমদানি করা পেঁয়াজ খালাস বন্ধ থাকার কারণেই নতুন করে এ দফায় কেজিতে ২০-৩০ টাকা বেড়েছে।

এদিকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও ক্রেতার ভাগ্যে জুটছে না টিসিবির ১ কেজি পেঁয়াজ। তাছাড়া পেঁয়াজের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ক্রেতারা। কারণ টিসিবির পেঁয়াজ নিম্নমানের। অনেক পেঁয়াজেই গাছ বেরিয়ে গেছে এবং পচে গেছে। তাই ৪৫ টাকা কেজি দরে টিসিবির পেঁয়াজ কিনেও প্রায় অর্ধেক ফেলে দিতে হচ্ছে।

গিতকাল রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক কেজি পেঁয়াজ কোথাও ১৫০, কোথাও ১৬০ এবং কোথাও ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কল্যাণপুর নতুন বাজারে দেশি এবং আমদানি করা উভয় পেঁয়াজই ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কারওয়ান বাজারে দেশি পেঁয়াজের ১৬০ এবং আমদানি করা পেঁয়াজের কেজি ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আবার মোহাম্মদপুর টাউন হল বাজারে দেশি পেঁয়াজের কেজি ১৭০ টাকায়ও বিক্রি করতে দেখা গেছে।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা ক্রেতা হাবিবুর রহমান বলেন, ‘ভাই সব কিছুর তো একটা লিমিট আছে। পেঁয়াজ তো লিমিট ছাড়িয়ে গেছে। পেঁয়াজের কেজি ১৭০ টাকায় ঠেকেছে, অথচ সরকারের এ ব্যাপারে কোনো মাথাব্যথাই নেই। উল্টো সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী বলছেন, পেঁয়াজের দাম কমার কোনো সুযোগ নেই। এটা কোনো কথা হলো। বাজারে কোনো ব্যবসায়ীর কাছে তো পেঁয়াজের কমতি নেই। তাহলে এত দাম বাড়বে কেন। আসলে দেখার কেউ নেই, তাই ব্যবসায়ীরা এত বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। মাঝখান থেকে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের কষ্টের শেষ নেই।’


এদিকে আমদানির অনুমতি নেওয়া হলেও এখনও পেঁয়াজের বড় চালান দেশে এসে পৌঁছেনি। আবার ঘূর্ণিঝড়ের কারণে গত কয়েকদিন বন্দর থেকে পেঁয়াজ খালাস ব্যাহত হয়েছে। সরবরাহ কমে যাওয়ায় বাজারে দাম বেড়ে গেছে।
চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে শনিবার সব জাহাজ জেটি থেকে সাগরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

রোববার দুপুরের পর থেকে জেটিতে জাহাজ ভেড়ানো শুরু হয়। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে মোট দুদিন জাহাজ থেকে পেঁয়াজ খালাস ব্যাহত হয়। বন্দর সচিব ওমর ফারুক বলেন, ঝড়ের কারণে সাময়িক ব্যাহত হলেও জাহাজ থেকে কন্টেইনার খালাস পুরোদমে চলছে। পেঁয়াজবাহী কন্টেইনার খালাসে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।


মিলছে না টিসিবির ৪৫ টাকার পেঁয়াজ : এদিকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও অনেকের ভাগ্যে মিলছে না টিসিবির ৪৫ টাকা দরের পেঁয়াজ। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে দেখা গেছে, পেঁয়াজ কিনতে মানুষের লম্বা লাইন। প্রায় এক ঘণ্টা লাইনে দাঁড়ালেও অনেক ক্রেতাকে পেঁয়াজ ছাড়াই খালি হাতে ফিরতে হয়েছে। তাছাড়া পেঁয়াজের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ক্রেতারা।


ঘণ্টাখানেক লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পরও পেঁয়াজ কিনতে পারেননি ক্রেতা জসিম উদ্দীন। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলাম টিসিবির পেঁয়াজ কেনার জন্য; কিন্তু ট্রাকের কাছাকাছি যাওয়ার আগেই বলা হচ্ছে পেঁয়াজ শেষ। টিসিবি এত অল্প পেঁয়াজ এনে ক্রেতার সঙ্গে মসকরা করছে। প্রতিষ্ঠানটিকে আরও বেশি করে পেঁয়াজ আনা দরকার।


তাছাড়া টিসিবির পেঁয়াজের মান ভালো নয় বলে দাবি করছে ক্রেতারা। পেঁয়াজ কেনা শেষে এক ক্রেতা জানায়, ‘পেঁয়াজের মান আছে মোটামুটি, তবে অত ভালো না। দোকান থেকে তো হাতে বেচে নেওয়া যায়, কিন্তু এখানে তো সে সুযোগ নেই। পচা-ভালো সব একবারেই দিয়ে দেয়। এটা বাজারে হয়তো ১০০ বা ৯০ টাকা হবে। এখানে ৪৫ টাকায় পাচ্ছি। ৫০ বা ৫৫ টাকা সঞ্চয় হচ্ছে আমার, এই আর কী।’