নয়াপল্টনের ঘটনা তদন্তে চারদিনেও পুলিশকে চিঠি দেয়নি ইসি

ঢাকা: জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন ফরম বিক্রি নিয়ে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে চারদিনেও পুলিশের আইজিপির কাছে চিঠি দেয়নি নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
গত ১৪ নভেম্বর নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির সঙ্গে সংর্ঘষের পর ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেছিলেন, পল্টনের বিষয়টি একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনার কারণ জানতে পুলিশকে চিঠি দেয়া হবে।
ইসি সূত্র জানায়, নয়াপল্টনের ঘটনায় পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) দেয়ার জন্য গত বৃহস্পতিবারই একটি চিঠি চূড়ান্ত করা হয়। কিন্তু রহস্যজনক কারণে আজ শনিবার দুপুর পর্যন্ত চিঠিটি পাঠানো হয়নি। চূড়ান্ত করা ওই চিঠিতে ‘নিরাপরাধী কাউকে যাতে হয়রানি না করা হয় সেজন্য পুলিশকে নির্দেশনা দেয়া আছে।’একই সঙ্গে চিঠিতে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে সংঘর্ষের ঘটনা তদন্ত করতেও পুলিশকে নির্দেশনা দেয়া হয়।
চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়, বিএনপি কার্যালয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজ ও অন্যান্য তথ্য প্রমাণাদিসহ একটি প্রতিবেদন পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। তবে ঘটনার সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্ট নয় এমন কাউকে হয়রানি না করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি এ ঘটনায় নিরপরাধ ব্যক্তিকে কোনো মামলায় জড়িয়ে নির্বাচনি পরিবেশ যাতে নষ্ট করতে না পারে সেদিকে দৃষ্টি রাখার নির্দেশনার বিষয়টিও রাখা হয়েছে চিঠিতে।
চিঠির নির্দেশনায় বলা হচ্ছে, ‘মিডিয়ায় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী ১৪ নভেম্বর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির পল্টন কার্যালয়ে দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমাদানকালে লোক সমাগমে রাস্তায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ রাস্তায় যানচলাচল পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার পদক্ষেপ গ্রহন করে। এ নিয়ে মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। উচ্ছৃঙ্খল লোকজন কয়েকটি গাড়ী ভাংচুর করে এবং পুলিশের দুইটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। এতে কর্তব্যরত পুলিশসহ অনেকে আহত হয়। এ বিষয়ে ধারণকৃত স্থিরচিত্র, ভিডিও ফুটেজ ও অন্যান্য তথ্য প্রমাণাদিসহ একটি প্রতিবেদন পাঠানোর জন্য মাননীয় নির্বাচন কমিশন নির্দেশনা প্রদান করেছেন। ’
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার যুগ্ম সচিব ফরহাদ আহম্মদ খান সারাবাংলাকে বলেন, পল্টনের ঘটনায় পুলিশের আইজিপিকে আগামীকাল (রোববার) চিঠি দিতে পারে কমিশন। তবে ইসির একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ঘটনা ঘটার পর এরইমধ্যে চারদিন পার হয়ে গেছে। ইসি চিঠি প্রস্তুত করার পরেও কেনো তা পাঠানো হচ্ছে না, তা রহস্যজনক। এরই মধ্যে ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় অনেকেই গ্রেফতার হয়ে রিমান্ডে রয়েছেন। ফলে ইসির ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যাচ্ছে।
এর আগে শুক্রবার (১৬ নভেম্বর) সকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বরাবর একটি চিঠি পাঠিয়েছে বিএনপি। যেখানে বলা হয়েছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর দলের ৪৭২ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।