‘গোল্ডেন’ মনির কান্ডে ফেঁসে যাচ্ছেন গণপূর্তের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী

বিপুল অর্থ, অস্ত্র, মদ, সোনাসহ গ্রেপ্তার মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনিরের অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এর অংশ হিসেবে গণপূর্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার বসুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে দুদকের উপপরিচালক সামছুল আলমের নেতৃত্বে এই প্রকৌশলীকে গতকাল বুধবার সকাল ১০টা থেকে ২ ঘণ্টা জেরা করা হয়।
জানতে চাইলে অনুসন্ধানসংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদের পর তার (প্রদীপ কুমার) কাছে আরও কিছু
নথিপত্র চাওয়া হয়েছে। তিনি ওইসব নথিপত্র জমা দেবেন বলে জানিয়েছেন। দুদকের অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে এই জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।’ তবে এদিন জিজ্ঞাসাবাদের কথা থাকলেও উপস্থিত না হয়ে সময় চেয়ে আবেদন করেছেন রাজউকের পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলাম।
গোল্ডেন মনিরের অবৈধ সম্পদ ও প্লট জালিয়াতির অভিযোগ অনুসন্ধানে এর আগে গত মঙ্গলবার রাজউকের সিবিএ নেতা আবদুল জলিল ও নিম্নমান সহকারী সিবিএর সাবেক নেতা মো. ওবায়দুল্লাহ হককে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। গত ১ ডিসেম্বর দুদক উপপরিচালক ও অনুসন্ধান কর্মকর্তা মো. সামছুল আলম স্বাক্ষরিত নোটিশে সাতজনকে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হতে বলা হয়। একই সময়ে পাঠানো পৃথক নোটিশে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. শফিকুল ওরফে ‘সোনা শফিক’ ও ডিএনসিসির সাবেক কমিশনার বিএনপি নেতা এমএ কাউয়ুমকেও ১০ ডিসেম্বর তলব করেছে দুদক।
এর আগে গত ২৬ নভেম্বর গোল্ডেন মনির ও তার স্ত্রী রওশন আক্তারের সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ পাঠিয়েছে দুদক। তদন্ত সংস্থার পরিচালক আকতার হোসেন আজাদের স্বাক্ষরে পাঠানো নোটিশে তাদের ২১ কার্যদিবসের মধ্যে সম্পদবিবরণী দাখিল করতে বলা হয়েছে। এই অনুসন্ধান ছাড়াও আট বছর আগের এক মামলায় গোল্ডেন মনিরের বিরুদ্ধে গত ৩ ডিসেম্বর ৩ কোটি ১০ লাখ ৮৫ হাজার ৩৩৫ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় অভিযোগপত্র অনুমোদন করেছে কমিশন।
মেরুল-বাড্ডায় মনিরের ছয়তলা বাড়িতে গত ২০ নভেম্বর রাতে অভিযান চালায় র্যাব। অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানে এ অভিযান চালানোর পর মনিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানে মনিরের বাড়ি থেকে নগদ ১ কোটি ৯ লাখ টাকা, চার লিটার মদ, আট কেজি সোনা, একটি বিদেশি পিস্তল ও গুলি উদ্ধার করা হয়। পরে মনিরের বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে তিনটি মামলা করা হয়। মামলাগুলো তদন্ত করছে গোয়েন্দা পুলিশ।