কোটালীপাড়ার মানুষের অতি আপনজন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এক পলক দেখতে জনসভায় জনতার ঢল নামে। বুধবার তার আগমন উপলক্ষে লুৎফর রহমান আদর্শ সরকারি কলেজ মাঠ ও এর আশপাশে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। গাছের মগডাল, বাড়ির ছাদ, পুকুর পাড়ে ছিল লোকে লোকারণ্য। জনসভাস্থল ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকে গোপালগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে মানুষজন কোটালীপাড়ার জনসভাস্থলে আসতে থাকে।
বুধবার দুপুরের মধ্যে জনসভাস্থল পরিপূর্ণ হয়ে যায়। বিকাল ৩টার মধ্যে আশপাশের রাস্তাও জনতায় ভরে যায়। প্রধানমন্ত্রীর ছবিসংবলিত পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে হাজার হাজার নেতাকর্মী দাঁড়িয়ে থাকেন। ঢাকঢোল পিটিয়ে জনসভায়স্থলে প্রবেশ করেন অনেকে। ছাত্রলীগ, যুবলীগ, মহিলা লীগসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মিছিল, ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে জনসভাস্থলে উপস্থিত হন। মিছিলে মিছিলে কোটালীপাড়া উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়। এ সময় নেচে-গেয়ে, ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে মিছিল করে জনসভাস্থল মুখরিত করেন তারা।
জনসভায় নারীদের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্য করার মতো। সামনের অধিকাংশ জায়গাজুড়ে নারীরা অবস্থান নিয়ে মুহুর্মুহু করতালি, স্লোগানে ভরিয়ে তোলেন পুরো এলাকা। জনসভা মঞ্চের সামনে বিশেষ নিরাপত্তা বেষ্টনী দিয়ে নারীদের বসার স্থান করে দেয়া হয়।
কোটালীপাড়া উপজেলা পরিষদের সামনে বিশাল মিছিল নিয়ে অবস্থান নেয় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা। তারা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে মিছিল নিয়ে জনসভার দিকে যান।
এদিকে, সড়কপথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া সফর উপলক্ষে পথে পথে মানুষের ঢল নামে। মাদারীপুরের শিবচরে প্রায় ১৫ কিলোমিটার মহাসড়কজুড়ে হাজার হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থক করতালি ও স্লোগানের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। প্রধানমন্ত্রীও হাত নেড়ে নেতাকর্মীদের অভিবাদন জানান। মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে অপেক্ষমাণ নেতাকর্মীদের উদ্দেশেও হাত নেড়ে তিনি শুভেচ্ছা জানান। এ সম্পর্কে প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
শিবচর (মাদারীপুর) : প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহর নিয়ে দুপুর ১২টার দিকে ফেরি ক্যামেলিয়া কাঁঠালবাড়ি ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ঘাটে পৌঁছলে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আওয়ামী নেতা নূর-ই-আলম চৌধুরী তাকে স্বাগত জানান। প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহর ঘাট এলাকা অতিক্রম কালে হাজার হাজার নেতাকর্মী-সমর্থক স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত করে তুলেন।
ঘাট থেকে শিবচরের দত্তপাড়া পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটারজুড়ে হাজার হাজার নেতাকর্মী তাকে করতালি ও স্লোগানের মধ্য দিয়ে শুভেচ্ছা ও স্বাগত জানান। প্রধানমন্ত্রীও হাত নেড়ে নেতাকর্মীদের অভিবাদন জানান। এ সময় নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী আবদুস সোবহান গোলাপ, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মিয়াজউদ্দিন খান, উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ রেজাউল করিম তালকুদার, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি মুনির চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সামসুদ্দিন খান, সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. সেলিম প্রমুখ ফেরিতে উপস্থিত ছিলেন। ফেরিঘাট থেকে উপজেলার দত্তপাড়া পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার অংশ ছিল নেতাকর্মী ও সমর্থকে পরিপূর্ণ। নৌকার স্লোগানে নেতাকর্মীরা ঘাট ও মহাসড়ক মুখরিত করে তুলেন।
নূর-ই-আলম চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এ সফরকে কেন্দ্র করে আমাদের এলাকার মানুষ খুব উৎফুল্ল। নির্বাচনী প্রচারণায় এটি আমাদের বিশেষ পাওয়া। তিনি বলেন, উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড, পদ্মা সেতুসহ বিভিন্ন নির্মাণ কাজের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে এ সরকারকে আবারও ক্ষমতায় আসা প্রয়োজন। তাই সবার কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চাইছি।
শ্রীনগর (মুন্সীগঞ্জ) : টুঙ্গিপাড়া যাওয়ার পথে শ্রীনগরে অপেক্ষমাণ নেতাকর্মীদের হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সকাল ১০টার দিকে প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহর ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের শ্রীনগর উপজেলার ছনবাড়ী পার হওয়ার সময় রাস্তার দুই পাশে অপেক্ষমাণ পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী তাকে স্বাগত জানিয়ে স্লোগান দেন। শ্রীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগ ও বিকল্পধারার নেতাকর্মীরা সকাল ৮টা থেকে ছনবাড়ীতে জড়ো হতে থাকেন।
এ সময় মুন্সীগঞ্জ-১ আসনে মহাজোট প্রার্থী ও বিকল্পধারার মাহী বি চৌধুরী, আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় উপকমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক গোলাম সারোয়ার কবির, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ তোফাজ্জল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক আলী আক্কাস মৃধা জীবন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবু হানিফা নোমান, মুন্সীগঞ্জ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন মাস্টার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।