ঢাকা রবিবার, ৪ঠা মে ২০২৫, ২২শে বৈশাখ ১৪৩২


পুলিশকে ‘লাঠিয়াল, জানোয়ার বললেন ড.কামাল


২৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:২৩

আপডেট:
২৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:৪৩

পুলিশকে ‘লাঠিয়াল, জানোয়ার বললেন ড.কামাল

 

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে বৈঠক শেষ না করেই বেরিয়ে গেছেন ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্টের প্রতিনিধি দল। বৈঠকে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের এক পর্যায়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা ড. কামালকে উদ্দেশ্যে করে বলেছেন, “আপনি নিজেকে কি মনে করেন?” এমন বক্তব্য নিয়ে বৈঠকে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় শুরু হয়। পরে বৈঠকে কামাল হোসেনের বক্তব্যকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ‘অবজ্ঞা’ করেছেন দাবি করে বৈঠক বর্জন করেন ঐক্যফ্রন্ট নেতারা।

বৈঠক শেষে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী দৈনিক অামাদের দিনকে কে বলেন, বৈঠকের শুরুতেই ঐক্যফ্রন্টের নেতারা বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন। এসময় ড. কামাল হোসেন পুলিশের গ্রেফতার হয়রানির বিষয়ে কমিশনকে অবহিত করেন। বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় পুলিশি নির্যাতনের কথাও তুলে ধরেন তিনি। জবাবে সিইসি ড. কামালের কাছে জানতে চান কোথায় নির্যাতন হচ্ছে দেখান। চলেন আমাকে নিয়ে যান সেখানে। এর জবাবে “কামাল হোসেন সাহেব বলছেন-আমাদের লোকজন আইসিইউতে, মারধর করা হচ্ছে নেতাকর্মীদের। সিইসি বলছেন, পুলিশ এতো খারাপ না; আপনাদের কথা বিশ্বাসযোগ্য নয়; আপনি দেখান। আমাদের কথা বিশ্বাস করছেন না সিইসি। একটা অপমানজনক কথা বলেন তিনি।

এসময় ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন সিইসিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, সিইসি বর্তমানে প্রধান বিচারপতির চেয়েও শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে পারেন। আপনি ইচ্ছা করলে ‘জানোয়ার লাঠিয়াল পুলিশ বাহিনী’কে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। আপনার এই ‘লাঠিয়াল’ পুলিশ বাহিনী আমাদের মিটিং-মিছিল কিছুই করতে দিচ্ছে না। এমনকি বেলা দুইটার পর মাইক ব্যবহারের জন্য আমাদের নির্দেশনা দিয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ ও তাদের জোটের লোকজন নিয়ম-কানুন না মেনে পুলিশের সহায়তায় প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। পুলিশ ও আওয়ামী লীগের গুণ্ডা বাহিনী আমাদের ওপর হামলা করছে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও বলেন, ‘আমাদের প্রার্থীদের জীবনের দাম না থাকলেও কর্মীদের জীবনের দাম রয়েছে। তাদেরতো রক্ষা করতে হবে।’

এ সময় সিইসি ক্ষুব্ধ হয়ে ড. কামাল হোসেনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি নিজেকে কি মনে করেন। আপনি এমন কী হয়েছেন- যে পুলিশকে ‘লাঠিয়াল, জানোয়ার’ বলছেন। এ সময় অন্য দুই নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার ও রফিকুল ইসলাম চুপ ছিলেন।

এরপর বিএনপি নেতা মঈন খান সিইসিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘নির্বাচনের কোনো পরিবেশ যদি সৃষ্টি করতে না পারেন, তাহলে বলে দেন, আমরা আজকেই প্রেসক্লাবে গিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ভোট বর্জনের বিষয়ে ঘোষণা দেবো।’

পরে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা সিইসির উপর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে সভা বর্জন করেন। তবে কমিশনের কেউ তাদের সভা বর্জন না করার অনুরোধ জানাননি বলেও জানা গেছে।

বৈঠকে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, রফিকুল ইসলাম, ইসি সচিব হেলালুদ্দীন ছিলেন। ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম, মোস্তফা মহসীন মন্টু, সুব্রত চৌধুরী, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা আব্বাস, জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।