গোপালগঞ্জে সংঘর্ষে নিহত ৩ জনের লাশ কবর থেকে উত্তোলন

গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশ ঘিরে হামলা-সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিতে নিহত তিনজনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে তোলা হয়েছে।
সোমবার দুপুরে শহরের পৌর কবরস্থান থেকে ইমন তালুকদার ও রমজান কাজী এবং টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতী কবরস্থান থেকে সোহেল রানা মোল্লার লাশ তোলা হয় বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ।
এর আগে বুধবার এনসিপির পদযাত্রা ঘিরে দফায় দফায় হামলা ও সংঘর্ষের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত চারজনকে সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত ছাড়া দাফন ও সৎকার হাওয়া নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে কবর থেকে লাশ তোলার আদেশ দেয় আদালত।
আজ সোমবার দুপুর পৌনে ১টার দিকে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নির্বাহী হাকিম রাসেল মুন্সির উপস্থিতিতে গোপালগঞ্জ পৌর কবরস্থান থেকে ইমন তালুকদারের লাশ উত্তোলন করা হয়।
এ ছাড়া রমজান কাজীর লাশ তোলার সময় গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের আরেক নির্বাহী হাকিম রন্টি পোদ্দার উপস্থিত ছিলেন।
লাশ দুটির সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানান গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মির সাজেদুর রহমান।
রমজান কাজী হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোপালগঞ্জ সদর থানার এসআই মো. মুরাদ হোসেন সুরতহাল প্রতিবেদনে লাশের ডান কাঁধে গুলির চিহ্ন রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন।
এ ছাড়া ইমন তালুকদার হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোপালগঞ্জ সদর থানার এসআই শহিদুল ইসলাম সুরতহাল প্রতিবেদনে নিহতের বাম উরুতে গুলির চিহ্ন পাওয়ার কথা বলেছেন।
এর আগে রোববার পুলিশের পক্ষ থেকে ওই তিনজনের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য গোপালগঞ্জের মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে অবেদন করা হয় বলে জানান ওসি সাজেদুর রহমান।
তিনি বলেন, পরে আদালত কবর থেকে লাশ তুলে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেয়। তাই দুপুর থেকে লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতী মোল্লাবাড়ি কবরস্থান থেকে সোহেল রানা মোল্লার লাশ তোলার সময় উপস্থিত ছিলেন টুঙ্গিপাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মারুফ দস্তেগীর।
পরে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন শেষ ময়নাতদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
ঘটনার দিন সংঘর্ষে নিহত দীপ্ত সাহাসহ চারজনের লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন ও সৎকার করা হয়। পরদিন রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান গুলিবিদ্ধ রমজান মুন্সি। তবে স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তরের আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে তার ময়নাতদন্ত করা হয়।
গোপালগঞ্জের ঘটনায় শনিবার রাতে গোপালগঞ্জ থানায় আলাদা চারটি মামলা করে পুলিশ। প্রতি মামলাতেই আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের অজ্ঞাত এক হাজার ৪০০ থেকে দেড় হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে। চার মামলায় মোট আসামি পাঁচ হাজার ৪০০।