ঢাকা বুধবার, ১৩ই আগস্ট ২০২৫, ৩০শে শ্রাবণ ১৪৩২


প্রধান উপদেষ্টা

জনগণের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ


প্রকাশিত:
১৩ আগস্ট ২০২৫ ১২:৪৮

মালয়েশিয়া ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউকেএম) বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ভাষণ দিচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ন্যায়সঙ্গত শাসন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতির দেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।

তিনি বলেন, গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে এবং জনগণের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সংস্কারকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার পাশাপাশি ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অবাধ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিত করতে কঠোর পরিশ্রম করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

বুধবার (১৩ আগস্ট) মালয়েশিয়ার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ইউকেএম) সামাজিক ব্যবসায় অবদানের জন্য ড. ইউনূসকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে। বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. ইউনূস বলেন, একটি শক্তিশালী ও স্থিতিশীল বাংলাদেশ গড়তে অর্থনীতিতে বড় রকমের পরিবর্তন প্রয়োজন। এজন্য উদ্যোক্তাদের সহায়তা, শিক্ষা ও প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে হবে।

তিনি ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে তরুণদের নেতৃত্বে গণঅভ্যুত্থানের কথা স্মরণ করে বলেন, এটি আমাদের জাতীয় পরিচয় ও ভবিষ্যতের স্বপ্নকে নতুন রূপ দিয়েছে। আজ আমরা এমন বাংলাদেশ গড়ছি, যেখানে ন্যায়সঙ্গত শাসন, সবার জন্য অর্থনৈতিক সুযোগ এবং শান্তি-স্থিতিশীলতা নিশ্চিত হবে।

ক্ষুদ্রঋণ ও সামাজিক ব্যবসার সাফল্য তুলে ধরে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ বলেন, মানুষ দরিদ্র নয়, বরং ব্যবস্থা তাদের ন্যায্য সুযোগ দেয়নি। আমাদের আর্থিক কাঠামো ধনীদের জন্য তৈরি, দরিদ্রদের জন্য নয়। এজন্যই আমি এমন ব্যবস্থা গড়েছি, যেখানে সবচেয়ে গরিব মানুষও ঋণ পেয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারে।

তিনি এই সম্মানকে বাংলাদেশের জনগণের প্রতি উৎসর্গ করেন এবং তরুণদের স্বপ্ন পূরণে দায়িত্বের কথা উল্লেখ করেন। গত বছর তরুণরা ফ্যাসিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল। অনেকে একটি ন্যায়ভিত্তিক ভবিষ্যতের জন্য জীবন দিয়েছে-যেখানে সবাই ভয় ও বৈষম্যমুক্তভাবে বাঁচবে, বলেন তিনি।

বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্বের কথা স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দুই দেশ সবসময়ই দৃঢ় সম্পর্ক ভাগাভাগি করেছে-যা গড়ে উঠেছে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং উন্নতির যৌথ স্বপ্নের ওপর।

মালয়েশিয়ার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রফেসর ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ এখন এক নতুন যুগে প্রবেশ করছে, আমরা মালয়েশিয়ার সঙ্গে সহযোগিতা আরও গভীর করতে চাই।

সম্ভাবনাময় অনেক ক্ষেত্র রয়েছে-যেমন সেমিকন্ডাক্টর শিল্প, হালাল অর্থনীতি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং উদ্যোক্তা উন্নয়ন। একসঙ্গে আমরা এমন এক ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারি-যা হবে সমৃদ্ধ, উদ্ভাবনী, স্থিতিশীল এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক।