ঢাকা রবিবার, ২৪শে আগস্ট ২০২৫, ১০ই ভাদ্র ১৪৩২


বাংলাদেশ-পাকিস্তান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এগিয়ে নিতে সম্মত: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা


প্রকাশিত:
২৪ আগস্ট ২০২৫ ১৬:৫১

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের সঙ্গে বৈঠকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন (ছবি: সংগৃহীত)

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন (ফাইল ফটো)
বাংলাদেশ ও পাকিস্তান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে সম্মত হয়েছে। একইসঙ্গে অমীমাংসিত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রাখার বিষয়েও একমত হয়েছে দুই পক্ষ বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

ঢাকায় সফররত পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের সঙ্গে রবিবার (২৪ আগস্ট) বৈঠকের পরে উপদেষ্টা একক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে বহুমাত্রিক সম্পর্ক বাড়ানোর বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছি, বিশেষ করে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যেটি সরাসরি দেশের জন্য, মানুষের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে।’

দুই দেশের মধ্যে যে অমীমাংসিত ইস্যুগুলো আছে সেগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দুই পক্ষ সম্মত হয়েছি যে— এটি নিয়ে আমরা কথা বলবো এবং চেষ্টা করবো এই ইস্যুগুলো আগামীতে – একদিনে সমাধান হবে না। আমরা একমত হয়েছি এগুলো নিয়ে এমনভাবে কথা বলবো, যেন আমরা পেছনে ফেলতে পারি।’

দুই দেশের মধ্যে যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক আন্তরিক, গঠনমূলক ও সৌহার্দ্য পরিবেশে হয়েছে। পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ঐতিহাসিক এবং বহুমাত্রিক। এই প্রেক্ষিতে আজকের বৈঠকে আমি এবং পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিদ্যমান সম্পর্ককে সামনের দিনগুলোতে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের প্রত্যয় ব্যক্ত বরছি বলে তিনি জানান।

ছয়টি কাগজ সই

রবিবার বৈঠকের পর ছয়টি কাগজ সই হয়েছে এবং এরমধ্যে একটি চুক্তি এবং পাঁচটি সমঝোতা স্মারক বলে তিনি জানান। এরমধ্যে রয়েছে— কূটনীতিবিদ ও সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য ভিসা অব্যহকি চুক্তি।

সমঝোতা স্মারকের মধ্যে রয়েছে— দুই দেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ প্রতিষ্ঠা, সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সমঝোতা স্মারক,

দুই দেশের ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমির মধ্যে সমঝোতা স্মারক,

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ ও পাকিস্তানের স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের মধ্যে সমঝোতা স্মারক, এবং বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা ও পাকিস্তানের সংবাদ সংস্থার মধ্যে সমঝোতা স্মারক।

খাতভিত্তিক আলোচনা

দুই দেশের মধ্যে খাতভিত্তিক আলোচনা হয়েছে। খাতগুলোর মধ্যে রয়েছে— স্বাস্থ্য, বাণিজ্য বৃদ্ধি, বাণিজ্য ভারসাম্য, বাজার প্রবেশাধিকার, টেক্সটাইল, তথ্যপ্রযুক্তি, জ্বালানি, কৃষি ও মৎস্য সহযোগিতা, কানেক্টিভিটি, জাহাজ চলাচল, বিমান চলাচল, শিক্ষা ও বৃত্তি, সাংস্কৃতিক ক্রীড়া, সংস্কৃতিসহ অন্যান্য বিষয়।

আঞ্চলিক সহযোগিতার মধ্যে সার্কসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্য ও গাজায় যে সহিংসতা চলছে, সেটির বিষয়ে দুই দেশের অবস্থান একই ধরনের।

রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানের জন্য পাকিস্তানের সমর্থন চেয়েছে বাংলাদেশ।

ত্রিপক্ষীয় মেকানিজম

ঢাকা, ইসলামাবাদ ও বেইজিং ত্রিপাক্ষিক মেকানিজমে চীন ও পাকিস্তানের উৎসাহ আছে বলে তিনি জানান।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা বলেছি, ঠিক এভাবে নয়, আপনারা এটি আরও বর্ধিত করেন। আরও দেশকে নিয়ে আসেন, আমরা একসঙ্গে বসি। আমাদের এই অবস্থান এখনও তাই আছে এবং এটি তারা বিবেচনায় নিয়েছে এবং আগামীতে হয়তো সেটি হবে।’

এটির কারণে আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করছি, সেটি নয়। পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক গত সরকারের আমলে ইচ্ছাকৃতভাবে পিছিয়ে রাখা হয়েছে। আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক চাই। যেমন- আমরা অন্যান্য বন্ধু দেশের সঙ্গে চাই বলে তিনি জানান।