ঢাকা বৃহঃস্পতিবার, ৮ই মে ২০২৫, ২৬শে বৈশাখ ১৪৩২


শ্রমিক লীগের সম্মেলন আজ


৯ নভেম্বর ২০১৯ ২০:১৬

আপডেট:
৮ মে ২০২৫ ১৯:১২

কে হচ্ছেন শ্রমিক লীগের নতুন সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এই জল্পনা-কল্পনা রেখেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম এই সংগঠনের সম্মেলন আজ শনিবার। আগ্রহী অন্তত ৩০ জনের মধ্যে কে হচ্ছেন সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, সেই প্রশ্নের উত্তর নেই কারও কাছেই। এ প্রেক্ষাপটে বেলা ১১টায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মেলন উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর বেলা ৩টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে হবে নেতৃত্ব নির্বাচনের দ্বিতীয় অধিবেশন। সংগঠনের নেতাদের ধারণা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই তার পছন্দের দুজনের হাতে নেতৃত্ব তুলে দেবেন।

শ্রমিক লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রতি দুই বছর অন্তর সম্মেলনের কথা থাকলেও টানা সাত বছর পার করেছে বর্তমান নেতৃত্ব। ২০১২ সালের ১৯ জুলাই হয়েছিল সংগঠনের সবশেষ সম্মেলন। ওই সম্মেলনে নারায়ণগঞ্জের শ্রমিক নেতা শুকুর মাহমুদ সভাপতি ও জনতা ব্যাংক ট্রেড ইউনিয়নের নেতা সিরাজুল ইসলাম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। দীর্ঘদিন পর সম্মেলন হওয়ায় নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে। সেই সঙ্গে পরবর্তী নেতৃত্বে কারা আসছেনÑ এ নিয়েও চলছে আলোচনা। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ৩৫ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটির অন্য পদে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম নিয়েও আলোচনা হচ্ছে।

১৯৬৯ সালের ১২ অক্টোবর প্রতিষ্ঠিত জাতীয় শ্রমিক লীগ আগে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন বলে বিবেচিত হতো। তবে নির্বাচন কমিশনের গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ-২০০৮-এর বিধিমালা অনুযায়ী দলীয় গঠনতন্ত্র সংশোধন করায় এই সংগঠনসহ ছাত্রলীগ সহযোগী সংগঠনের মর্যাদা হারায়। অবশ্য সংগঠন দুটি ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের মর্যাদা পাচ্ছে।

আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন তারুণ্যনির্ভর, ত্যাগী ও স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নেতৃত্ব চাচ্ছে দলের হাইকমান্ড। তাই কৃষক লীগের মতো এই সংগঠনের শীর্ষ দুই পদেও আসতে পারে পরিবর্তন। জাতীয় সম্মেলনে কাউন্সিলরদের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় কমিটি গঠিত হওয়ার কথা থাকলেও নেতৃত্ব নির্বাচনের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার মতামত প্রাধান্য পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ দুটিতে তার আস্থাভাজন ত্যাগী ও দক্ষ নেতাদের নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

সংগঠনের নেতাকর্মীরা জানান, বর্তমান সভাপতি শুকুর মাহমুদ পদে বহাল থাকতে জোর তদবির করছেন। অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলামও সভাপতি হতে তদবির করছেন। এছাড়া সভাপতি পদে জোর আলোচনায় আছেন হাবিবুর রহমান আকন্দ, সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলম, ফজলুল হক মন্টু, জহিরুল ইসলাম চৌধুরী, মোল্লা আবুল কালাম আজাদ, আমিনুল হক ফারুকসহ অনেকে। সাধারণ সম্পাদক পদে জোর আলোচনায় আছে হুমায়ুন কবির, আলাউদ্দিন মিয়া, শাহাবুদ্দিন মিয়া, আহসান হাবীব মোল্লা, আবদুল হালিমসহ একাধিক নেতার নাম।

দেশের বৃহৎ এ শ্রমিক সংগঠনটির ৭৮টি জেলা ইউনিট ছাড়াও রয়েছে অনেক শাখা সংগঠন। রেলওয়ে শ্রমিক লীগ, বিদ্যুৎ শ্রমিক লীগ, বিএডিসি, ওয়াসা সিবিএ, বিসিআইসি, ঘাট শ্রমিক লীগ, চা-শ্রমিক লীগ, রিকশা-ভ্যান, মোটর-শ্রমিক, বাস পরিবহন, ট্রাক-লরি, ভূমিসহ রয়েছে আরও কয়েকটি শ্রমিক সংগঠন। এসব সংগঠন জাতীয় শ্রমিক লীগের নিয়ন্ত্রণে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব মোল্লা বলেন, ‘আমাদের প্রিয় নেত্রী কনসেপ্ট দিয়েছেন যে ‘ক্লিন ইমেজের’, যার বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতির অভিযোগ নেই, স্বজনপ্রীতির অভিযোগ নেই, খাঁটি ও পারিবারিক সূত্রে আওয়ামী লীগার এমন নেতাই নির্বাচন করবেন। তিনি যে নেতৃত্ব আমাদের উপহার দেবেন তাকে নিয়ে আমরা কাজ করব, জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতিটি কর্মকাণ্ড আমরা বাস্তবায়ন করব।’

সভাপতি পদে আলোচনায় থাকা হাবিবুর রহমান আখন্দ বলেন, ‘সম্মেলনে অত্যন্ত ভালো নেতৃত্ব আসবে। যারা এখন ট্রেড ইউনিয়নে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করতে পেরেছেন এমন নেতাকে দায়িত্ব দেবেন নেত্রী। নেত্রীর এই কমিটি আগামী দিনে ভালো কাজ করবে এবং তার সিদ্ধান্ত সঠিকভাবে বাস্তবায়নে কাজ করবে।’

সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘জাতীয় সম্মেলনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। আপনারা মাঠে গিয়ে দেখে আসতে পারেন। ৮ হাজার কাউন্সিলর ও ৮ হাজার ডেলিগেট এই সম্মেলনে অংশ নেবেন।’