বিএনপির লুকোচুরি খেলায় মারমুখী সরকার

রাজপথে বিএনপির হঠাৎ তৎপরতাকে স্বাভাবিক রাজনৈতিক কর্মসূচি হিসেবে নিচ্ছে না সরকার। সরকারবিরোধী প্রধান এই রাজনৈতিক শক্তির ঝটিকা কর্মসূচিকে অঙ্কুরেই বিনষ্ট করে দিতে চায় ক্ষমতাসীনরা। অন্যদিকে দ্বিধাদ্বন্দ্ব নিয়ে হলেও কর্মসূচি থেকে পেছাবে না বলে জানিয়েছে বিএনপি। বরাবরের মতো বিএনপির কর্মসূচি মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপরই ভরসা সরকারের।
অনুমতি না নিয়ে সভা-সমাবেশ করার সাহস, শক্তি বা সক্ষমতা নেই বিএনপির– গত সোমবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের পর মঙ্গলবার দুপুরে হাইকোর্টের সামনে অবস্থান ও বিক্ষোভ করতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন বিএনপির নেতাকর্মীরা। কারাবন্দি খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এ অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুরেরও ঘটনা ঘটে। পরে রাতেই শাহবাগ থানায় ১৫-২০ জনের নাম উল্লেখসহ ৫০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ। এ মামলার আসামি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এবং আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল এরই মধ্যে হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নিয়েছেন। এছাড়া ওই মামলায় গ্রেপ্তার বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমদ, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতও আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের দুজন মন্ত্রী বলেন, বিএনপির হঠাৎ রাস্তায় নামা ইঙ্গিতপূর্ণ। সামনে মুজিববর্ষ ২০২০-২১ উদযাপন উপলক্ষে দেশে কোনো রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি হোক তা আমরা চাই না। পাশাপাশি বিএনপির নেতাদের কোনো চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র থাকলে তা মোকাবিলা করতে অ্যাকশনে নামার সিদ্ধান্তও আছে আমাদের। তাদের আমরা জানান দিতে চাই– ২০২০ থেকে ’২১ সাল পর্যন্ত এই এক বছর যেকোনো মূল্যে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর সরকার।
সরকারের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী বলেন, দেশে অস্থির পরিবেশ সৃষ্টিকারী যেকোনো মহল-গোষ্ঠীকে শক্ত হাতে মোকাবিলা করতে অনড় শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার। দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সবাইকে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে সতর্কাবস্থায় থাকতে।
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপির আন্দোলন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মো. ফারুক খান বলেন, ‘আদালতের সেটেলড একটা বিষয় নিয়ে তারা রাজপথ গরম করতে চাইলে সেটা মোকাবিলা করা হবে এবং সেটার সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।’ দলের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ বলেন, তাদের কোনো সাংগঠনিক শক্তি নেই, এগুলো তাদের আওয়াজ। এগুলো করে কোনো ফায়দা হাসিল করা যাবে না। খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন করে হবে না। তার মুক্তির একমাত্র পথ আইনি লড়াই।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, দেশের অন্যতম রাজনৈতিক শক্তি বিএনপিকে আতঙ্কে রাখার কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে। এ ড়্গেত্রে সরকার কতটা কঠোর হবে সেটা নির্ভর করবে তাদের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ওপর। বিএনপি কঠোর হলে সরকার আরও কঠোর হবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, মুজিববর্ষকে নির্বিঘ্ন করে তুলতে যত কঠোর হওয়া লাগে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার তার সবটুকুই হবে। বিএনপির নেতাদের ওপর বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে। তাদের কারও কারও ড়্গেত্রে পুরনো মামলাগুলো চাঙ্গা করা হবে। বিএনপিসহ অন্য রাজনৈতিক নেতাদের মনোবল দুর্বল করতে সম্ভাব্য সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
দলটির সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, সম্প্রতি বিএনপির হঠাৎ রাস্তায় নামার ঘটনাকে সহজ কোনো ব্যাপার মনে করছে না আওয়ামী লীগ। এর কারণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে। এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন মহলও ব্যাপক চাপে পড়েছে। বিএনপিসহ সরকারবিরোধী শক্তি এভাবে যাতে আর কোনো মহড়া দেওয়ার সুযোগ না পায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থাকতে বলা হয়েছে। এর ফলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাই গ্রেপ্তার আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, আগামী বছর জানুয়ারি পর্যন্ত বিএনপির নেতাদের ওপর নরম-গরম অবস্থানে থাকবে সরকার। তাদের মনোবল দুর্বল করতে তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অ্যাকশন অব্যাহত রাখা হতে পারে।
আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য হলে সমুচিত জবাব দেওয়া হবে বলে বিএনপিকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। গতকাল শুক্রবার রাজধানীতে আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আপনারা যদি মনে করেন সহিংসতা সৃষ্টি করে, দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে, ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করবেন, তাহলে আপনারা বোকার স্বর্গে আছেন।’
গতকাল রাজধানীতে আরেক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপির আন্দোলনের হুমকি গতানুগতিক এবং বরাবরের মতোই হাস্যকর। এই দলটি আন্দোলনের নামে বিগত সাড়ে ১০ বছর ধরে একের পর এক হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে।’
আগামী দিনে বিএনপির রাজপথের আন্দোলন-সংগ্রাম মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কী পদক্ষেপ নেবে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম গতকাল রাতে দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘রাজপথে বিএনপির আন্দোলন-সংগ্রাম মোকাবিলায় আমরাও পাল্টা কৌশল নেব। তবে গণমাধ্যমে এ বিষয়ে কিছু বলতে চাই না।’
হঠাৎ করে বিএনপির রাজপথে অবস্থান নেওয়ার বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন গতকাল দেশ রূপান্তরকে বলেন, হাইকার্টের সামনে অবস্থান কর্মসূচি ছিল একটি নমুনা মাত্র। তাতেই সরকার অনেক হার্ডলাইনে গেছে। নেতাকর্মীদের ওপর হামলা-মামলা-গ্রেপ্তার চলছে। এসব করে লাভ হবে না। গ্রেপ্তার এড়িয়ে কৌশলে মাঠে থাকবেন তারা। প্রয়োজনে এক দফার আন্দোলনে যাবে বিএনপি। তিনি আরও বলেন, আজ শনিবার বিকেলে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভা হবে। সভায় এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির এক ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, গত ২৪ নভেম্বর খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করে বিএনপি। সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আগামী দিনে বিএনপি সভা-সমাবেশ করার জন্য পুলিশের অনুমতির জন্য বসে থাকবে না। কারণ সভা-সমাবেশ সংবিধানস্বীকৃত অধিকার। পরদিন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এক অনুষ্ঠানে বলেন, অনুমতি ছাড়া বিএনপির রাজপথে কর্মসূচি পালনের সক্ষমতা নেই, সাহস নেই। এর জবাব দিতেই গত মঙ্গলবার হঠাৎ হাইকোর্টের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন বিএনপি সমর্থক ‘রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা ও জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের’ নেতাকর্মীরা।
তিনি আরও বলেন, হাইকোর্টের সামনে বিএনপির নেতাকর্মীরা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করলে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। এরপর পাল্টাপাল্টি ধাওয়া এবং গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। ওই রাতেই পুলিশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতকে গ্রেপ্তার করে। পরদিন রাজধানীর বিজয়নগরে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে তার মুক্তির দাবিতে মুক্তিযোদ্ধা দল ও মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মের নেতাকর্মীরা ঝটিকা মিছিল করেন।
হাইকোর্টের সামনে নেতাকর্মীদের গাড়ি ভাঙচুরের বিষয়টি ভালো চোখে দেখছেন না বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান। তিনি গতকাল দেশ রূপান্তরকে বলেন, হাইকোর্টের সামনে বসে পড়ার বিষয়টি সরকারকে সতর্ক করার জন্য করা হয়েছিল। সেখানে অবস্থান নেওয়ার পেছনের কারণ ছিল বিএনপি চাইলে যেকোনো সময়ে রাজধানীর যেকোনো স্থানে শতশত নেতাকর্মী জড়ো করতে পারে। তবে গাড়ি ভাঙচুরের বিষয়টি ঠিক হয়নি। আগামীতে বিএনপির নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করবে।
গত মঙ্গলবার রাতে শাহবাগ থানায় মামলার পর বুধবার সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে কার্যালয়ে দলের নেতাকর্মীদের আনাগোনা কমে যায়। বিশেষ করে কার্যালয়ে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সংবাদ সম্মেলনে সবসময় যেসব নেতাকে দেখা যায় তাদের কাউকে সেদিন দেখা যায়নি। একই অবস্থা ছিল গত বৃহস্পতিবারও। সেদিন নেতাকর্মীদের না পেয়ে ফারুক ও মঞ্জু নামে কার্যালয়ের দুই কর্মচারীকে আটক করে পল্টন থানা পুলিশ। গতকাল দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, কার্যালয়ের সামনে বিপুলসংখ্যক পুলিশের আনাগোনা। প্রধান ফটকের দুই পাশে সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান করছেন। এদিকে দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় বিএনপির প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেনসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
বিএনপির এক ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ইতিমধ্যে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার এড়িয়ে সতর্কাবস্থানে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দলের হাইকমান্ডের পক্ষ থেকে। সে হিসেবে নেতাকর্মীরা সতর্ক অবস্থানে গেছেন। এছাড়া ওইদিন হাইকোর্টের সামনে যেসব জ্যেষ্ঠ নেতা ছিলেন বিশেষ করে ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, আবদুল্লাহ আল নোমান, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আবদুস সালামসহ অনেকেই আত্মগোপনে গেছেন। পরবর্তী কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার জন্য সবাইকে গ্রেপ্তার এড়িয়ে সতর্ক অবস্থানে থাকতে বলা হয়েছে।
গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আগামী ৫ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে খালেদা জিয়ার জামিনের শুনানি হবে। বিএনপি আশা করে নেত্রী ওইদিন জামিন পাবেন। জামিন না পেলে নেত্রীর মুক্তির দাবিতে নেতাকর্মীরা কর্মসূচি পালন করে যাবে। সরকারকে হুঁশিয়ার করে তিনি আরও বলেন, ওইদিন যদি বেগম জিয়ার জামিন না হয় তাহলে আমরা বুঝতে পারব, সরাসরি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপে এটি হচ্ছে না। আর ওইদিন জামিন না হলে দেশনেত্রীর মুক্তির এক দফা দাবিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল লাগাতার সরকার পতনের আন্দোলনে যাবে।
একই স্থানে গতকাল আরেক অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, চেয়ারপারসনের জামিন না হলে আন্দোলনের জন্য নেতাকর্মীদের চাপ রয়েছে। সময়মতো আন্দোলন হবে। তবে এখনই নয়।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জামালপুরের মাদারগঞ্জে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) পদযাত্রায় হামলা হয়েছে। গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারসহ ১৭ দফা দাবিতে এ কর্মসূচির নেতৃত্ব দেন দলটির উপদেষ্টা মনজুরুল আহসান খান। এ ঘটনায় উপজেলা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন সিপিবির নেতাকর্মীরা। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতারা। এর প্রতিবাদে রাতে রাজধানীর শািন্তনগরে সিপিবির মিছিলে ছাত্রলীগের হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ১০-১২ জন আহত হন।
সিপিবির উপদেষ্টা ও সাবেক সভাপতি কমরেড মনজুরুল আহসান খানসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ করেছে দলটি। সমাবেশ শেষে সেখান থেকে বের করা মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক প্রদিক্ষণ করে পল্টন মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। এছাড়া শান্তিনগরে সিপিবির মিছিলে হামলার প্রতিবাদে গতকাল সন্ধ্যায় মশাল মিছিল ও সমাবেশ করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ছাত্র ইউনিয়ন। ইবি প্রতিনিধি জানিয়েছেন, সমাবেশ থেকে হামলায় জড়িত সরকার সমর্থিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করা হয়।
সিপিবির সমাবেশে দলটির সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, জনসমর্থনহীন এ সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে হামলা-নির্যাতনের পথ বেছে নিয়েছে। পুলিশের উপস্থিতিতে মনজুরুল আহসান খানের মতো একজন নেতার ওপর হামলা সরকারের ফ্যাসিবাদী রূপেরই বহিঃপ্রকাশ। গণআন্দোলনের মাধ্যমেই সব হামলার জবাব দেওয়া হবে। সমাবেশে থেকে হামলা-নির্যাতন-গ্রেপ্তার উপেক্ষা করে ‘দুঃশাসন হঠাও, ব্যবস্থা বদলাও, বিকল্প গড়ো’ সেস্নাগানে পদযাত্রা কর্মসূচি অব্যাহত রাখারও ঘোষণা দেওয়া হয়।