ঢাকা সোমবার, ৬ই মে ২০২৪, ২৪শে বৈশাখ ১৪৩১


সার্চ কমিটির প্রধান হচ্ছেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান


৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ২১:১৬

আপডেট:
৬ মে ২০২৪ ১০:২৪

নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠনের লক্ষ্যে সার্চ কমিটি গঠনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আজ শনিবার প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই কমিটি ঘোষণা হতে পারে। কমিটির প্রধান হিসেবে শোনা যাচ্ছে আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নাম। একাধিক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিতও করেছে।

নিয়ম অনুযায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে থাকবেন প্রধান বিচারপতি মনোনীত হাইকোর্ট বিভাগের আরেকজন বিচারপতি, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান এবং রাষ্ট্রপতি মনোনীত দুই বিশিষ্ট নাগরিক। এ দুই বিশিষ্ট নাগরিকের মধ্যে একজন নারী। তিন সদস্যের উপস্থিতিতে কমিটির সভার কোরাম হবে। আর কমিটির কাজে সাচিবিক সহায়তা দেবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হবে ১৪ ফেব্রæয়ারি। এর আগেই রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ নতুন ইসি গঠন করবেন। ইসি গঠন নিয়ে জাতীয় সংসদে বিল পাস হয়েছে। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এই বিলে স্বাক্ষরও করেছেন। ফলে প্রথমবারের ইসি গঠনে আইন পেয়েছে বাংলাদেশ। নতুন এ আইনের আলোকেই চলতি সপ্তাহে ইসি গঠন প্রক্রিয়াসহ সার্চ কমিটি গঠন হবে।

সার্চ কমিটি সম্পর্কে জানতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামকে মোবাইলে ফোন করা হলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

সার্চ কমিটির (অনুসন্ধান কমিটি) কাজ সম্পর্কে বিলে বলা হয়েছে, এ কমিটি স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার নীতি অনুসরণ করে দায়িত্ব পালন করবে। আইনে বেঁধে দেওয়া যোগ্যতা, অযোগ্যতা অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও সুনাম বিবেচনা করে সিইসি এবং নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করবে। এ অনুসন্ধান কমিটি সিইসি ও কমিশনারদের প্রতি পদের জন্য দুজন করে ব্যক্তির নাম সুপারিশ করবে। কমিটি গঠনের ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে সুপারিশ রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দিতে হবে। সার্চ কমিটি সিইসি এবং নির্বাচন কমিশনার পদে যোগ্যদের অনুসন্ধানের জন্য রাজনৈতিক দল এবং পেশাজীবী সংগঠনের কাছ থেকে নাম আহŸান করতে পারবে।

এ ক্ষেত্রে চলতি সপ্তাহে সার্চ কমিটি গঠন হলে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের কাছে নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারের প্রস্তাবিত নামের তালিকা চাওয়া হতে পারে। সেখান থেকে তালিকা চ‚ড়ান্ত করে কমিটি তা রাষ্ট্রপতির কাছে উপস্থাপন করবে। কমিটির দেওয়া তালিকা থেকে ইসি গঠন করবেন রাষ্ট্রপতি।

সিইসি ও নির্বাচন কমিশনার পদে কাউকে সুপারিশের ক্ষেত্রে তিনটি যোগ্যতা থাকতে হবে- বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে; বয়স হতে হবে অন্তত ৫০ বছর এবং কোনো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, বিচার বিভাগীয়, আধাসরকারি, বেসরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে ন্যূনতম ২০ বছর কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

সিইসি ও কমিশনার পদের জন্য ছয়টি অযোগ্যতার কথা বলা হয়েছে- আদালত অপ্রকৃতিস্থ ঘোষণা করলে; দেউলিয়া হওয়ার পর দায় থেকে অব্যাহতি না পেলে; কোনো বিদেশি রাষ্ট্র্রের নাগরিকত্ব নিলে কিংবা বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা বা স্বীকার করলে; নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে কারাদÐ হলে; ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইব্যুনালস) অ্যাক্ট-১৯৭৩ বা বাংলাদেশ কোলাবরেটরস (স্পেশাল ট্রাইব্যুনালস) অর্ডার ১৯৭২-এর অধীনে কোনো অপরাধের জন্য দÐিত হলে এবং আইনের দ্বারা পদাধিকারীকে অযোগ্য ঘোষণা করছে না, এমন পদ ব্যতীত প্রজাতন্ত্রের কর্মে লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত থাকলে।

সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদে বলা আছে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অনধিক চারজন নির্বাচন কমিশনারকে নিয়ে একটি নির্বাচন কমিশন থাকবে এবং এ বিষয়ে প্রণীত কোনো আইনের বিধানসাপেক্ষে রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে এবং অন্য নির্বাচন কমিশনারকে নিয়োগ দেবেন।

কিন্তু সংবিধানের আলোকে ওই আইন গত ৫০ বছরেও হয়নি। গেল এক দশকে সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান ২০১২ সালে এবং বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ২০১৭ সালে অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করে সার্চ কমিটির মাধ্যমে সর্বশেষ দুই নির্বাচন কমিশন নিয়োগ দিয়েছিলেন। আইন না থাকায় প্রতিবারই ইসি গঠনের সময় শুরু হয় বিতর্ক। এরই মধ্যে অনেক আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে গত বৃহস্পতিবার সংসদে বিল পাস হয়।