নেছারাবাদে ‘আলোক শিখা’ এনজিওর বিরুদ্ধে বিশ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলায় ‘আলোক শিখা’ নামের একটি এনজিওর বিরুদ্ধে প্রায় বিশ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এনজিওর পরিচালক মোঃ দেলোয়ার হোসেন গা-ঢাকা দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন দেড় শতাধিক ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক।
শনিবার (৩ মে) সকালে উপজেলার শর্ষিনা ইউনিয়নের মাগুরা গ্রামে বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা মাঠকর্মী শারমিন আক্তারের বাড়ির সামনে দুই ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
জানা গেছে, দেলোয়ার হোসেন বানারীপাড়া উপজেলার ব্রাহ্মণকাঠি গ্রামের বাসিন্দা। জয়েন্ট স্টক কোম্পানি থেকে সনদ নিয়ে তিনি ২৩টি শাখা খুলে সমিতি পরিচালনা করছিলেন। এর মধ্যে নেছারাবাদ উপজেলায় তিনটি শাখা রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, ওই তিনটি শাখা থেকেই তিনি প্রায় বিশ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
ভুক্তভোগী গৃহবধূ রেহানা পারভীন জানান, তাঁর স্বামী প্রবাসে থাকেন এবং প্রবাস থেকে পাঠানো অর্থ থেকে তিনি ‘আলোক শিখা’ সমিতিতে ১০ লাখ টাকা জমা করেন। এখন দেলোয়ার হোসেন আত্মগোপনে চলে গেছেন এবং মাঠকর্মী শারমিন কোনো সদুত্তর দিচ্ছেন না, বরং দুর্ব্যবহার করছেন।
বিধবা নারী বিলকিস বলেন, “মানুষের বাসায় কাজ করে সঞ্চিত চার লাখ টাকা আমি জমা দিয়েছিলাম ভবিষ্যতের নিরাপত্তার জন্য। এখন সব হারিয়ে পথে বসার উপক্রম।”
হ্যাপী বেগম নামে এক ভুক্তভোগী জানান, তিনি সেলাই মেশিনে কাজ করে ৬ লাখ টাকা জমা রেখেছিলেন। গত এক বছর ধরে টাকা ফেরতের জন্য ঘুরলেও শুধু আশ্বাসই মিলছে।
মাগুরা গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ আলতাফ হোসেন বলেন, “আমার স্ত্রীও ওই সমিতিতে টাকা রেখেছেন। গ্রামের মাঠকর্মীদের মাধ্যমে দেলোয়ার তিনটি শাখা থেকে বিশ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে গা-ঢাকা দিয়েছেন।”
এ বিষয়ে নেছারাবাদ উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মোঃ হাসান রকি জানান, ‘আলোক শিখা’ এনজিওটি সমাজকল্যাণ অধিদপ্তর ও জয়েন্ট স্টক থেকে সনদপ্রাপ্ত হলেও মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (এমআরএ) থেকে কোনো অনুমোদন নেয়নি। ফলে তাদের ঋণ বা সঞ্চয় কার্যক্রম পরিচালনার বৈধতা নেই। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তর তদন্ত করে দেখবে বলে জানান তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ জাহিদুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে, তদন্ত স্বাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।