মাদরাসাসহ সকল শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণের দাবি বিএমজিটিএ'র

মাদরাসাসহ সকল শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মাদরাসা জেনারেল টিচার্স এসোসিয়েশন (বিএমজিটিএ)। সেইসঙ্গে রাজপথে আন্দোলনরত শিক্ষকদের চলমান আন্দোলনের সাথে একাত্মতা পোষণ করেন সংগঠনটির নেত্রীবৃন্দ।
আজ বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলরুমে, 'শিক্ষা ব্যবস্থায় বিরাজমান বৈষম্য, অনিয়ম ও অসংগতি দূরীকরণের লক্ষ্যে মাদরাসাসহ সকল শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণের দাবীতে' আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবী জানানো হয়।
এসময় লিখিত বক্তব্যে সংগঠনটির মহাসচিব শান্ত ইসলাম বলেন, শিক্ষকরা রাজনীতি করেনা। এটা তাদের কাজও না। তবুও বছরের পর বছর তারা রাজনীতির মারপ্যাচে পিষ্ট। সরকার আসে, সরকার যায় কিন্তু শিক্ষকরা অমানবিক কষ্ট, সীমাহীন দুর্ভোগ ও মানবেতর জীবন-যাপন থেকে বের হতে পারেনা। শিক্ষকদের সামাজিক মর্যাদা ও অর্থনৈতিক মুক্তি যেন সোনার হরিণ।
বিএমজিটি সংগঠনটি ২০১৩ সাল থেকে অদ্যাবধি মাদরাসায় কর্মরত বৈষম্যের শিকার জেনারেল শিক্ষকদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে শান্ত ইসলাম প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, আপনি বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিমণ্ডলে মানবতাকামী, পরিচ্ছন্ন ও মুক্তিকামী মানুষ হিসেবে বহুল পরিচিত। মহোদয় আপনি অবগত রয়েছেন যে, স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও স্বাধীনতার সুফল থেকে বঞ্চিত মুক্তিকামী মানুষ। মুক্তিকামী মানুষের স্বপ্নদ্রষ্টা হিসেবে আপনার কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক বেশী। বাংলাদেশ মাদরাসা জেনারেল টিচার্স এসোসিয়েশন এর পক্ষ থেকে আপনি ও আপনার সরকারের নেওয়া সংস্কার উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। মহোদয়, সকল সংস্কারই গুরুত্বপূর্ণ তবে শিক্ষা ক্ষেত্রে বিরাজমান বৈষম্য, অনিয়ম ও অসংগতি দূর করার অন্য শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করা অধিক গুরুত্বপূর্ণ।
নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে শিক্ষা ক্ষেত্রে বিরাজমান বৈষ্যমের অবসান করা অতীব জরুরি জানিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করে মহাসচিব আরও বলেন, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (মাদরাসা) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০১৮ এর ২৩ নভেম্বর ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত সংশোধনীতে স্কুল কলেজ ও মাদরাসায় কর্মরত শিক্ষকদের মধ্যে যেশ কিছু বৈষম্য পরিলক্ষিত হয়। বাংলাদেশ মাদরাসা জেনারেল টিচার্স এসোসিয়েশন এর পক্ষ থেকে আবেদনের প্রেক্ষিতে পুনরায় সংশোধনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও তিন বছর ধরে সংশোধনী কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য যে তা আজও আলোর মুখ দেখেনি।
এসময় প্রধান উপদেষ্টা ও শিক্ষা উপদেষ্টা বরারব বেশ কিছু দাবিদাওয়া তুলে ধরা হয়।
১. মাদরাসা সহ সকল শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ।
২. বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের শতভাগ উৎসব ভাতা প্রদান।
৩. সম্মানজনক বাড়ি ভাড়া প্রদান।
৪. চিকিৎসা ভাতা প্রদান।
৫. মহার্ঘ ভাতা প্রদান।
৬. মাদ্রাসায় কর্মরত বৈষম্যের শিকার সহকারি শিক্ষকদের ১৬ বছরে অষ্টম গ্রেড প্রদান।
৭. মাদরাসায় কর্মরত বৈষম্যের শিকার সকল প্রভাষকদের ১৬ বছরে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি।
৮. এবতেদায়ী শিক্ষকদের ১৩তম গ্রেড প্রদান।
৯. অবসরের তিন মাসের মধ্যে কল্যাণ ও অবসরের ভাতা প্রদান।
১০. ইএফটি-তে বেতন ভাতা প্রদান।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আমজাদ হোসেন, শাহ মোহাম্মদ কবির ও তাজুল ইসলাম। সহ-সভাপতি খন্দকার বিল্লাল আহমেদ পলাশ, মো. আবু বকর সিদ্দিক, আব্দুল লতিফ ও মোহাম্মদ জসিম উদ্দীন। সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মো. মনিরুজ্জামান। সিনিয়র সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কামরুজ্জামানসহ সংগঠনের নেত্রীবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলন শেষে সংগঠনের নেত্রীবৃন্দ প্রেসক্লাবের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষকদের সাথে একাত্মতা পোষণ করেন।
বাংলাদেশ মাদরাসা জেনারেল টিচার্স এসোসিয়েশন, বিএমজিটিএ