ঢাকা বৃহঃস্পতিবার, ২৯শে মে ২০২৫, ১৫ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২


আজ থেকে পূর্ণ দিবস কর্মবিরতিতে প্রাথমিকের শিক্ষকরা


২৬ মে ২০২৫ ১০:৫৩

আপডেট:
২৬ মে ২০২৫ ১১:৫২

টাঙ্গাইলের সখীপুরে কালিদাস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের কর্মবিরতি চলছে

দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা আজ সোমবার (২৬ মে) থেকে টানা পূর্ণ দিবস কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন। এন্ট্রি পদে ১১তম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ, ১০ বছর ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড এবং প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ দ্রুত পদোন্নতির দাবিতে কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন তারা।

আকস্মিক পূর্ণদিবস কর্মবিরতির কারণে সারাদেশে ১ কোটিরও বেশি শিশু শিক্ষার্থী ক্লাস রুমের বাইরে। এতে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

'সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ'-এর ডাকে আজ থেকে শুরু হওয়া এ আন্দোলন অনির্দিষ্টকালের জন্য চলবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষক নেতারা। তাদের মূল দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রাথমিক ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার মানোন্নয়নে গঠিত পরামর্শক কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী সহকারী শিক্ষক পদকে শুরুর পদ হিসেবে ১১ তম গ্রেডসহ তিনটি দাবি।

সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দীন জানান, সরকারের পক্ষ থেকে তাদের দাবির বিষয়ে কোনো গুরুত্ব না দেওয়ায় এবং আলোচনার উদ্যোগ না নেওয়ায় তারা বাধ্য হয়ে এই কর্মসূচিতে গেছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, তারা শিক্ষার্থীদের শিখন কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত করতে চাননি।

প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিসংখ্যান ২০২৩ অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ১ কোটি ৯৭ লাখ ১৩ হাজার ৬৮৫ জন প্রাথমিক শিক্ষার্থী রয়েছে, যার মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ১ কোটি ৯ লাখ ৮৫ হাজার ৮১৫ জন। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষাপঞ্জি অনুযায়ী আগামী ৩ জুন ঈদুল আজহার ছুটি শুরু হবে। এর আগ পর্যন্ত ছয় কার্যদিবস শিক্ষা কার্যক্রম চলমান থাকার কথা থাকলেও শিক্ষকদের আন্দোলনের কারণে তা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

অভিভাবকরা এই পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে কিন্ডারগার্টেন বা বেসরকারি বিদ্যালয়ের তুলনায় ছুটি বেশি থাকায় শিক্ষার্থীরা এমনিতেই পিছিয়ে আছে। সামনে ঈদুল আজহার ছুটি এবং তার আগে শিক্ষকদের আন্দোলনের কারণে ক্লাস বন্ধ থাকলে শিখন ঘাটতি আরও বাড়বে।

শিক্ষক নেতারা বলছেন, বর্তমানে সহকারী শিক্ষকরা ১৩তম গ্রেডে বেতন পান, যার মূল বেতন ১১ হাজার টাকা। তাদের দাবি, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতনের তুলনায় বাংলাদেশের শিক্ষকদের বেতন সর্বনিম্ন।

তবে শিক্ষাসংশ্লিষ্টরা শিক্ষকদের দাবিকে যৌক্তিক মনে করলেও আন্দোলনের সময় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষাবিদরা। তারা বলেন, শিক্ষকদের দাবি ন্যায্য হলেও করোনাকালীন শিখন ঘাটতি এবং সাম্প্রতিক বিভিন্ন ছুটির কারণে শিক্ষার্থীদের প্রতি বাড়তি মনোযোগ প্রয়োজন ছিল। তার মতে, এ মুহূর্তে নির্বাচিত সরকার আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করা উচিত ছিল।