জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিচ্যুত ৯৮৮ কর্মকর্তা-কর্মচারী ফিরছেন স্বপদে

উচ্চ আদালতের নির্দেশে চাকরিচ্যুত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৮৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চাকরিতে ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার (৩০ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় তাদের ১ জুন (রোববার) থেকে নিজ নিজ পদে ফেরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম আমানুল্লাহ শনিবার (৩১ মে) দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
অধ্যাপক এ এস এম আমানুল্লাহ বলেন, ৯৮৮ জনকেই চাকরিতে ফেরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তারা নিজ নিজ পদে ফিরবেন। ১ জুন থেকে তারা কাজে যোগ দেবেন বলে জানান তিনি।
এর আগে ৯৮৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীর জ্যেষ্ঠতার সুযোগ-সুবিধাসহ চাকরি পুনর্বহালের নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। গত মঙ্গলবার (২৭ মে) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ রায় এ ঘোষণা করেন।
এ মামলায় আগেও জাতীয় বিশ্বিবদ্যালয়ের বিপক্ষে রায় গেলে রিভিউ থেকে আপিল শুনানি হয়। ২০১১ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৮৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে উচ্চ আদালতের নির্দেশে চাকরিচ্যুত করা হয়। এরপর অনেকে অমানবিক কষ্ট ও বিনা চিকিৎসায় মারা যান বলে অভিযোগ রয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর চাকরিচ্যুত এসব কর্মকর্তা-কর্মচারী চাকরি ফিরে পাওয়ার স্বপ্ন দেখছিলেন। তাদের ফিরিয়ে আনতে পাশে দাঁড়ায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও।
জানা গেছে, গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর চাকরিচ্যুত এসব কর্মকর্তা-কর্মচারী চাকরি ফিরে পাওয়ার দাবি জানান। এ নিয়ে তারা আন্দোলনেও নামেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৯ সেপ্টেম্বর সিন্ডিকেটের সভায় ২০০৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রতিহিংসার শিকার হয়ে চাকুরিচ্যুত ৯৮৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরিতে পুনর্বহালের বিষয়ে রিভিউ পিটিশনের সিদ্ধান্ত নেয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিবিধি যথাযথ অনুসরণ করে ২০০৩ ও ২০০৪ সালে বিভিন্ন স্মারকে এসব কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। দীর্ঘ প্রায় ৯ বছর পর ২০১১ সালে কিছু অসাধু কর্মকতা ও কর্মচারী ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ভিত্তিহীন অসত্য তথ্য উপস্থাপন করে আদালতকে বিভ্রান্ত করলে তাদের নিয়োগ অবৈধ ঘোষণা করা হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের সভায় ২০১১ সালে তাদের চাকরিচ্যুত করা হয়, যা ছিল চাকরিবিধি বহির্ভূত-অনিয়মতান্ত্রিক ও অনৈতিক।
এর আগে এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীর নিয়োগ অবৈধ ঘোষণার আবেদন জানিয়ে সাবেক এমপি ফজলে রাব্বী মিয়া হাইকোর্টে ২০০৪ সালের ৩১ আগস্ট রিট করেন। সে সময় দীর্ঘ শুনানির পর ২০০৬ সালের ২২ আগস্ট হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ রিটটি খারিজ করে দেন। পরে গাজীপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আকম মোজাম্মেল হক (ওই রায়ের বিপরীতে) ২০১০ সালের ১৫ ডিসেম্বর রিভিউ মামলা দায়ের করলে আদালত কর্মচারীদের চাকরি থেকে অপসারণের রায় দেন।