নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ও ফ্যাসিস্ট শিক্ষকদের বিচারের পর জকসু নির্বাচন চায় জবি ছাত্রদল

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ, ফ্যাসিস্ট শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিচারের পর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (জকসু) গঠনের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয়বাদী ছাত্রদল, জবি শাখা।
সোমবার (২৫ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের রফিক ভবনের সামনে ডাকা এক মানববন্ধনে এ দাবি জানান তারা।
মানববন্ধনে তারা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে আমরা আপস করি না। আমরা জকসুর বিপক্ষে নই। তবে কিছু ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠন যারা নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত তাদের নিয়ে আমরা এ জকসু চাই না। বর্তমানে শিক্ষার্থীদের দাবি আবাসন ভাতাকে (সম্পূরক বৃত্তি) দমিয়ে রাখতে প্রশাসনকে চাপ দিয়ে জকসুর জন্য আন্দোলন করে যাচ্ছে কিছু সংগঠন। প্রশাসনকে চাপে ফেলে তাদেরকে অপমান অপদস্ত করছে। প্রশাসনকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রশাসনকে তালাবন্ধ করে রাখছে। তাদের এ অসৎ উদ্দেশ্যকে আমরা সফল হতে দিতে চাই না।’
সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আবাসন ভাতার দাবিতে যমুনাতে রক্ত দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আবাসন ভাতা নিয়ে কাজ করছে। তাদেরকে চাপ দিয়ে অবরুদ্ধ করার চেষ্টা চলছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বড় ভাইয়েরা জকসু পাওয়ার জন্য আন্দোলন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার করেনি। সাধারণ শিক্ষার্থীর জন্য প্রতিষ্ঠা করেছেন। জকসুর নাম করে আবাসন ভাতাকে দমিয়ে রাখা হচ্ছে। আমরা জকসু চাই। তবে আওয়ামী ও ফ্যাসিস্টদের বিচারের পর জকসু প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদি হাসান হিমেল বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় যখন কলেজ ছিল, ছাত্রদলের দাবির ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। বেগম খালেদ জিয়ার সময় এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হওয়ায় বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার এ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো উন্নয়ন করেননি। বিগত ফ্যাসিস্ট ভিসি ছাত্রলীগের লোকদের নিয়োগ দিয়েছে। আমরা সকল শিক্ষার্থী ও ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনকে নিয়ে জবি ঐক্য গড়ে তুলেছিলাম। যমুনাতে গিয়ে সম্পূরক ভাতার জন্য আন্দোলন করেছিলাম। কিন্তু কিছু ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠন প্রশাসনকে দমিয়ে রাখতে জকসুর জন্য আন্দোলন করে যাচ্ছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ কমিটির লিস্টের ছেলেপেলে এখনো ক্যাম্পাসে অবস্থান করছে, ভোটার হবে ছাত্রলীগ, প্রার্থী হবে ছাত্রলীগ। ফ্যাসিস্ট মিজানুর রহমান ও সাদেকা হালিমের সময় যারা অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন তাদের বিচার করতে হবে। এদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা জকসু চাই না। আমরা জকসুর বিপক্ষে নই। তবে এই জকসুতে ফ্যাসিস্ট আমালের কেউ থাকতে পারবে না।’
বর্তমানে জকসু আন্দোলন নিয়ে আহ্বায়ক বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থীরা যারা মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্তের অনেক কষ্ট করে থাকে হয়। তাদের আবাসন ভাতাকে দমিয়ে রাখতে, কিছু ছাত্রসংগঠন ও শিক্ষকেদের নীলনকশায় জকসু আন্দোলন সামনে এসেছে। আমাদের দাবি মানা না হলে আমরা কঠোর থেকে কঠোর আন্দোলন দিতে বাধ্য হব।’
প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়ের জকসু ও সম্পূরক ভাতাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীরা। দাবি আদায়ে তারা ’ব্রেক অব সাইলেন্স’ কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভাবনে তালাবন্ধ করেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ ও প্রক্টরসহ কর্মকর্তা কর্মচারীরা প্রায় ১০ ঘণ্টা তালাবদ্ধ ছিলেন।