ঢাকা রবিবার, ৪ঠা মে ২০২৫, ২২শে বৈশাখ ১৪৩২


এই প্রার্থীদের ভোট দেখলে চোখ কপালে উঠবে আপনার


৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ ২৩:৫৬

আপডেট:
৪ মে ২০২৫ ২২:৩৭

এই প্রার্থীদের ভোট দেখলে চোখ কপালে উঠবে আপনার

ভোটের লড়াইয়ে একপক্ষ জিতবে, আরেকপক্ষ হারবে- এটাই চিরন্তন। এই চিরন্তন সত্যের ব্যত্যয় ঘটে না কখনো। সে সুষ্ঠু নির্বাচন হোক কিংবা, নানা অভিযোগে বিদ্ধ নির্বাচন হোক- এক পক্ষ জিতবে, আরেক পক্ষ হারবেই। এই জয়-পরাজয় নির্ধারণ করতে করতেই সৃষ্টির আদি থেকে এগিয়ে চলছে পৃথিবী। সামনে আরও এগিয়ে যাবে।

সময়ের পরিক্রমায় আরও একটি সাধারণ নির্বাচন পার হয়ে গেলো স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে। নানান জনের লেখায় নানাভাবে লেখা হবে এই একাদশতম নির্বাচনের ইতিহাস। কিন্তু যে বিষয়টা স্বর্ণক্ষরে লেখা থাকবে, সেটা হলো নির্বাচনের ফলাফল। সাইড স্টোরির মত হয়তো প্রতিপক্ষ কিংবা সমালোচকরা বলবেন, এই নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ। ভোট দিতে দেয়া হয়নি, আগে থেকে সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভর্তি করে ফেলা হয়েছে।


কিন্তু ২০০৬ ফুটবল বিশ্বকাপের ফাইনালে জিদানের হেডবাটের ঘটনার মতই একে ইতিহাসের পাতায় এক কোনে কিছুটা হয়তো ঠাঁই দেয়া হবে। কিন্তু ইতালির বিশ্বকাপ জয়ের গৌরবের মত তো বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের মহা বিজয়ের গৌরব হয়ে থাকবে চিরন্তন, চিরঞ্জীব। একে কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। অস্বীকারও করতে পারবে না।

রাজনৈতিক খেলায় অনেক কিছু হয়, হচ্ছে কিংবা হবে। কিন্তু ইতিহাস তো লেখা হয়ে গেছে। সেই ইতিহাসের অংশীদার হলেন যে ২৯৯ জন (১টি আসনে নির্বাচন পরে অনুষ্ঠিত হবে) বিজয়ী প্রার্থী, তাদের মধ্যেও ইতিহাস গড়তে দেখা গেছে বেশ কিছু প্রার্থীকে।

ভোট প্রাপ্তির দিক থেকে অতীতের যে কোনো রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছেন এবারের নির্বাচনে বেশ কয়েকজন প্রার্থী। স্বাভাবিকভাবেই ভোট প্রাপ্তির দিক থেকে ইতিহাস গড়া এসব প্রার্থী বিজয়ী দল আওয়ামীলীগের। কিন্তু তাদের বিজয় দেখে খোদ আওয়ামীলীগ সভানেত্রী এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কিংবা সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরেরও ঈর্ষা হতে পারে।

ঢাকা-১৯ (তথা সাভার এলাকা) আসনের আওয়ামীলীগ থেকে বিজয়ী প্রার্থী এনামুর রহমান যে পরিমাণ ভোট পেয়েছেন, তা অতীতের যে কোনো রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। এই আসনে ছিল ৩০০ আসনের মধ্যে রেকর্ড পরিমাণ ভোটরা সংখ্যা। যা সর্বোচ্চ। ৭ লাখ ৪৭ হাজার ৩০১ জন।

এনামুর রহমান একাই পেয়েছেন এই আসনে প্রায় ৫ লাখ ভোট। অর্থ্যাৎ, ৪ লাখ ৮৮ হাজার ৯৮১টি ভোট পেয়েছেন তিনি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির দেওয়ান মো. সালাউদ্দিন পেয়েছেন ৬৯,৪১০ ভোট। অথ্যাৎ, ৪১৯৫৭১ ভোটের বিশাল ব্যবধানে জয়লাভ করেছেন এনামুর রহমান। এত বড় ব্যবধানে জয়ও বাংলাদেশের ইতিহাসে রেকর্ড।

শুধু এনামুর রহমানই নন, ৪ লাখেরও বেশি ভোট পেয়ে জয়ের ঘটনা ঘটেছে আরও কয়েকটি। গাজীপুর ২ আসন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের বিজয়ী প্রার্থী জাহিদ আহসান রাসেল পেয়েছেন ৪ লাখ ১৪ হাজার ৩৭৩ ভোট। কুমিল্লা ১০ আসনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী ছিলেন বর্তমান সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি পেয়েছেন ৪ লাখ ৫ হাজার ২৯৯ ভোট।

গাজীপুর-১ আসনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের আ ক ম মোজাম্মেল হক পেয়েছেন ৪ লাখ ১ হাজার ৫৩৬ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির চৌধুরী তানভীর আহমেদ সিদ্দিকী পেয়েছেন ৯২ হাজার ৩৭০ ভোট।

এছাড়া ৩ লাখ থেকে ৪ লাখের কাছাকাছি ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন অনেক প্রার্থী। এত বেশি ভোট পাওয়ার রেকর্ড অতীতে কোনো নির্বাচনে কোনো প্রার্থী পাননি।

আবার তুমুল ভোট বিপ্লবের সময় এক লাখেরও কম ভোট পেয়ে নির্বাচিত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। সিলেট-২ আসনে গণফোরাম থেকে বিজয়ী মোকাব্বির খান মাত্র ৬৯ হাজার ৪২০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। এবারের নির্বাচনে এটাই সবচেয়ে কম ভোট পেয়ে নির্বাচিত হওয়ার ঘটনা।

এছাড়া মৌলভীবাজার-২ আসনে দুই প্রার্থী বিকল্পধারা এবং ঐক্যজোট প্রার্থী, গণফোরামের সুলতান মোহাম্মদ মনসুরের মধ্যে হয়েছে সবচেয়ে বেশি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। এই আসনে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ৭৯৭৪২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রার্থী এমএম শাহীন পেয়েছেন ৭৭১৭০ ভোট। মাত্র আড়াই হাজার ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হন সুলতান মোহাম্মদ মনসুর।

এক নজরে দেখে নিন সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়ে নির্বাচিত প্রার্থীদের তালিকা

আসন

ভোটার সংখ্যা

বিজয়ী

দল

প্রাপ্ত ভোট

ঢাকা-১৯

৭,৪৭,৩০১

এনামুর রহমান

আওয়ামী লীগ

৪,৮৮,৯৮১

গাজীপুর-২

৭,৪৫,৮৪১

জাহিদ আহসান রাসেল

আওয়ামী লীগ

৪,১৪,৩৭৩

কুমিল্লা-১০

৫,১৬,৩৯৪

আ হ ম মুস্তফা কামাল

আওয়ামী লীগ

৪,০৫,২৯৯

গাজীপুর-১

৬,৬৪,৫৫৪

আ ক ম মোজাম্মেল হক

আওয়ামী লীগ

৪,০১,৫৩৬

রাজবাড়ী-২

৪,৬২,১৩৮

জিল্লুল হাকিম

আওয়ামী লীগ

৩,৯৮,৯৭৪

নোয়াখালী-৪

৫,৪৪,৩২৯

একরামুল করিম চৌধুরী

আওয়ামী লীগ

৩,৯৬,০২২

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩

৫,১৫,০১১

উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী

আওয়ামী লীগ

৩,৯৩,৫২৩

নারায়ণগঞ্জ-৪

৬,৫১,১২৩

শামীম ওসমান

আওয়ামী লীগ

৩,৯৩,১৩৬

জামালপুর-৩

৪,২৪,৯৫০

মির্জা আজম

আওয়ামী লীগ

৩,৮৫,১১৩

জামালপুর-৫

৪,৬৯,৮১৮

মোজাফফর হোসেন

আওয়ামী লীগ

৩,৭৩,৯০৯

যশোর-৩

৫,২২,৫৬১

কাজী নাবিল আহমেদ

আওয়ামী লীগ

৩,৬১,৩৩৩

নাটোর-২

৩,৪৩,৯৬৬

শফিকুল ইসলাম শিমুল

আওয়ামী লীগ

৩,৬০,৫০৩

গাজীপুর-৩

৪,৩৬,৬৪৩

ইকবাল হোসেন সবুজ

আওয়ামী লীগ

৩,৪৩,৩২০

সিরাজগঞ্জ-৬

৪,০১,১৫৫

হাসিবুর রহমান স্বপন

আওয়ামী লীগ

৩,৩৫,৭৫৯

বগুড়া-৫

৪,৭৫,৫৪৭

হাবিবর রহমান

আওয়ামী লীগ

৩,৩১,৫৪৬

সাতক্ষীরা-১

৪,২৩,০৩২

মুস্তফা লুৎফুল্লাহ

ওয়ার্কার্স পার্টি

৩,৩১,৫৪১

ঝিনাইদহ-২

৪,২৩,৫২৩

তাহজীব আলম সিদ্দিকী

আওয়ামী লীগ

৩,২৫,৮৮৬

যশোর-২

৪,০৫,৭৩৩

নাসির উদ্দিন

আওয়ামী লীগ

৩,২৫,৭৯৩

চুয়াডাঙা-১

৪,৩৭,৭৭১

সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন

আওয়ামী লীগ

৩,২৫,২৩৪

সিরাজগঞ্জ-১

৩,৪৫,৬৭৬

মোহাম্মদ নাসিম

আওয়ামী লীগ

৩,২৪,৪২৪

পাবনা-৫

৪,৩৫,৮৮৫

গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স

আওয়ামী লীগ

৩,২১,৪৩৮

বরগুনা-১

৪,১৪,৩৮২

ধীরেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ

আওয়ামী লীগ

৩,১৭,৬২২

মুন্সীগঞ্জ-৩

৪,১৬,৫৪১

মৃণাল কান্তি দাস

আওয়ামী লীগ

৩,১৩,৩৫৮

মাদারীপুর-২

৩,৪৭,১৬০

শাহজাহান খান

আওয়ামী লীগ

৩,১১,৭৪০

হবিগঞ্জ-৪

৪,২৭,৫২৫

মাহবুব আলী

আওয়ামী লীগ

৩,০৯,৬৫৩

গাইবান্ধা-৪

৩,৮৬,২৪৬

মনোয়ার হোসেন চোধুরী

আওয়ামী লীগ

৩,০৮,০৬০

চাঁদপুর-৩

৪,৩০,২৫৭

দীপু মনি

আওয়ামী লীগ

৩,০৬,৮৯৫

ফরিদপুর-১

৪,২২,৬৮৫

মনজুর হোসেন

আওয়ামী লীগ

৩,০৬,৮৯১

সাতক্ষীরা-৩

৩,৮৭,২৯৩

আ ফ ম রুহুল হক

আওয়ামী লীগ

৩,০৪,৩৩৬

ঢাকা-১

৪,৪০,৪০৭

সালমান এফ রহমান

আওয়ামী লীগ

৩,০৩,৯৯৩

সিরাজগঞ্জ-৪

৩,৯১,১১৪

তানভীর ইমাম

আওয়ামী লীগ

৩,০৩,৬৬৬

গোপালগঞ্জ-১

৩,২১,১৩০

ফারুক খান

আওয়ামী লীগ

৩,০৩,১৬২

ঢাকা-১৮

৫,৫৫,৭১৩

সাহারা খাতুন

আওয়ামী লীগ

৩,০২,০০৬

পাবনা-৩

৪,০২,৭৭৪

মকবুল হোসেন

আওয়ামী লীগ

৩,০১,৯৬৮

চাঁদপুর-২

৩,৯৩,০৭৪

নুরুল আমিন

আওয়ামী লীগ

৩,০১,০৫০

শেরপুর-২

৩,৪৯,১৩৬

মতিয়া চৌধুরী

আওয়ামী লীগ

৩,০০,৪৪২

কিশোরগঞ্জ-২

৪,১৭,২৬৫

নূর মোহাম্মদ

আওয়ামী লীগ

২,৯৯,২৪৩

চুয়াডাঙা-২

৪,১৪,৯৮৬

আলী আজগার

আওয়ামী লীগ

২,৯৯,১৬০

ভোলা-৪

৩,৬৮,৫৫৩

আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব

আওয়ামী লীগ

২,৯৯,১৫০

সিলেট-১

৫,৪৩,৫৩০

এ কে আবদুল মোমেন

আওয়ামী লীগ

২,৯৮,৬৯৬

চাঁদপুর-৫

৪,০৮,৪২৮

রফিকুল ইসলাম

আওয়ামী লীগ

২,৯৮,১০৪

সিরাজগঞ্জ-৩

৩,৬৭,৫২৯

আবদুল আজিজ

আওয়ামী লীগ

২,৯৭,৬০০ 

কুষ্টিয়া-৩

৩,৭২,৮০৫

মাহবুবুল আলম হানিফ

আওয়ামী লীগ

২,৯৬,৫৯২

সিরাজগঞ্জ-২

৩,৫০,৮৯৬

হাবিবে মিল্লাত

আওয়ামী লীগ

২,৯৪,৮০৫

 

 

সবচেয়ে কম ভোট পেয়ে জয়ী প্রার্থী

 

আসন

ভোটার সংখ্যা

বিজয়ী

দল

প্রাপ্ত ভোট

সিলেট-২

২,৮৬,৩৮০

মোকাব্বির খান

গণফোরাম

৬৯,৪২০

মৌলভীবাজার-২

২,৪১,১৬১

সুলতান মোহাম্মদ মনসুর

গণফোরাম

৭৯,৭৪২

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২

৩,৩৫,৭৪৬

উকিল আবদুস সাত্তার

বিএনপি

৮২,৭২৩

ঢাকা-৬

২,৬৯,২৭৬

কাজী ফিরোজ রশীদ

জাতীয় পার্টি

৯৩,৫৫২

নরসিংদী-৩

২,২৪,৫৩২

জহিরুল হক ভূঁইয়া মোহন

আওয়ামী

৯৪,০৩৫