ঢাকা রবিবার, ৪ঠা মে ২০২৫, ২২শে বৈশাখ ১৪৩২


৪ জানুয়ারি মুক্তিযোদ্ধা সংগঠন ছাত্রলীগের একাত্তর


৩ জানুয়ারী ২০১৯ ১১:৫৭

আপডেট:
৪ মে ২০২৫ ২২:২৭

৪ জানুয়ারি মুক্তিযোদ্ধা সংগঠন ছাত্রলীগের একাত্তর

চার জানুয়ারি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী । এ উপলক্ষ্যে ৪ জানুয়ারি সকালে দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে কর্মসূচি শুরু হবে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও বাঙালির স্বাধিকার অর্জনের লক্ষ্যে মূল দল আওয়ামী লীগের জন্মের এক বছর আগেই প্রতিষ্ঠা লাভ করে এই ছাত্র সংগঠন। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলে আনুষ্ঠানিকভাবে এর যাত্রা শুরু হয়।

৭০ বছর ধরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ছাত্রলীগের ইতিহাস। ভাষা আন্দোলন, গণঅভ্যুত্থান, মুক্তিযুদ্ধসহ সব গণতান্ত্রিক সংগ্রাম-আন্দোলনের সঙ্গে ছাত্রলীগের সম্পৃক্ততা আছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল সংগ্রামে ছাত্রলীগ নেতৃত্ব দিয়েছে।

ছাত্রলীগের ৭১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বর্ণাঢ্যভাবে পালন করতে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সংসদের পক্ষ থেকে ৪ দিনব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এর আগে সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কর্মসূচি জানানো হয়েছে।

মো. রেজানুল হক চৌধুরী শোভনকে সভাপতি ও গোলাম রাব্বানীকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়ে দেশের ঐতিহ্যবাহী ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়ে ৩১ জুলাই মঙ্গলবার।

১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলের অ্যাসেম্বলি হলে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে এর নাম ছিল পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন অধিকার সংক্রান্ত আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, বাংলা ভাষা আন্দোলন, শিক্ষার অধিকার, বাঙালির স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা, গণঅভ্যুত্থান, স্বাধীনতা ও স্বাধিকার আন্দোলন। প্রতিষ্ঠাকালীন অহ্বায়কের ভূমিকা পালন করেন নাঈমউদ্দিন আহমেদ এবং পরবর্তীতে সাংগঠনিকভাবে এর সভাপতি মনোনিত হন দবিরুল ইসলাম। ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন খালেক নেওয়াজ খান।

রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি ও গোলাম রাব্বানী সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্বরত আছেন, ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই ছাত্রলীগের জাতীয় সম্মেলনে তারা সংগঠনটির নেতৃত্বে আসেন।

নামকরণ
অবিভক্ত পাকিস্তানের সর্বপ্রথম ছাত্র সংগঠন এটি। পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ নামে যাত্রা শুরু এই সংগঠনটির। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এর নাম হয় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। ১৯৪৯ সালের ২৩জুন আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠিত হয়। পরবর্তীতে দলে সাম্প্রদায়িক বিতর্ক এড়িয়ে চলতে ১৯৫৫ সালে দলের নাম থেকে মুসলিম শব্দটি বাদ দিয়ে নামকরণ করা হয় পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ। সাম্প্রদায়িক অভিযোগ থেকে রক্ষা পেতে একই সাথে ছাত্রলীগের নামেও পরিবর্তন আসে, ছাত্রলীগের নাম হয় ‘পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ’।

স্বাধীনতা যুদ্ধে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে মুজিব বাহিনী গঠিত হয়। মুক্তি বাহিনী, মুজিব বাহিনীসহ বিভিন্ন নামে মানুষ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। স্বাধীনতার পর দলের নামেও পরিবর্তন আসে । ছাত্র লীগের নাম হয় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।

বাংলাদেশের ছাত্রসমাজের এই সংগঠনের নাম “বাংলাদেশ ছাত্রলীগ” ও ইংরেজিতে “Bangladesh Students League” সংক্ষেপে বাংলায় ছাত্রলীগ নামে ও ইংরেজিতে “B.S.L.” নামে অভিহিত করা হয়। এর জাতীয় ভিক্তিতে সর্বোচ্চ কমিটি কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ সংক্ষেপে নির্বাহী সংসদ নামে অভিহিত হয়। সংগঠনের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক ফোরামের নাম কেন্দ্রীয় কমিটি (পূর্বতন জাতীয় পরিষদ)।

ঐতিহাসিক ভূমিকা
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬২ এর শিক্ষা কমিশন আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান এবং এগারো দফা আন্দোলন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় স্বাধীকার আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধের উদ্দেশ্যে ছাত্রলীগ মুজিব বাহিনী গঠন করে, যুদ্ধে অংশগ্রহন করে এবং বাংলাদেশ বিজয় লাভে ভূমিকা পালন করে।