এমন আত্নহত্যা ও অভিশপ্ত দাম্পত্য জীবনের চেয়ে ডিভোর্স উত্তম

এমন আত্নহত্যা ও অভিশপ্ত দাম্পত্য জীবনের চেয়ে ডিভোর্স উত্তম/সমাজের চেয়ে জীবন অনেক বড়
চট্টগ্রামের তরুন চিকিৎসক আকাশ আত্নহত্যা করেছে।তার স্ত্রী মিতু গ্রেফতার হয়েছে।সোশাল মিডিয়া ও গনমাধ্যমে তোলপাড়।আত্নহত্যার আগে আকাশ তার রুপবতী স্ত্রী মিতুর পরকীয়া প্রেমের কারন ও তার প্রতি নিজের গভীর ভালোবাসাকে দায়ী করে স্টেটাস দিয়েছে।সেখানে তার সাথে ছাড়াও মিতুর প্রেমিকের সাথে অন্তরঙ্গ ছবি পোস্ট করে দিয়েছে!এছাড়াও মিতুর পরকীয়া স্বীকার করার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
একজন চিকিৎসক তৈরিতে রাষ্ট্রের অনেক অর্থ ব্যয় হয়।মা বাবার সাথে নিজেরও স্বপ্ন থাকে।আকাশের মতোন মেধাবি এক চিকিৎসকের কাছে আত্নহত্যা কাপুরোষিত ঘটনাই নয়,অপরাধ।সে নিজের পেশা ও জীবনের চেয়ে মিতুকেই বড় করে দেখেছে জীবনে?নাকি মানসিক অবসাদ তাকে ক্রমশ আত্নহত্যার দিকে নিয়ে গেছে?অাকাশ লিখেছে,বিয়ের আগেই মিতুর একাধিক প্রেমের খবর জানলেও বিয়ে ভাঙ্গেনি সমাজের ভয়ে!আবার শবে কদরের রাতে মিতু ক্ষমা চাইলেও নিজেকে পাল্টায়নি!
আকাশ নিজে আত্নহত্যা করলেও মিতু যাতে সমাজের তীর্যক নিন্দার দন্ডভোগ করতে পারে তার জন্য বিস্তর কাহিনী লিখে গেছে।
ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে মিতু স্বীকার করেছে আকাশের সাথে সম্পর্ক রেখেও মাহবুব নামের তার এক ব্যাচমেট ও অন্য আরেকজনের সাথে হোটেলে কাটিয়েছে।এই ভিডিওতে মিতুকে আতংকগ্রস্হ ও নির্যাতিত মনে হয়েছে!
আইন কি বলছে জানিনা।আইনের চোখে মিতুর কি হবে তাও নিশ্চিত নই।তবে সমাজ মিতুর জীবন দুর্বিসহ করে দেবে এটা নিশ্চিত।
আকাশের আত্নহত্যা যেমন কোন যুক্তিতেই মানা যায়না তেমনি মিতুর আকাশের সাথে সম্পর্ক থাকার পর অন্যের সাথে গোপন প্রনয় গ্রহনযোগ্য নয়।যে সম্পর্কে প্রেম,আকর্ষন,বিশ্বাস ও সমঝোতা নেই সেটি প্রানহীন মৃত সম্পর্ক।এ সম্পর্ক দুজনের বাঁচিয়ে রেখে অশান্তির জীবন বহন করা ছিলো যুক্তিহীন অর্থহীন!
আমাদের সমাজে অনেকেই আছেন রাস্তায় স্বামী বা স্ত্রীর বিরুদ্ধে বলে বেড়ান।ঘরে অসূখী অশান্তির জীবনযাপন করেন আর সমাজে রোমান্টিক নাটকের দৃশ্যকে হার মানানো চলাফেরা বা ফটোসেশন করেন।এসব ভন্ডামির কোন মানে হয়না।আবার কেউ কেউ আছেন বারবার বিয়ের পোশাক পড়ে পাচ ছটি বিয়ে করে নির্লজ্জ ভাড়ে পরিনত হয়।এরা মানসিক বিকারগ্রস্হ।চিকিৎসকের কাছে যায়না।
আকাশ ও মিতু দুজনই উচ্ছশিক্ষিত ও সচ্ছল পরিবারের সন্তান।তাদের বিয়েটা ভুল হতেই পারে।সেখানে সমঝোতা আস্হার সংকট থাকলে,অসূখী থাকলে তারা ডিভোর্সে যেতে পারতেন।যারযার মতোন নতুন জীবন শুরু করতে পারতেন।কিন্তু যে পরিনতি ডেকে এনেছেন দুজন এতে জীবন ও ইজ্জত দুটিই গেলো।এমনকি যাদের সাথে মিতু হোটেলে সময় কাটিয়েছেন তাদেরও শান্তি নির্বাসনে!
আমাদের সমাজের এই যে যেনতেন জোড়াতালির অসম্মানের সংসার বাচিয়ে কেউ কেউ তৃপ্তির ঢেকুর তুলেন, পরিনতি যখন বিয়োগান্তক বা বিপদজনক হয় তখন সব শেষ হয়ে যায়।থাকে শুধু ব্যর্থতা আর সীমাহীন ভুল।আকাশ মরিয়াও প্রমান করেছে জীবন তার ষোলো আনাই মিছে আর মিতু বাঁচিয়া সমাজের সরস মন্তব্য ও দন্ড ভোগ করে জানবে জীবন তার ভুলে ভরা।ডিভোর্স বা বিচ্ছেদ না করা দুজনের জীবনের বড় ভুল।আত্নহত্যা,হত্যা,এমনকি অভিশপ্ত দাম্পত্য জীবনের চেয়েও ডিভোর্স অনেক উত্তম।মানুষের জীবন একটাই,তাও ছোট্ট।আর বেচে থাকার মধ্যেই জীবন সুন্দর।
লেখক ও কলামিস্টঃ পীর হাবিব ( এসবুক থেকে নেওয়া)