ডাকসু নির্বাচন নিয়ে উচ্ছ্বসিত প্রধানমন্ত্রী

অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ডাকসু (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ) নির্বাচন চান আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দীর্ঘদিন পর এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে জেনে তিনি উচ্ছ্বসিত। প্রধানমন্ত্রী মনে করছেন, ডাকসু নির্বাচন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য সহায়ক হবে। এ নির্বাচনের মাধ্যমে ছাত্রদের মাঝ থেকে নেতৃত্ব বেরিয়ে আসবে, ছাত্র নেতৃত্বের বিকাশ ঘটবে। তিনি দলের চার নেতার মাধ্যমে ডাকসু নির্বাচনের জন্য ছাত্রলীগের নেতাদের সর্বাত্বক প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ডাকসু নির্বাচনে সবার অংশগ্রহণ চান শেখ হাসিনা।
ডাকসু নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী দলের দুই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান ও জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এবং নির্বাহী সদস্য ও ডাকসুর সাবেক ভিপি আকতারুজ্জামানকে আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব দিয়েছেন। এ নেতারা ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে ইতোমধ্যে তিন দফা দফা বৈঠকও করেছেন।
ছাত্রলীগ নেতাদের তারা আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি, সাত মার্চ এবং স্বরসতী পূজায় নানা কর্মসূচি সাড়ম্বরে পালনের পাশাপাশি শিক্ষার্থীবান্ধব বিভিন্ন তৎপরতা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। এছাড়া বৃহস্পতিবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এবং হল সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে বসেন এসব নেতা।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডাকসু নির্বাচনকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি চান সুন্দর পরিবেশে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। এ নিয়ে তিনি আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। সে আলোকে আমরা ছাত্রলীগকে সর্বাত্বক প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি। একটি সুষ্ঠু, সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রশাসনের কাছেও দাবি জানিয়েছি।’ আব্দুর রহমান ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অভিনন্দন ও সাধুবাদ জানান।
প্রসঙ্গত, গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের নেতাদের ডেকে নিয়ে ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রলীগকে পরামর্শ দেওয়ার জন্য দায়িত্ব দেন। এদিন সন্ধ্যায় ছাত্রলীগের নেতাদের পরামর্শ দেন ওই চার নেতা। বৈঠকে দায়িত্বপ্রাপ্ত চার নেতার পাশাপাশি আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াও উপস্থিত ছিলেন। এর ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (৫ ফেব্রুয়ারি) আবার ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে বসেন আওয়ামী লীগ নেতারা। তারা ছাত্রলীগ নেতাদের স্পষ্ট জানিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী সবার অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চান। ছাত্রলীগকে ছাত্রছাত্রীদের মন জয় করে সুষ্ঠু ভোটে নির্বাচিত হয়ে আসতে প্রয়োজনীয় সহায়তা করা হবে বলে জানান তারা।
জানতে চাইলে ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন বলেন, ‘ছাত্রলীগ ডাকসু নির্বাচনের সর্বাত্বক প্রস্তুতি শুরু করেছে। আমরা একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। এ নির্বাচন নিয়ে আমাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের একাধিকবার মতবিনিময় হয়েছে। তারা বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছেন। ছাত্রলীগ সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের সমর্থনে ডাকসু নির্বাচনে পূর্ণ প্যানেলে জয়লাভ করবে বলে আমি আত্মবিশ্বাসী।’ উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ডাকসু নির্বাচন বন্ধ থাকার পর আগামী ১১ মার্চ এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ নিয়ে ছাত্র নেতাদের পাশাপাশি সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের মধ্যেও উদ্দীপনা বিরাজ করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সর্বত্র চলছে নানা আলাপ-আলোচনা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি শুরু করেছে। নির্বাচনে অংশ নেওয়ার তৎপরতা শুরু করেছে ছাত্র সংগঠনগুলোও।