ঢাকা মঙ্গলবার, ৬ই মে ২০২৫, ২৪শে বৈশাখ ১৪৩২


দুর্নীতির প্রতিবাদে রাজধানীতে ‘বালিশ বিক্ষোভ’


২১ মে ২০১৯ ০২:১৮

আপডেট:
৬ মে ২০২৫ ১২:১৫

নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আসবাব কেনায় ‘নজিরবিহীন দুর্নীতির’ প্রতিবাদে রাজধানীতে বালিশ হাতে বিক্ষোভ করেছে দুটি সংগঠন।

সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণঐক্য এবং নাগরিক পরিষদ নামে দুটি সংগঠন ‘বালিশ বিক্ষোভ’ ব্যানার নিয়ে বিক্ষোভে জড়ো হন।

বিক্ষোভকারীদের একটি পোস্টারে লেখা ছিল, ‘কে দেখবে এই দুর্নীতি? কে থামাবে এই মহামারি?’ অন্য একটি পোস্টারে লেখা ছিল, ‘কৃষক পায় না ফসলের দাম, চারদিকে লুটপাটের জয়গান।’

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আসবাবপত্রসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক পণ্য অস্বাভাবিক দামে কেনা ও সেগুলো ফ্ল্যাটে তোলার ব্যয় নিয়ে বেশ বিতর্ক চলছে।

প্রসঙ্গত, গ্রিন সিটি আবাসন পল্লীর নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনা ও তা ভবনে তোলায় অনিয়ম নিয়ে গত ১৬ মে দৈনিক দেশ রূপান্তরে ‘কেনা-তোলায় এত ঝাঁজ’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

এতে বলা হয়, প্রকল্পের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের থাকার জন্য গ্রিন সিটি আবাসন পল্লীতে ২০ তলা ১১টি ও ১৬ তলা আটটি ভবন হচ্ছে। এরই মধ্যে ২০ তলা আটটি ও ১৬ তলা একটি ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। ২০ তলা ভবনের প্রতিটি ফ্ল্যাটের জন্য প্রতিটি বালিশ কিনতে খরচ দেখানো হয়েছে পাঁচ হাজার ৯৫৭ টাকা। আর ভবনে বালিশ ওঠাতে খরচ দেখানো হয়েছে ৭৬০ টাকা।

প্রতিটি রেফ্রিজারেটর কেনার খরচ দেখানো হয়েছে ৯৪ হাজার ২৫০ টাকা। রেফ্রিজারেটর ভবনে ওঠাতে খরচ দেখানো হয়েছে ১২ হাজার ৫২১ টাকা।

একেকটি খাট কেনা দেখানো হয়েছে ৪৩ হাজার ৩৫৭ টাকা। আর খাট ওপরে ওঠাতে খরচ দেখানো হয়েছে ১০ হাজার ৭৭৩ টাকা। প্রতিটি টেলিভিশন কেনায় খরচ দেখানো হয়েছে ৮৬ হাজার ৯৭০ টাকা। আর টেলিভিশন ওপরে ওঠাতে দেখানো হয়েছে ৭ হাজার ৬৩৮ টাকার খরচ।

বিছানার খরচ ৫ হাজার ৯৮৬ টাকা দেখানো হয়েছে; তা ভবনে তুলতে খরচ দেখানো হয়েছে ৯৩১ টাকা। প্রতিটি ওয়ারড্রোব কিনতে খরচ দেখানো হয়েছে ৫৯ হাজার ৮৫৮ টাকা। আর তা ওঠাতে দেখানো হয়েছে ১৭ হাজার ৪৯৯ টাকার খরচ।

এরকম বৈদ্যুতিক চুলা, বৈদ্যুতিক কেটলি, রুম পরিষ্কারের মেশিন, ইলেকট্রিক আয়রন, মাইক্রোওয়েভ ইত্যাদি কেনাকাটা ও ভবনে তুলতে অস্বাভাবিক খরচ দেখানো হয়েছে।

বিষয়টি তদন্তে উচ্চপর্যায়ের পৃথক দুটি কমিটি গঠন করেছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ও গণপূর্ত অধিদপ্তর। কমিটি দুটিকে আগামী সাত কার্যদিবসে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। মন্ত্রণালয় রূপপুরের আসবাবপত্র সরবরাহের সঙ্গে জড়িত ঠিকাদারদের বিল পরিশোধ থেকে বিরত থাকার নির্দেশনাও দিয়েছে।

এছাড়া ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে এ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে রোববার হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন আইনজীবী সৈয়দ সাইয়্যেদুল হক সুমন।