শীর্ষ পদ পাওয়ার প্রত্যাশায় নতুন পুরনোরা

সাত বছর পার করে আজ শনিবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। দলের ভেতর শুদ্ধি অভিযানের কারণে এবার সম্মেলন পেয়েছে নতুন মাত্রা। বিতর্কিত কর্মকা-ের জন্য বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে কাউন্সিলকেন্দ্রিক কর্মকা- থেকে দূরে রাখার মধ্য দিয়ে বিতর্কিতরা এবার যে নেতৃত্বে আসছেন
না, সে বার্তা আগেই দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। ফলে এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে স্বচ্ছ, ত্যাগী ও পরিচ্ছন্ন নেতারাই সংগঠনের নেতৃত্বে আসছেনÑ এমনটাই মনে করছেন নেতাকর্মীরা।
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজ বেলা ১১টায় সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের নতুন কমিটির নাম ঘোষণার পাশাপাশি এ দিনই ঘোষণা করা হবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও ঢাকা মহানগর উত্তরে নবনির্বাচিত নেতাদের নাম। ১১ ও ১২ নভেম্বর এ দুটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংগঠনের সাবেক নেতারা নিজেদের পছন্দের নেতাদের নেতৃত্বে আনতে বেশ তৎপর ছিলেন। স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগের এক সাংগঠনিক সম্পাদক চান তার পছন্দের কর্মীকে নেতা বানাতে। সংগঠনের কয়েকজন নেতা বলেন, ওই সাংগঠনিক সম্পাদকের পছন্দের তালিকায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা বানাতে চান সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আফজাল বাবু ও খায়রুল হাসান জুয়েলকে। তবে আওয়ামী লীগের অপর কয়েকজন নেতা ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের একাংশ চায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মতিউর রহমান মতি ও কে এম আজিমকে।
তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা নির্বাচন করা হচ্ছে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পছন্দের ব্যক্তিকে। তাদের থাকতে হবে ক্লিন ইমেজ, রাজনৈতিক ত্যাগ-তিতিক্ষা। সে হিসেবে আলোচনায় থাকা নেতাদের যেমন স্বেচ্ছাসেবক লীগের শীর্ষ পদে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে, তেমনি আলোচনার বাইরের কেউ পদ পেয়ে যেতে পারেন এই সংগঠনের।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের জন্ম ১৯৯৪ সালে। এরপর আহ্বায়ক কমিটি পার করে দেয় দীর্ঘ ৯ বছর। ২০০৩ সালে প্রথম কমিটি হয় সংগঠনের। ওই সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এবং সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন পঙ্কজ দেবনাথ। এর ৯ বছর পর ২০১২ সালে হয় দ্বিতীয় কমিটি। দ্বিতীয় সম্মেলনে সভাপতি হয়েছেন মোল্লা মো. আবু কাওছার এবং সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথ। এর ৭ বছর পর আজ শনিবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সংগঠনের তৃতীয় সম্মেলন।
গঠনতন্ত্র অনুসারে তিন বছর পর পর সম্মেলন করার কথা থাকলেও ২৫ বছরে সম্মেলন হয়েছে মাত্র দুটি। ক্যাসিনো অভিযানের শুরুতে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা কাওছারের নাম আলোচনায় আসায় ইমেজ সংকটে পড়ে সংগঠনটি। বিতর্কের মধ্যে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় তাকে। অন্যদিকে সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয় সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথকে। এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে নতুন নেতৃত্বের কাছে সংগঠনের ইমেজ সংকট দূর করাই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক নির্মল রঞ্জন গুহ জানান, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন। এবারের সম্মেলনে ১ হাজার ৯৭৫ জন কাউন্সিলর এবং প্রায় ১৮ হাজার ডেলিগেট উপস্থিত থাকবেন। এ ছাড়া অতিথি থাকবেন প্রায় ১৫ হাজার। সম্মেলন সফল করতে ১৩টি উপকমিটি গঠন করা হয়েছে।