ঢাকা দক্ষিণ সিটি নির্বাচন
মেয়র প্রার্থী দৌড়ে এগিয়ে যারা

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। ভোটকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে এলাকাবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে পোস্টার ও ফেস্টুন টানাচ্ছেন ওয়ার্ড ও নগরের সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা।
শুক্রবার কয়েকটি ওয়ার্ডে দেখা যায়, সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থীরা জুম্মার নামাজ শেষে মুসল্লিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করছেন। এর মধ্যে বেশির ভাগই গত নির্বাচনে পরাজিত ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী। নতুন বছরের শুরুতে অনুষ্ঠিতব্য ভোটের লড়াইয়ের প্রস্তুতি শুরু করেছেন তারা অনানুষ্ঠানিকভাবে। গতবার না পেলেও তারা অনেকেই এবার মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে বেশ আত্মবিশ^াসী। মনোনয়ন না পেলেও ‘জনগণের জন্য’ ভোটযুদ্ধে থাকবেন বলেও কেউ কেউ বলছেন।
সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে সিটি করপোরেশন নির্বাচন হবে। আর সম্ভাব্য সে নির্বাচনকে ঘিরে পুরোদমে সরব হয়ে উঠতে শুরু করেছে চায়ের টেবিল। ভোটের আমেজে এবার চাঙ্গা হবে শীতের আবহ।
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে পুরনো প্রার্থীদের পাশাপাশি আলোচনায় আসছেন বেশ কয়েকজন নতুন প্রার্থী। ২০১৫ সালের মেয়র নির্বাচনে ঢাকা দক্ষিণে দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হন মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। এবারও প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে আছেন বর্তমান মেয়র খোকন। ইতোমধ্যে মেয়র সাঈদ খোকন নাগরিকসেবার পাশাপাশি শুরু করেছেন আগামী নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা। তিনি ছাড়াও দলের মনোনয়ন চাইবেন একাধিক নেতা।
ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে আলোচনায় রয়েছেন সাবেক আইনজীবী সমিতির নির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য অ্যাডভোকেট কাজী নজিবুল্লাহ হিরু, সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী ও সংসদ সদস্য শেখ ফজলে নূর তাপস। তবে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে ১/১১-এর নেত্রী মুক্তি আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা নজীবউল্লাহ হিরুকে নিয়েই আলোচনা হচ্ছে সব থেকে বেশি। স্বচ্ছ রাজনৈতিক দর্শন আর ক্লিন ইমেজের কারণে হিরুই হতে পারেন আগামীতে আওয়ামী লীগের দক্ষিণ সিটির কাণ্ডারি।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নির্বাচিত সদস্য ও লিগ্যাল এডুকেশন কমিটির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট কাজী নজীবউল্লাহ হিরু ইতোপূর্বে বাংলাদেশ আওয়ামী যুব লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, জগন্নাথ কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি, ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন।
নেতাকর্মীদের ধারণা, ক্লিন ইমেজ, অতীতের সাফল্য ও জনপ্রিয়তার দিক থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে এবার যোগ্য প্রার্থী হয়ে ওঠতে পারেন অ্যাডভোকেট কাজী নজীবউল্লাহ হিরু।
বিএনপিতে সম্ভাবনা খোকাপুত্র ইশরাকের
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে এগিয়ে আছেন ইশরাক হোসেন। সদ্যপ্রয়াত বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার বড় ছেলে ইশরাক ইতোমধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছেন। দলীয় হাইকমান্ডের সবুজ সংকেত পেয়ে দক্ষিণের প্রতিটি থানা ও ওয়ার্ডের নেতাদের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করে নির্বাচন প্রসঙ্গে তাদের মতামত নিয়েছেন।
এর আগে সর্বশেষ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের প্রার্থী হয়েছিলেন। কিন্তু জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী সুব্রত চৌধুরীর স্বার্থে তিনি আর নির্বাচনে অংশ নেননি।
বিএনপিতে সাদেক হোসেন খোকা ও মির্জা আব্বাসের মধ্যে রবাবরই রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা ছিল। তবে আগামী নির্বাচনে ঢাকা দক্ষিণে মির্জা আব্বাসের নির্বাচন করার সম্ভাবনা কম। মির্জা আব্বাসের বদলে তার স্ত্রী আফরোজা আব্বাসের দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
গেল সিটি নির্বাচনে আব্বাসকে মনোনয়ন দেওয়া হলেও তার অনুপস্থিতিতে মাঠপর্যায়ে যোগ্যতা ও সামর্থ্যরে প্রমাণ রাখেন আফরোজা। উল্লেখ্য, রাজধানীবাসীর সেবার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০১১ সালের ২৯ নভেম্বর ঢাকা সিটি করপোরেশনকে উত্তর-দক্ষিণ দুই ভাগে ভাগ করা হয়। এর প্রায় চার বছর পর দুই সিটিতে নির্বাচন হয়।