ঢাকা শুক্রবার, ৯ই মে ২০২৫, ২৬শে বৈশাখ ১৪৩২


ফরিদপুর ৩৭ লাখ টাকার পর্দার দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে দুদক


২৭ নভেম্বর ২০১৯ ১৫:০৬

আপডেট:
৯ মে ২০২৫ ০৩:১৩

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ (ফমেক) হাসপাতালে আইসিইউর (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) অপ্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে ১০ কোটি টাকা আত্মসাৎচেষ্টার প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ ঘটনায় জড়িত ৭ জনের মধ্যে ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের অনুমোদন দিয়েছে দুদক। আজ বুধবার এই মামলা করা হবে বলে দুদকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা  জানিয়েছেন।

আর মারা যাওয়ায় অভিযুক্তদের মধ্যে একজনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। কমিশনের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ফমেকে প্রচলিত বাজারদরের চেয়ে ১৮৬ গুণ পর্যন্ত বেশি দাম দিয়ে ১৬৬টি যন্ত্র ও সরঞ্জাম সরবরাহ করেছে কালো তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান মেসার্স অনিক ট্রেডার্স। এ অভিযোগের প্রমাণ মেলায় দুদকের প্রতিবেদনে ডা. গণপতি বিশ্বাস, ডা. মিনাক্ষী চাকমা, ডা. এএইচএম নূরুল ইসলাম, মুন্সী সাজ্জাদ হোসেন, আবদুল্লাহ আল মামুন ও মুন্সী ফররুক হোসাইনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের সুপারিশ করা হয়েছে। আরেক অভিযুক্ত ডা. মো. ওমর ফারুক খান ইতিমধ্যে মারা যাওয়ায় তাকে অভিযোগের দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

ফমেকের কেনাকাটায় অনিয়মের ঘটনায় দুদক গঠিত অনুসন্ধান দলের প্রধান সংস্থাটির উপপরিচালক শামসুল আলম গতকাল  বলেন, ‘ফমেক হাসপাতাল নিয়ে অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। আমরা ফমেক হাসপাতালের অনিয়মের একটি অংশের প্রতিবেদন কমিশনে দাখিল করেছি। কমিশন মামলার অনুমোদন দিয়েছে। এ বিষয়ে আরও অনুসন্ধান ও মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’


২০১২-১৬ সাল পর্যন্ত উন্নয়ন প্রকল্পে ফমেক হাসপাতাল ১১ কোটি ৫৩ লাখ ৪৬৫ টাকার মেডিকেল যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম কেনাকাটা করে। এর বিপরীতে বিল দেখানো হয় ৫২ কোটি ৬৬ লাখ ৭১ হাজার ২০২ টাকা। ঢাকার মেসার্স অনিক ট্রেডার্স এই বাড়তি ৪১ কোটি ১৩ লাখ ৭০ হাজার ৭৩৭ টাকা বিল দেখায়। ফমেক কর্মকর্তারা কঠোর গোপনীয়তায় সব কাজ করলেও সর্বশেষ ১০ কোটি টাকার একটি বিল আটকে দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ওই বিল আটকে যাওয়ায় সেটি পাওয়ার জন্য হাইকোর্টে একটি রিট করে। পরে ‘কেঁচো খুঁড়তে সাপ’ বেরিয়ে আসে। এক পর্দার দাম সাড়ে ৩৭ লাখ টাকায় কেনার বিষয়টি জানাজানি হলে সারা দেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

দুদকের কর্মকর্তারা জানান, ফমেক হাসপাতালে রোগীকে আড়াল করার এক সেট পর্দার দাম ধরা হয়েছে ৩৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা দামের একেকটি স্টেথিস্কোপের জন্য খরচ করেছে ১ লাখ সাড়ে ১২ হাজার টাকা, ১০ হাজার টাকার ডিজিটাল ব্লাডপ্রেশার মাপার মেশিন কেনা হয় ১০ লাখ ২৫ হাজার টাকায়। অব্যবহৃত আইসিইউর জন্য অক্সিজেন জেনারেটিং প্ল্যান্টের দাম ধরা হয়েছে ৫ কোটি ২৭ লাখ টাকা। খোদ জাপান থেকে আনলেও এটার খরচ হওয়ার কথা সর্বোচ্চ ৮০ লাখ টাকা। বিআইএস মনিটরিং প্ল্যান্ট স্থাপনে ২৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা খরচ দেখানো হয়েছে। অথচ এমন প্ল্যান্ট স্থাপনে সর্বোচ্চ খরচ হয় ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা।