মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও ভাতাসহ সব সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ
মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও এত সুবিধা !

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও ভাতাসহ সব ধরনের সরকারি সুযোগ-সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আলমগীর হোসেন হিরু নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। তার ভাইদের অভিযোগ, হিরু মিথ্যা তথ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট তৈরি করে এ সুবিধা নিচ্ছেন।
এ বিষয়ে তার বড় দুই ভাই আব্দুল বাছেদ মুন্সী (৭৮) ও বাবলু মিয়া ওরফে বাবু মিয়া (৭৫) গত ১৪ নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) ডিজিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী।
জানা যায়, মির্জাপুর পৌরসভার বাওয়ার কুমারজানী গ্রামের মৃত হাকিম উদ্দিনের চার ছেলের মধ্যে আলমগীর হোসেন হিরু সবার ছোট। তার বয়স যখন ৭ বছর তখন হাকিম উদ্দিন মারা যান। পরে বড় তিন ভাই তাকে লালন পালন করে বড় করেছেন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় হিরুর বয়স ছিল ১০ বছর।
বড় দুই ভাইয়ের দাবি, আলমগীর হোসেন হিরু প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোনোভাবেই মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়নি। অথচ মিথ্যা তথ্য দিয়ে কৌশলে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নিজের নাম অন্তর্ভুক্ত করে সরকারি ভাতা নিচ্ছেন। এ ছাড়াও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কোঠায় তার এক ছেলে পুলিশে ও মেয়েকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে চাকরি দিয়েছেন। অপর ছেলেকেও একইভাবে পুলিশে চাকরি দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
আব্দুল বাছেদ মুন্সী ও বাবলু মিয়া বলেন, বিতর্কিত মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে সবার প্রতিবাদ করা উচিত। তারা অভিযোগে তদন্ত সাপেক্ষে আলমগীর হোসেন হিরুর ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিল করে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
মন্ত্রীর কাছে লিখিত অভিযোগের অনুলিপি জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল, সভাপতি ও সম্পাদক টাঙ্গাইল প্রেসক্লাব, মির্জাপুর প্রেসক্লাব বরাবর পাঠিয়েছেন।
আলমগীর হোসেন হিরু এ বিষয়ে বলেন, তিনি মির্জাপুর মুক্তিযোদ্ধা পৌর কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। তবে বিষয়টি তার বড় ভাই ও গ্রামের লোকজন জানেন না। কোন বাহিনীতে যুদ্ধ করেছেন জানতে চাইলে তিনি কাদেরিয়া বাহিনীর নাম বলেন। মির্জাপুর পৌর মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার মোহাম্মদ আলী বলেন, আলমগীর হোসেন হিরু নামের কোনো মুক্তিযোদ্ধাকে তিনি চেনেন না। মির্জাপুর উপজেলা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার সরকার হিতেষ চন্দ্র পুলক বলেন, আলমগীর হোসেন হিরু নামে কোনো ব্যক্তির নাম লাল মুক্তি বার্তায় নেই।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবদুল মালেক বলেন, যেহেতু পরিবার থেকে মন্ত্রী বরাবর অভিযোগ দেওয়া হয়েছে তাই মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।