ঢাকা শুক্রবার, ৯ই মে ২০২৫, ২৭শে বৈশাখ ১৪৩২


সভাপতিমণ্ডলীর অনেকেই বাদ,কপাল খুলতে পারে ছাত্রলীগের সাবেকদের


১২ ডিসেম্বর ২০১৯ ২২:২৮

আপডেট:
১২ ডিসেম্বর ২০১৯ ২২:২৯

আওয়ামী লীগের আসন্ন ২১তম জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে প্রায় ৪০ জন নতুন নেতা কেন্দ্রীয় কমিটিতে আসছেন বলে আভাস পাওয়া গেছে। ক্ষমতাসীন দলের কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা দেশ রূপান্তরকে এ আভাস দিয়ে জানিয়েছেন, ২০-২১ ডিসেম্বরের এই সম্মেলনে বাদ পড়বেন সভাপতিম-লী ও সম্পাদকম-লীর সদস্যসহ কেন্দ্রীয় কমিটির ৩০-৩৫ জন নেতা। পদোন্নতি ও পদাবনতি ঘটবে কেন্দ্রীয় আরও অন্তত ২০ নেতার।

কেন্দ্রীয় ওই নেতারা  জানান, আওয়ামী লীগের ৮১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটিতে সভাপতিম-লীর তিনটিসহ চারটি পদ এখন শূন্য রয়েছে। নতুন কমিটিতে ওই চারটি পদও পূরণ করা হতে পারে। সে হিসাবে নতুন কমিটিতে সব মিলে নতুন প্রায় ৪০ জন নেতা দেখা যেতে পারে। তারা বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দলীয় নেতাদের জানিয়েছেন,

দলে এত এত নেতা; কাজের সময় তো এত দেখি না। সব মিলিয়ে ১০-১৫ জন নেতাকে দলীয় কাজে পাওয়া যায়। তাহলে এত নেতার দরকার কি? তাদের বাদ দিয়ে কিছু নতুন আসুক। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা আরও বলেন, এর মধ্য দিয়ে তিনি স্পষ্ট করেছেন এবার বাদের তালিকা দীর্ঘ হবে। আসবে নতুন অনেক নেতা।

আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর এক সদস্য  জানান, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির যেসব নেতা সুযোগ পেয়েও দায়িত্ব পালনে অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন, ক্ষমতার ব্যবহার করে রাজনীতির চেয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যে বেশি সময় দিয়েছেন তাদের দলীয় পদে আর রাখবেন না শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, গত তিন কমিটিতে যারা দায়িত্ব পালন করেছেন সেসব নেতার কাজ পর্যালোচনা করছেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার পর্যালোচনায় যারা উতরে যাবেন তাদের আরও পদোন্নতি ঘটবে।

যারা ব্যর্থ তাদের দলীয় দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে। শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত সম্পাদকম-লীর এক সদস্য  বলেন, যারা রাজনীতিতে ভালো করেছেন তাদের পুরস্কৃত করে কাজ করার ক্ষেত্র তৈরি করে দেবেন দলীয় সভাপতি।

যারা সুযোগ পেয়েও দলীয় কাজে সময় দেননি, শেখ হাসিনার অর্পিত দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন এবারের কেন্দ্রীয় কমিটিতে তারা আর থাকার সুযোগ পাবেন না।

আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য কাজী জাফরউল্যাহ বলেন, সম্মেলন মানেই পরিবর্তন। দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার অর্পিত দায়িত্ব যারা পালন করতে পেরেছেন তারা পুরস্কৃত হবেন, যারা ব্যর্থ হয়েছেন তারা সিটকে পড়বেনÑএটাই স্বাভাবিক নিয়ম।

দলের সভাপতিম-লীর আরেক সদস্য জানান, সাংগঠনিক সম্পাদকদের মধ্যে বেশ কয়েকজন নেতা সাংগঠনিক কাজে বেশ সময় দিয়েছেন বিধায় তাদের কয়েকজনকে এবার পদোন্নতি দেবেন দলীয় সভাপতি।

দুজন সাংগঠনিক সম্পাদকের পদাবনতি ঘটবে। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে চার নেতার দায়িত্ব পালনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্তুষ্ট। তিনি বলেন, তাদের ভেতরে থেকে তিনজনই সাধারণ সম্পাদকের আলোচনায় রয়েছেন। তাদের মধ্য থেকে একজন সাধারণ সম্পাদক হয়েও যেতে পারেন। অপর দুজনের পদোন্নতি ঘটবে।

তবে একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদাবনতি ঘটতে পারে। অথবা তিনি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হতে পারেন। সভাপতিম-লীর ওই সদস্য আরও বলেন, বর্তমান কমিটির সভাপতিম-লীর সদস্যরা এবার বাদ পড়বেন বেশি। সেখানে সম্পাদকম-লীর সদস্যদের মধ্য থেকে যারা ভালো করেছেন তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

দলের আন্তর্জাতিক সম্পাদক, বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক, প্রচার সম্পাদক, উপপ্রচার সম্পাদক, মক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক, কৃষিবিষয়ক সম্পাদক, দপ্তর, উপদপ্তর পদের নেতারা পদোন্নতির তালিকায় আছেন বলে প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ দুই নেতা ইঙ্গিত দিয়েছেন। তারা বলেন, মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন এমন কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতাও বাদের তালিকায় আছেন। এসব পদে নতুনদের দায়িত্ব দেওয়া হবে। নতুন হিসেবে এবার কপাল খুলতে পারে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের।