ঢাকা শুক্রবার, ৯ই মে ২০২৫, ২৭শে বৈশাখ ১৪৩২


ঢাকার দুই সিটির নির্বাচন ৩০ জানুয়ারি


২৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ১২:৩৬

আপডেট:
৯ মে ২০২৫ ১৮:২২

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন আগামী ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ৩১ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ২ জানুয়ারি এবং প্রত্যাহারের শেষ দিন ৯ জানুয়ারি।

দুই সিটি নির্বাচনে প্রতিটি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট গ্রহণ হবে। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত তা চলবে। রোববার নির্বাচন কমিশন ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন এ তথ্য জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদা। এর আগে ইসির ৫৭তম কমিশন সভা অনুষ্ঠিত হয়।

তিনি জানান, এবারই প্রথম রাজধানীর অর্ধকোটি ভোটারের সবাই মেয়র ও কাউন্সিলর নির্বাচনে ইভিএমে ভোট দেবেন।
মেয়র পদে প্রার্থীরা দলীয় প্রতীকে ভোট করতে পারবেন; তবে সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর পদে ভোট হবে নির্দলীয় প্রতীকে।

বিদ্যমান ভোটার তালিকা দিয়েই ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটিতে ভোট করা হবে। সম্প্রতি দুই সিটির সম্প্রসারিত ১৮টি করে মোট ৩৬টি ওয়ার্ডের সংরক্ষিতসহ ৪৮ জন কাউন্সিলর জানুয়ারিতে নির্বাচন না করতে কমিশনে আবেদন করেছিলেন। তারা হুমকি দিয়েছিলেন যে, তাদের আসনে নির্বাচন করলে উচ্চ আদালতে যাবেন। তবে ইসির নির্ধারিত সময়ে ওইসব ওয়ার্ডেও নির্বাচন হবে। তফসিল ঘোষণা করায় আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে (মঙ্গলবার) আগাম প্রচারণামূলক সব পোস্টার-বিলবোর্ড নিজ দায়িত্বে নামিয়ে ফেলতে হবে। তা না হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে ইসি।

এই নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ইসির দুই যুগ্ম সচিবকে। উত্তরে দায়িত্ব পালন করবেন আবুল কাশেম, দক্ষিণের দায়িত্ব পেয়েছেন আব্দুল বাতেন। ঢাকা উত্তর সিটিতে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় হবে বনানী কমিউনিটি সেন্টার; দক্ষিণ সিটিতে মতিঝিল কমিউনিটি সেন্টার (বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকা কমিউনিটি সেন্টার) রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা হবে।

ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণে ভাগ হওয়ার পর ২০১৫ সালের এপ্রিলে দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচন হয়েছিল। নির্বাচনের পর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রথম সভা হয় ওই বছরের ১৪ মে, দক্ষিণ সিটিতে ১৭ মে। এ হিসাবে ঢাকা উত্তরের মেয়াদ শেষ হবে ২০২০ সালের ১৩ মে আর দক্ষিণে একই বছরের ১৬ মে। স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন ২০০৯ অনুযায়ী, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ১৮০ দিনের মধ্যে ভোটগ্রহণ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

ঢাকা উত্তর সিটিতে ভোটার সংখ্যা ৩০ লাখ ৩৫ হাজার ৬২১। সাধারণ ওয়ার্ড ৫৪টি এবং সংরক্ষিত ১৮টি। সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১ হাজার ৩৪৯ এবং ভোটকক্ষ ৭ হাজার ৫১৬টি। ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ভোটার সংখ্যা ২৩ লাখ ৬৭ হাজার ৪৮৮। সাধারণ ওয়ার্ড ৭৫টি এবং সংরক্ষিত ২৫টি। সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্র ১ হাজার ১২৪ এবং ভোটকক্ষ ৫ হাজার ৯৯৮টি।

জামানত ও ভোটার তালিকার সিডি : ভোটার সংখ্যা অনুযায়ী দক্ষিণের প্রত্যেক মেয়র প্রার্থীকে ১ লাখ টাকা জামানত রাখতে হবে। ২০ লাখের বেশি ভোটার হলে ১ লাখ টাকার জামানতের বিধান রয়েছে। এবার প্রার্থীদের ভোটার তালিকার সিডি কেনা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রতি ওয়ার্ডের সিডির জন্য প্রার্থীদের গুনতে হবে ৫০০ টাকা। অন্যদিকে সংরক্ষিত মহিলা আসনের কাউন্সিলরদের তিনটি ওয়ার্ডের সিডি কিনতে হবে ১৫০০ টাকা দিয়ে। সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থীদের জামানত ভোটার অনুপাতে ১০ হাজার থেকে ৫০ হাজার এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীকে ১০ হাজার টাকার জামানতের বিধান রয়েছে।

স্বপদে থেকে ভোট নয় : দুই সিটির বর্তমান মেয়ররা ভোটে অংশ নিতে চাইলে তাদের পদত্যাগ করে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে। আদালতের রায়ে সিটি করপোরেশনের মেয়র পদটি লাভজনক বিবেচিত হওয়ায় প্রার্থী হতে পদ ছাড়তে হচ্ছে জনপ্রতিনিধিকে। সিটি করপোরেশন আইনে বলা হয়েছে, মেয়র পদে অধিষ্ঠিত কোনো ব্যক্তি নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণে অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। তবে এই ব্যক্তি নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে অংশ নিতে হলে তাকে পদত্যাগ করে প্রার্থী হতে হবে।
কাউন্সিলর পদধারীরা লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত না হওয়ায় তারা পদত্যাগ না করেও প্রার্থী হতে বাধা নেই। তবে প্যানেল মেয়র প্রার্থী হতে চাইলে তাকেও ছাড়তে হবে কাউন্সিলরের পদ। আচরণবিধি অনুযায়ী, সিটি ভোটের প্রচারে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যসহ সরকারি সুবিধাভোগীরা অংশ নিতে পারবেন না।

এর আগে জানুয়ারির মাঝামাঝি ঢাকার দুই সিটির নির্বাচনের কথা থাকলেও তা থেকে পিছিয়ে আসে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। সংশ্লিষ্টরা জানান, মূলত সেনাবাহিনীর শীতকালীন মহড়ার জন্য ভোটের সময় কিছুটা পেছানো হয়েছে। কারণ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পরিচালনায় সহায়তা করবে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে গঠিত টেকনিক্যাল টিম।