ঢাকা শনিবার, ১০ই মে ২০২৫, ২৭শে বৈশাখ ১৪৩২


জনপ্রতিনিধিদের আশ্বাস শোনে না মশা!


২৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৪:০৭

আপডেট:
১০ মে ২০২৫ ০১:০০

বেহাল রাস্তা, জলাবদ্ধতা ও মশায় অতিষ্ঠ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) অধিভুক্ত ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডবাসীর জীবন। জনপ্রতিনিধি আসেন-যান কিন্তু আশা পূরণ হয় না ভোটারদের। গত ২৮ ফেব্রম্নয়ারি নির্বাচনে নতুন কমিশনার পেলেও ভোগান্তি কমেনি; বরং কিছু কিছু ড়্গেত্রে বেড়েছে। এদিকে নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ৩০ জানুয়ারি ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচন। এরই মধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থীরা শুরু করেছেন প্রচারণা। প্রার্থীদের প্রতিশ্রুতি, কমিশনার হলে কার্যকরী উদ্যোগ নিয়ে এলাকাবাসীকে জলাবদ্ধতা-মশা থেকে মুক্তি দেবেন। এলাকায় দেবেন আধুনিক নগরের সব সুবিধা। তবে এলাকাবাসীর দাবি, নতুন কমিশনার যেন তার অঙ্গীকার না ভোলেন।

দক্ষিণখান ইউনিয়ন পরিষদ ভেঙে ৪টি ওয়ার্ড গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে দক্ষিণখান সদর, বড়ুয়া, আমতলা, সোনারখোলা, সৈয়দনগর, মোল্লাপাড়া, তালতলা, হলান এলাকা নিয়ে গঠিত ৪৮ নম্বর ওয়ার্ড। এই এলাকায় ১৫টিরও বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ রয়েছে দক্ষিণখান থানা, অনেক সরকারি-বেসরকারি অফিস। এসব এলাকার অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাস্তা, জলাবদ্ধতা, মশা ও ওয়াসার পানিতে ময়লায় অতিষ্ঠ জনজীবন। কিছুতেই এর সমাধান মিলছে না। অনেক রাস্তার অবস্থা এখনো বেহাল। একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তায় জলজটের সৃষ্টি হয়; বিশেষ করে সৈয়দনগর, মোল্লাপাড়া, হলানের কিছু অংশ, পণ্ডিতপাড়ার রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। দীর্ঘ দিনেও এসব রাস্তার সংস্কার হয়নি। আর কয়েকটি কিশোর গ্যাং প্রায়ই সংঘাতে জড়ায়। তাদের মধ্যে দ্বন্দ্বে খুনের ঘটনাও ঘটেছে। উঠতি তরুণরা আসক্ত হচ্ছে মাদকেও। মাঝেমধ্যে ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটছে। চলতি বছর তারা নতুন কমিশনার পেলেও এলাকার উন্নয়নে কোনো কাজ করেননি তিনি। তবে কমিশনার মাসুদুর রহমান দাবি করেছেন, বাজেট না থাকায় উন্নয়নকাজে হাত দিতে পারেননি তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিটি নির্বাচন সামনে রেখে ডজনখানেক প্রার্থী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমান কাউন্সিলর মাসুদুর রহমান দেওয়ান, দক্ষিণখান থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম আসাদুজ্জামান মিঠু, থানা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক ফয়েজ আহমেদ, থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বিমানবন্দর থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য রবিউল ইসলাম রবি, দক্ষিণখান থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর, দক্ষিণখান থানা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ দেলোয়ার হোসেন, বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন জমিদারসহ অনেকেই প্রার্থিতা করতে চাচ্ছেন। তবে দল যাকে মনোনয়ন দেবে সবাই তার হয়ে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তারা।

ফয়েজ আহমেদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘এলাকার সমস্যাগুলোর ভুক্তভোগী আমি নিজেও। জনগণ যদি আমাকে নির্বাচিত করে তাহলে এসব অসংগতি দূর করব; বিশেষ করে জলাবদ্ধতা দূর করতে ঢাকা ওয়াসার সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করব। এলাকায় মাদক ও কিশোর গ্যাংয়ের মূলোৎপাটন করে এলাকার আধুনিকায়ন করব।’

সৈয়দ দেলোয়ার বলেন, ‘এই এলাকায় আমার জন্ম। তাই সমস্যাগুলো আমার জানা। আমি দীর্ঘদিন রাজনীতির পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক কাজের সঙ্গে সংম্পৃক্ত ছিলাম। দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেয় এবং ভোটররা যদি নির্বাচিত করেন, তাহলে জনগণকে সঙ্গে নিয়েই এলাকার উন্নয়ন করব।

আনোয়ার হোসেন জমিদার বলেন, ‘আশা করছি, নির্বাচন সুষ্ঠু হলে আমি জয়ী হব। আমার বাড়ির সামনেই জলাবদ্ধতা। কিন্তু আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, আগে সবার বাড়ির সামনের জলাবদ্ধতা দূর করব। এলাকার যানজট নিয়ন্ত্রণে আলাদা স্বেচ্ছাসেবী ও কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা করব।’

দক্ষিণখানের রোগমুক্তি ফার্মেসির কর্ণধার শরিফ হোসেন বলেন, ‘ছয়-সাত লাখ মানুষের বসবাস এই ওয়ার্ডে। অথচ এখানে কোনো সরকারি হাসপাতাল নেই। নেই সরকারি কোনো কমিউনিটি সেন্টার। মশার যন্ত্রণায় জীবন অতিষ্ঠ। সামান্য বৃষ্টিতে রাস্তাঘাট ডzবে থাকে। তাই এবার চেষ্টা করব যোগ্য প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে। আমি আশা করি, নতুন কমিশনার তার প্রতিশ্রুতি ভুলবেন না।’