ঢাকা শনিবার, ১০ই মে ২০২৫, ২৭শে বৈশাখ ১৪৩২


স্বপ্নবাজ আনিসুল হকের মতোই কাজ করবো


৪ জানুয়ারী ২০২০ ১২:০৪

আপডেট:
৪ জানুয়ারী ২০২০ ১২:১২

তাবিথ আউয়াল। ক্রীড়াবিদ থেকে রাজনীতিবিদ। তিনি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টুর ছেলে। এবার ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) নির্বাচনে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী। গতকাল সন্ধ্যায় দৈনিক আমাদের দিনের মুখোমুখি হন।

বলেন, প্রয়াত সাবেক সফল মেয়র স্বপ্নবাজ আনিসুল হকের মতোই তিনি কাজ করবেন। জনগণের সমস্যাগুলো অস্বীকার করবেন না, সমস্যা স্বীকার করে সমাধান করার কথা বলেন তিনি।

বলেছেন, তিনি যদি নির্বাচিত হন তাহলে বর্জ্য, জলাবদ্ধতা, ট্রাফিকজ্যাম, পরিবেশ দূষণ এবং নিরাপদহীন যে শহরটা রয়েছে, তা থেকে উত্তোলন করার চেষ্টা করবেন। তার সঙ্গে মুখোমুখি হয়ে বিস্তারিত তুলে ধরছেন আমাদের রাজনৈতিক প্রতিবেদক আবদুর রহিম

আমাদের দিন : আপনার নিজের সম্পর্কে কিছু জানতে চাই

তাবিথ আউয়াল : আপাতত আমাকে একজন রাজনীতিবিদ বলতে পারেন। তবে আমি পড়ালেখা শুরু করেছিলাম স্কুল লেভেল থেকে। আমি ঢাকাতে আমেরিকান চার্টার্ড স্কুলে পড়তাম। আমি স্কুল ও ইউনিভার্সিটির দুই জায়গাতেই ফুটবল-টিমে খেলতাম। ফুটবল দিয়েই বড় হয়েছি। ঢাকাতেও ফার্স্ট ডিভিশনে খেলতাম, প্রিমিয়ার লিগে খেলতাম।

সেই ক্ষেত্রে ফুটবল প্লেয়ার বলতে পারেন অর্থাৎ ক্রীড়াবিদ। মাঝখানে ব্যবসা শুরু করেছিলাম। যখন আমি ২০০৩ সালে দেশে ফিরে আসি তখন ব্যক্তিগত ব্যবসা করি, আবার পারিবারিক ব্যবসায়ও জয়েন করি।

আমাদের দিন  : একজন তাবিথ আউয়ালকে আজকে অনেকেই চিনেন, আপনাকে গড়ে তোলার পেছনে কাদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। তাদের নিয়ে কিছু বলবেন কি?

তাবিথ আউয়াল : শিক্ষা মানেই শুধু স্কুলে যেতে হবে, ভালো পড়তে হবে এমন নয়। স্কুলে খালি খাতা নিয়ে ব্যস্ত থাকলে হবে না, ক্রীড়ার পেছনেও আমাদের একটা অবদান থাকতে হবে, যেটা আমার ছিলো। আমার পরিবারের লোকজন শুধু আমায় ছাড় দেয় নাই, ইনকার্জ করেছিল।

বেশিরভাগ সময় (তখন জীবিত ছিলেন) আমার দাদা-দাদি এবং আমার নানু সবসময় আমাকে শেখাতেন, কিভাবে মানুষের সাথে চলতে হয়। সাধারণ মানুষকে কীভাবে সম্মান দিতে হয়। তারা সবসময় বলতেন, কোনোদিন সম্মান পেতে হলে আগে সম্মান দিতে হবে।

এই শিক্ষাটা আমার পরিবার থেকে পেয়েছি, স্পেশালি আমার দাদা-দাদি, নানা-নানির কাছ থেকে। এর বাইরে ওনাদের চেয়েও সবচেয়ে বড় অবদান যারা আমাকে প্রাইমারি স্কুলে পড়িয়েছেন। প্রাইমারি স্কুলে আমার যে শ্রদ্ধেয় শিক্ষকরা ছিলেন, তাদের অনেকের সাথে আমার এখনো নিয়মিত যোগাযোগ হয়।

তারা আমাকে যে ফাউন্ডেশনটা দিয়েছেন, মুক্ত চিন্তা করা, খোলাভাবে আলোচনা করা, অন্যদের ব্যাপারে খারাপ সমালোচনা না করে ইতিবাচক সমালোচনা করা— এসব চিন্তাধারা আমার স্কুলের টিচাররা আমাকে দিয়েছেন। আমাকে গড়ে তোলার পেছনে ছোটবেলার শিক্ষকদের বড় অবদান রয়েছে।

আমাদের দিন : আপনার বাবা রাজনৈতিক ব্যক্তির চাইতেও ব্যবসায়ী হিসেবে বেশি পরিচিত বলেই অনেকে মনে করেন। কিন্তু আপনার রাজনীতিতে আসার কারণ কী?

তাবিথ আউয়াল : পরিস্থিতি কিন্তু বদলে গেছে বাংলাদেশে। আমার বাবা নিশ্চয়ই সবচেয়ে বড় ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। তবে তিনি দীর্ঘদিন ধরে অনেক রাজনৈতিক সমস্যা মোকাবিলা করেছেন, সমাধানের পথ দেখিয়ে দিয়েছেন।

অনেক রাজনৈতিক দলের ব্যক্তিরা যখন সমস্যায় পড়েছেন তখন তিনি সঠিক পদক্ষেপ নিয়েছেন। আমার বাবা যখন ব্যবসা শুরু করেন এবং আমি যখন বড় হচ্ছি এমন পরিস্থিতি ছিলো তখন। ১৯৮০ এবং ৯০-র দশকে আপনি খেয়াল করে দেখবেন যে, বাংলাদেশের উন্নয়নে প্রাইভেট সেক্টরটা কিন্তু ব্যবসা থেকে এসেছে।

গার্মেন্ট, ব্যাংকিং যে যে বেসরকারি উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, বিশেষ করে এনজিওগুলো, তারাই কিন্তু বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। তাদের জন্য অনেক আইন প্রয়োগ হয়ে গিয়েছিল। এখন দেখা যাচ্ছে যে, বাংলাদেশ একটা জায়গায় চলে এসেছে।

এককভাবে কিংবা প্রযুক্তির সাথে পৃথিবীর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করা যায় না, এখন কিন্তু অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তিদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব রয়েছে, পৃথিবী যেভাবে বদলে গেছে, আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের লড়াই করতে হচ্ছে। আমি দেখছি যে, রাজনীতি করে যদি দেশের অবদান রাখতে পারি, সবার জন্য মঙ্গল হবে।

আমাদের দিন : ছাত্রজীবনে বিএনপির ছাত্র সংগঠন ছাত্রদলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন কিনা। থাকলে সর্বশেষ কি পদ ছিলো?

তাবিথ আউয়াল : আমি ছাত্রজীবনে বিএনপির অঙ্গ সংগঠন ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে কোনোভাবেই জড়িত ছিলাম না। ছাত্রদলে আমার কোনো পদবি ছিলো না। ছাত্রদলের রাজনীতির সময় আমি বাংলাদেশের বাইরে ছিলাম। বাংলাদেশের বাইরে তো আর ছাত্রদলের সভা-কমিটিগুলো ছিলো না।

তবে ছাত্রদল না করলেও ছাত্রজীবন থেকে আমি জিয়াউর রহমানের কথা শুনে, ওনার আদর্শের ওপর বিশ্বাস, ঐক্যতে উদ্ভূত হয়েছি। মূলত আমরা সাংবিধানিকভাবে বিএনপির কথাগুলো মেনে চলি। আমি বাংলাদেশি, বাংলাদেশকে ধারণ করি। ছোটবেলা থেকে জাতীয়তাবাদের যে আদর্শ সেটা আমার ভেতরে ছিলো, এখনো আছে।

আমাদের দিন : বিএনপির অনেক সিনিয়র ব্যক্তিকে রেখেও আপনাকে ভালো লাগা, শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত করার কারণ কী। সবার চেয়ে আপনার গুনটা বেশি কি ছিলো বলে মনে করেন?

তাবিথ আউয়াল : কারণটা তো আমি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্তের পক্ষে বলতে পারছি না। উনারা বিবেচনা করে যেটা ভালো মনে করেছেন সেটাই করেছেন। আমার ওপর আস্থা রাখার জন্য। তবে আমি একমত, বিএনপির অনেক সিনিয়র লিডার আছেন, যারা আমার চাইতেও এই পদের জন্য ভেরিগুড ক্যান্ডিডেট ছিলেন।

তেমনিভাবে বিএনপির অনেক তরুণ নেতাও আছেন, নেত্রীও আছেন যারা আমার চাইতেও বেশি যোগ্য ছিলো। কিন্তু পরিস্থিতি যে জায়গায় চলে এসেছে, বিগত দিনগুলোতে আমি যেভাবে দায়িত্ব পালন করেছি, আপনি জানেন আমাদের দল এবং সাধারণ জনগণের অনেক সদস্য গুম হয়ে গেছে, অনিয়ম-অবিচারের শিকার হয়েছেন। পুলিশ প্রশাসন থেকে বলেন কিংবা গোয়েন্দা সংস্থা থেকে বলেন। আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের নিয়ে খুব নেগেটিভ একটা কথা অপপ্রচার করা হয়েছে।

সব আন্তর্জাতিক বন্ধুরা চান আন্তর্জাতিকভাবে বিএনপির মানোন্নয়ন করা, বিএনপির অভ্যন্তরীণ যে সমস্যাগুলো হয়েছে সেগুলোর সমাধান করা। এ পরিস্থিতিতে আমরা এ কাজ মেয়র পদ কিংবা ইলেকশনের মধ্য দিয়ে যদি করতে পারি তাহলে এ দল আরও ত্বরান্বিত হবে।

কিংবা আরও ত্বরান্বিত হওয়ার জন্য কি চাচ্ছি নগর উন্নয়নে, আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি যেমন চাচ্ছি, কিন্তু ওনার একক মুক্তি আমরা চাচ্ছি না, এ দেশের সকল ভয়-ভীতি থেকে মানুষকে মুক্তি এনে দিতে কাজ করছি।

আমাদের দিন : বয়োজ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদ আসাদুজ্জামান রিপন আপনার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন, দিনশেষে তাকে সরে যেতে হয়েছে, রিপনকে নিয়ে আপনার কিছু বলার আছে কিনা?

তাবিথ আউয়াল : আমি আসাদুজ্জামান রিপন সাহেবের বয়স নিয়ে কিছু বলতে চাচ্ছি না। আমি মনে করি যে, উনি ছাত্রজীবন থেকে একটা স্ট্র্যাপলেস নেতা। উনাদের মতো নেতাদের জন্যই বিএনপি আজ এই জায়গায় এসেছে। উনাদের মতো নেতাদের দেখেই আমার মতো তরুণরা রাজনীতিতে আসার আগ্রহ প্রকাশ করছে। তো আমি ওনাকে কৃতজ্ঞতা জানাই। উনি আমাদেরকে উৎসাহ দিয়েছেন।

তবে এটাও ঠিক উনি একটা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া কিন্তু রক্ষা করেছেন। আমি যদি এককভাবে ক্যান্ডিডেট হয়ে যেতাম তাহলে এটাও প্রশ্ন আসতো, দলে এমন কি হয়ে গেছে, শুধু একটা ক্যান্ডিডেট এসেছে, অন্য কেউ আসেনি। দলের ভেতরে ওনার বিরুদ্ধে আমার ইন্টারনাল একটা লড়াই করতে হয়েছে। একজন আরেক জনের অবস্থান স্থায়ী কমিটিতে তুলে ধরতে হয়েছে, এই প্রতিযোগিতার জন্য আমি ওনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

আমাদের দিন  : এই নগর নিয়ে আপনার স্বপ্ন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানতে চাই?

তাবিথ আউয়াল : আমার স্বপ্ন অন্য তরুণদের চেয়ে ভিন্ন নয়। সব তরুণের স্বপ্ন একটাই— বাসযোগ্য, মানুষবান্ধব নগরী তৈরি করা, ঢাকাতে থাকা। কিন্তু সেই জায়গা থেকে আমরা অনেক সরে এসেছি। ইদানীং দেখছি, আমরা অবনতির দিকে যাচ্ছি। আমার প্রথম টার্গেট থাকবে যে স্বপ্নগুলো সবারই আছে এগুলো বাস্তবায়ন করা। আমরা অনেক স্বপ্ন দেখেছি, দেখিয়েছি কিন্তু আমরা বাস্তবায়নের দিকে যাইনি।

এখন সময় এসেছে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার। বড় বড় সমস্যাগুলো আমরা চিহ্নিত করে ফেলেছি— বর্জ্য, জলাবদ্ধতা, ট্র্যাফিকজ্যাম, দূষণ আক্রান্ত পরিবেশ এবং নিরাপদহীন যে শহরটা হয়ে গেছে, তা থেকে উত্তোলন করার। আস্তে আস্তে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করলে হবে না, এখন জোর গতিতে নেগেটিভ দিকগুলো সমাধান করতে হবে।

আমাদের দিন : আপনার ইশতেহারে মূল স্লোগান কি থাকছে?

তাবিথ আউয়াল : আমি ইশতেহারটা এখনো ফাইনাল করিনি। তৈরি হলে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। আমরা চাচ্ছি যে, সবার মতামত নিয়ে ইশতেহারটা তৈরি করতে। জনকল্যাণমুখী করতে।

তবে আমাদের একটা জিনিস এখনই চূড়ান্ত রয়েছে— অদম্য ঢাকা গড়ে তোলা, এটাকে কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না। যতই পেশীশক্তি ব্যবহার করুক, যতই সরকার হস্তক্ষেপ করুক, যতই চেষ্টা করুক বিভিন্নভাবে আমাদের মুখ বন্ধ করে রাখতে, তবুও আমাদের এই অগ্রযাত্রায় বিএনপির পাশে থাকবে জনগণ।


আমাদের দিন  : যানজট, সড়ক দুর্ঘটনা, দূষিত বায়ু, ফুটপাত দখলে মানুষের কষ্ট সীমাহীন, এগুলো নিরসনে আপনার পদক্ষেপ কি থাকবে?

তাবিথ আউয়াল : এ পদক্ষেপটায় যেটা সবাই কমপ্লেন করে সেটাতে প্রথমেই থাকবে জনমত নিয়ে নির্বাচন করা, নির্বাচিত হওয়া। জনমত নিয়ে যারা নির্বাচিত হচ্ছে না তারা যতই চেষ্টা করুক সমন্বয় করার জন্য সরকারি সংস্থাগুলোর সাথে, জনগণের সাথে, তারা সব জায়গায় ব্যর্থ হচ্ছেন। তো আমার প্রথম কথা হচ্ছে, জনগণ নিয়ে নির্বাচিত হতে হবে। আমি নির্বাচিত হলে সমন্বয়ের জায়গাটাকে বেশি গুরুত্ব দেব।

দুর্নীতিমুক্ত নগরী গড়ে তোলার জন্য উঠে পড়ে লাগবো। এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে কেউ কথা বলতে পারছে না, মত প্রকাশ করতে পারছে না, ভয়ভীতি নিয়ে বাস করছেন।

আর যে সমস্যাগুলো গণমাধ্যম তুলে ধরছে, মানুষ আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে, ডেঙ্গু রোগ যদি আমি ধরি একটা এক্সাম্পল এ সমস্যাগুলো কিন্তু অস্বীকার করা হচ্ছে, আমার প্রথম স্টেপ থাকবে আমি কোনো সমস্যাকে অস্বীকার করবো না। সমস্যার কথা স্বীকার করে সমাধান করার চেষ্টা করবো।

আমাদের দিন : একজন স্বপ্নবাজ আনিসুল হক। এ দেশের গণমাধ্যমে, সাধারণ মানুষের বুকে তার কাজের জন্য আরও বহু বছর বেঁচে থাকবেন বলে অনেকে মনে করেন। সেই আনিসুল হকের কোনো কাজ আপনার ভালো লেগেছে কিনা, যদি লেগে থাকে সেই কাজটি আপনি করবেন কিনা?

তাবিথ আউয়াল : আনিসুল হক সাহেবের অনেকগুলো পদক্ষেপ শুধু আমার একার নয়, জনগণেরও ভালো লেগেছিল। তো একটা, যেটা মোস্ট ফেমাস, সেটা হলো সাতরাস্তার মোড়ে ট্রাকস্ট্যান্ড সরিয়ে দিয়ে রাস্তাটাকে জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছেন তিনি। এরকম পদক্ষেপ, আমার দায়িত্ব পালন করার জন্য যদি সুযোগ আসে, তাহলে এরকম রাস্তা যেগুলো বেদখল করে বসে আছে, সেগুলো জনকল্যাণে উন্মুক্ত করে দেবো।

আমাদের দিন  : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না বলে বলেছেন, দলের আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেছেন জেনেশুনে বিষপান করছি পান, এমন পরিস্থিতিতে এবার শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকবেন কিনা?

তাবিথ আউয়াল :নির্বাচনে যেহেতু আমরা জেনে শুনে যাচ্ছি, এ নির্বাচনের ওপর আমাদের বিন্দুমাত্র আস্থা নেই। কোনোভাবেই অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন হবে না। যখন এসব জিনিস জেনেই আমরা যাচ্ছি, তো আমাদের মূল লক্ষ্য হলো নির্বাচনের মাঠে থেকে আমাদের আন্দোলনকে আরও ত্বরান্বিত করা।

নির্বাচনের শেষ পর্যন্ত আমরা থাকবো। নির্বাচনে অংশগ্রহণের আরেকটা লক্ষ্য হলো গণতন্ত্রের প্রক্রিয়াটাকে বজায় রাখা। এই সরকার গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। আমরা চাচ্ছি অংশগ্রহণ করে হলেও এ সরকারকে প্রেসার দেয়া। সবকিছু বিবেচনা করে এবার আমাদের শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকতে হবে।

আমাদের দিন  : ইভিএমে কেমন ভোট হবে, এ নিয়ে কী বলবেন?

তাবিথ আউয়াল : ইভিএমে কেমন ভোট হবে এটা দেখার জন্য আরও অপেক্ষা করতে হবে। তবে আমাদের যে আশঙ্কা, যে চিন্তা, ইতোমধ্যে আমরা নির্বাচন কমিশনকে জানিয়ে দিয়েছি, টেকনিকেলভাবে বলেছি, আইনিভাবে বলেছি। আগামী দিনগুলোতে এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনারের সাথে আমরা আবার বসবো।

সংলাপ করে আমরা নির্বাচন কমিশনকে বুঝাতে চেষ্টা করবো এই নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করাটা একেবারেই উচিত হবে না। ব্যবহার করলে কি হবে, ভোট চুরি, ডিজিটালভাবে হবে। অনেক ভোটার এ আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। তারা ভোট দিবেন এক প্রতীকে তা হয়ে যেতে পারে আরেক প্রতীকে।

তারা আশঙ্কা করছেন যে, ইভিএমে ভোট দিতে পারবেন কিনা! ভোট দিতে পারলেও ভোট সঠিকভাবে গণনা হবে কিনা, মেশিন কাজ করবে কিনা, এই প্রশ্নগুলোর উত্তর যতক্ষণ পর্যন্ত পাওয়া যাবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত শুধু আমরা কেন সারা দেশবাসী বলবে ইভিএমে ভোট করা যাবে না।

আমাদের দিন  : ভোটারদের উদ্দেশ্যে কী বলবেন—

তাবিথ আউয়াল : ভোটারদের উদ্দেশ্যে আমি একটা কথাই বলতে চাচ্ছি, আমরা যদি নীরব থাকি, চুপ থাকি, তাহলে এই ভীতি কিন্তু কখনো শেষ হবে না। তাই যত কিছুই আসুক আমরা আগামী দিনে ভোট দিতে যাবো। আপনারা আপনাদের নিজ নিজ দায়িত্ব থেকে ভোট দিতে যাবেন, আপনাদের ভোটার অধিকার আপনাদের ফেরত আনতে হবে। আপনাদের ভোটে নির্বাচিত হয়ে যে আসবে সে যাতে আপনাদের জন্য কাজ করতে পারেন।