ঢাকা শনিবার, ৩রা মে ২০২৫, ২১শে বৈশাখ ১৪৩২


ভাইদের বিরুদ্ধে সম্পত্তি না দেওয়ার অভিযোগ বোনের


৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১১:০৬

আপডেট:
৩ মে ২০২৫ ১৭:২৭

উত্তরাধিকারসূত্রে বাবার থেকে প্রাপ্য সম্পত্তি বুঝিয়ে না দেওয়ায় ভাইদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন লক্ষীপুরের কমলনগর উপজেলার চর লরেন্স ইউনিয়নের চর লরেন্স গ্রামের মাস্টার মাকছুদুর রহমানের স্ত্রী সেলিনা রহমান। এ ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন, ভুক্তভোগী নারীর আপন দুই ভাই চর লরেন্স শহীদ স্মৃতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহফুজুল হক মিলন ও দক্ষিণ-পূর্ব চর লরেন্স সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মামুন হোসেন লিটন। 

অভিযোগকারীর মতে, তার বাবা হাজী রুহুল আমিন ২০১৮ সালের ২২ ডিসেম্বর মারা যান, আর মা রৌশনারা বেগম মারা যান ২০০৮ সালের ৩১ মে। ইসলামী ও রাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী, উত্তরাধিকারীদের মধ্যে সম্পত্তি ভাগ হওয়া উচিত ছিল। তবে দুই ভাই সম্পত্তির সঠিক পরিমাণ প্রকাশ করেননি এবং বোনদের অংশ বুঝিয়ে দেননি। অভিযোগকারী সেলিনা রহমান বলেন, "মোট সম্পত্তির পরিমাণ আনুমানিক ৩৫ একর বা তারও বেশি। কিন্তু ভাইয়েরা সম্পত্তির হিসেবই দেয় না।"

এ নিয়ে লক্ষীপুর জেলার কমলনগর উপজেলায় ১০০ বারের বেশি সালিশ হয়েছে, এমনকি থানায় বৈঠকও হয়েছে। কিন্তু অভিযুক্তরা কোনো সিদ্ধান্ত মানেননি বলে দাবি করেছেন সেলিনা রহমান। তিনি জানান, "ভাইর শ্বশুর আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি হওয়ায় তারা ক্ষমতার দাপটে কিছুই মানে না। আমার স্বামী জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি করতেন বলে এতদিন কিছু বলতে পারেননি।"

অভিযোগকারী আরও জানান, তার স্বামী রাজনৈতিক কারণে গত ১৬ বছরে ৮-৯ বার জেল খেটেছেন এবং সাত বছর চাকরি থেকে সাসপেন্ড ছিলেন। এতে পরিবার অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। এখন তার স্বামীর হার্টের সমস্যার চিকিৎসার জন্য বড় অঙ্কের টাকার প্রয়োজন, অথচ তারা সম্পত্তি বিক্রি করতে পারছেন না।

অভিযোগকারী জানান, ৫ আগস্ট তার স্বামী কমলনগর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও জামায়াতের শ্রমিক সংগঠন জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সহ-সভাপতির মাওলানা হুমায়ুন কবিরের কাছে যান। তার সহযোগিতায় থানায় যান, কিন্তু সেখানেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

ভুক্তভোগী নারী সেলিনা রহমানের ছেলে মশিউর রহমান আশিকের দাবি, ২০০৬ সালে তার মামা অভিযুক্ত মাহফুজুল হক মিলন কমলনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী নিলুফা ইয়াসমিনকে নিয়ে পালিয়ে যান। সেই মামলার মীমাংসার জন্য তার বাবা ৩ লাখ ১৯ হাজার টাকা দেন, যা এখনো ফেরত দেননি অভিযুক্ত মাহফুজুল হক মিলন।

সম্পত্তি না দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মাহফুজুল হক মিলন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বোনকে সম্পত্তি দিয়ে দেয়া হয়েছে। সে সম্পত্তি বিক্রি করলে কোনো আপত্তি নেই। 

অপর অভিযুক্ত মামুন হোসেন লিটনও অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, বোনকে সম্পত্তি দেয়া হয়েছে। সম্পত্তি দিতে তাদের কোনো আপত্তি নেই। 

এ বিষয়ে কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলামের নিকট জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে অবগত নন বলে জানান।