সেই দবিরুলের পাশে দাড়ালেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নজরুল ইসলাম বাবু!

অর্থের অভাবে চিকিৎসা বন্ধ থাকা দিনাজপুর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি দবিরুল ইসলামের (৫০) পাশে দাঁড়ানোর আগ্রহ দেখিয়েছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতৃবৃন্দ। তারা দবিরুলকে ঢাকায় এনে উন্নত চিকিৎসা করানোর আশ্বাস দিয়েছেন।
ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত এক সময়ের রাজপথের লড়াকু সৈনিক দবিরুল ইসলামকে নিয়ে চলতি বছরের ১০ অক্টোবর দৈনিক আমাদের দিনে টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেনা ছাত্রলীগ নেতা! শিরোনামে একটি নিউজ প্রকাশিত হয়।
সেই সংবাদটি চোখে পড়ে ২০০২-২০০৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি লিয়াকত সিকদার ও সাধারণ সম্পাদক নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের এমপি নজরুল ইসলাম বাবুর। তাৎক্ষণিকভাবে তারা দবিরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং তাকে চিকিৎসার আশ্বাস দেন। এছাড়াও সংবাদটি পড়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের আরও ৬/৭ জন নেতা তার খোঁজখবর নিয়েছেন।
সংবাদ প্রকাশের পর তার নিজ জেলা দিনাজপুরের কয়েকজন নেতা তাকে আর্থিকভাবে প্রায় অর্ধলক্ষ টাকা সহায়তা করেছেন। যা দিয়ে তিনি চিকিৎসা চালাচ্ছেন।
অসুস্থ্ দবিরুল ইসলাম দৈনিক আমাদের দিনকে জানান। তিনি বলেছেন, আমি নির্বাচিত হই আর না হই তোমার চিকিৎসা করাবো। আমি বেঁচে থাকতে তোমার মতো ছাত্রনেতা বিনাচিকিৎসা মারা যেতে পারে না। এছাড়াও কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লিয়াকত সিকদারসহ ৬-৭ জন রাজনৈতিকসহ যোদ্ধা। তারাও আশ্বাস দিয়েছেন চিকিৎসার।
দবিরুল ইসলাম জানান, তিনি তার চিকিৎসার বিষয়ে আশার আলো দেখছেন। আগামী ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের পর চিকিৎসার জন্য ঢাকায় যাবেন।
২০১৬ সালের ৬ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক দবিরুল ইসলাম ব্রেইন স্ট্রোক করে অসুস্থ হয়ে পড়েন। কথা ঠিকমতো বলতে পারেন না, ডান হাত অকেজো, ডান পায়ে শক্তি পান না। বাড়ির পাশে একটি দোকান ঘরে মাথার উপর বঙ্গবন্ধু ও তার কন্যা প্রধানমন্ত্রীর ছবি নিয়ে সারাদিন বসে সময় কাটে তার। এ অবস্থাতেও পালন করেন বঙ্গবন্ধুর জন্ম ও মৃত্যুবাষির্কীসহ বিভিন্ন কর্মসূচি।
এ ছাড়াও স্টোকের কারণে প্যারালাইসেসে আক্রান্ত হয়ে তার পিতা তোফাজ্জল হোসেন (৮৫) ও মা মাহামুদা বেগম(৭৫) অসুস্থ অবস্থায় রয়েছেন।
দিনাজপুর উপশহরের (ব্লক নং-৬/এ প্লট নং ৩৬ (নতুন) ৯নং ওয়ার্ড) খেড়পট্টির বাসিন্দা দবিরুল ইসলাম ১৯৮৮ ও ১৯৯১ সালে পরপর দুই বার নির্বাচিত হয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের দিনাজপুর জেলার দফতর সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৪ সালে দিনাজপুর জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ১৯৯৮ সালের ১৩ অক্টোবর সভাপতি নির্বাচিত হন। এরপর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নির্বাহী সদস্য ছিলেন। ২০০৫ সালে জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ কমিটির যুগ্ম আহ্বায়কেরও দায়িত্ব পান তিনি। বর্তমানে দিনাজপুর শহর আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য ।
এই সৈনিক অর্থাভাবে বাবা-মা, স্ত্রী ও একমাত্র সন্তান রফিকুল ইসলাম রিফাতকে নিয়ে রয়েছেন পারিবারিক বিপর্যয়ের মধ্যে। অর্থের অভাবে রংপুর, ঢাকা কিংবা বিদেশে চিকিৎসা করাতো দূরের কথা দিনাজপুরে চিকিৎসক দেখিয়ে যে ওষুধ কিনে খাবেন এ অবস্থাও তার নেই।