ঢাকা রবিবার, ৪ঠা মে ২০২৫, ২২শে বৈশাখ ১৪৩২


ইভিএম কেন্দ্রে অব্যবস্থাপনায় হট্টগোল, অসন্তুষ্ট কাজী ফিরোজ রশীদ


৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:১০

আপডেট:
৪ মে ২০২৫ ১৫:০১

ইভিএম কেন্দ্রে অব্যবস্থাপনায় হট্টগোল, অসন্তুষ্ট কাজী ফিরোজ রশীদ

ভোটগ্রহণের শুরুতেই হট্টগোল ও মারামারি। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) অনেকেই ভোট দিতে পারছেন না । আবার যারা ভোট দিচ্ছেন, তাদের সময় বেশি লাগছে। অনেক ভোটার সকাল সকাল কেন্দ্রে এলেও তাদেরকে ভোট না দিয়ে ফিরে যেতে দেখা গেছে।

ঢাকা-৬ আসনের একাধিক কেন্দ্র রোববার (৩০ ডিসেম্বর) ভোটের দিন সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত সরেজমিন ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে।

জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ঢাকা-৬ আসনের প্রার্থী কাজী ফিরোজ রশীদ রাজধানীর শেরেবাংলা বালিকা বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনের সময় সকাল সোয়া ৯টার দিকে ইভিএমে ভোট নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন।

এ সময়ে এই কেন্দ্রে মহাজোটের কর্মী-সমর্থকদের একজন ভোটারের ওপর চড়াও হতেও দেখা গেছে। মহাজোটের সমর্থকদের রাজধানীর শেরেবাংলা বালিকা বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে একজন ভোটারের জামা ছিঁড়ে ফেলতে দেখা গেছে। এমন সময়ে স্ট্রাইকিং ফোর্সের সদস্যরা (সেনা ও বিমান) উপস্থিত হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।


ঢাকা-৬ আসনে লাঙ্গলের প্রার্থী কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘ভোটের পরিবেশ দেখে আমি অখুশি। ভোট সুষ্ঠু হচ্ছে না। আমার আসনে ইভিএম ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু সবগুলো কেন্দ্রেই ইভিএমে জটিলতা দেখা দিয়েছে। আঙুলের ছাপ কাজ করছে না। একটা ভোট দিতে ২০-২৫ মিনিট লাগছে। ভোট ব্যবস্থাপনায় আমি আনহ্যাপি। ইভিএম কাজ করছে না। এভাবে তো সুষ্ঠু ভোট হওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।’

‘ভোট নিয়ে আমি টোটালি আনহ্যাপি’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘ভোটারদের অনেকেই এনআইডি (জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর) নিয়ে আসেননি, আমরা তাদেরকে স্লিপ দিচ্ছি, কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না। অনেক ভোটারের ভোটিং মেশিনে আঙুলের ছাপ উঠছে না, চেহারা ভেসে উঠছে, কিন্তু তাদেরকে ভোট দিতে দেওয়া হচ্ছে না।’

ভোটারদের অনেকেই স্মার্ট কার্ড নিয়ে ঘুরছে কিন্তু ভোট দিতে পারছে না— এমন অভিযোগ করে কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘আমরার কথা হচ্ছে, আমি ভোট কেন্দ্রে যাব, পছন্দের মতো প্রার্থীকে ভোট দেবো, কিন্তু এখানে সেটা কাজ করছে না। এখানে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা দেখা যাচ্ছে না।’

রাজধানীর শেরেবাংলা বালিকা বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে একাধিক ভোটারকে ভোট না দিয়ে ফিরে যেতে দেখা গেছে। এদের একজন সরকারি কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সারাবাংলাকে বলেন, ‘ভাই, ভোট দিতে এসেছিলাম। কিন্তু আসার পর বাসায় চলে যেতে বলা হলো। তাই চলে যাচ্ছি।’

এবারের ভোটে ঢাকা-৬ আসনে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নিজস্ব প্রার্থী নেই। দুই দলই এই আসনে ভর করেছে শরিকদলের ওপর।

পুরান ঢাকার সূত্রাপুর, ওয়ারী, গেন্ডারিয়া থানার পুরোটা এবং কোতোয়ালি ও বংশাল থানার একাংশ নিয়ে ঢাকা-৬ আসন, যা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩৪, ৩৭, ৩৮, ৩৯, ৪০, ৪১, ৪২, ৪৩, ৪৪, ৪৫ ও ৪৬ নম্বর ওয়ার্ড।

এই আসনে মোট ভোটার ২ লাখ ৬৯ হাজার ২৭৬ জন, যার মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৪৩ হাজার ৮০ জন এবং নারী ভোটার ১ লাখ ২৬ হাজার ১৯৬ জন।

এই আসনের সবগুলো কেন্দ্রেই লাঙ্গল এবং হাতপাখা প্রতীকের পোলিং এজেন্ট দেখা গেছে। বাকি প্রতীকের পোলিং এজেন্টদের সবগুলো কেন্দ্রে দেখা যায়নি।

এই আসন থেকে একাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোট করতে লড়ছেন মোট আট জন প্রার্থী। প্রার্থীরা হচ্ছেন লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ, ধানের শীষ প্রতীকে গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, গণফ্রন্টের মাছ প্রতীকে আহম্মেদ আলী শেখ, মুসলিম লীগের (বিএমএল) হারিকেন প্রতীকে ববি হাজ্জাজ, ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টির (এনপিপি) আম প্রতীকে আকতার হোসেন, সিপিবি’র কাস্তে প্রতীকে আবু তাহের হোসেন, জাতীয় পার্টির (জেপি) অংশের বাইসাইকেল প্রতীকে সৈয়দ নাজমুল হুদা এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাতপাখা প্রতীকে মানোয়ার খান।