“পাহাড়ে কোনো সন্ত্রাসীরই নিরাপদ আশ্রয় থাকবে না” এসপি কক্সবাজার
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া–হোয়াইক্যং পাহাড়ি এলাকা দীর্ঘদিন ধরে অপহরণকারী ও সশস্ত্র অপরাধীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে পরিচিত ছিল। দুর্গম ভৌগোলিক অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে এসব চক্র সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে আসছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে টেকনাফ থানা পুলিশ ও জেলা পুলিশের ধারাবাহিক অভিযানে সেই চিত্র বদলাতে শুরু করেছে।
পুলিশের গোয়েন্দা তৎপরতায় অভিযানের পরিকল্পনা বিশ্বস্ত গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ও মাঠপর্যায়ের অনুসন্ধানের ভিত্তিতে টেকনাফ থানা পুলিশের উদ্যোগে অদ্য ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ দক্ষিণ শিলখালী চৌকিদার পাড়া এলাকা থেকে বাহারছড়া–হোয়াইক্যং পাহাড়ি অঞ্চলে অপহরণকারী চক্র নির্মূলের লক্ষ্যে একটি বিশেষ যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানে টেকনাফ থানা পুলিশ ও বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের নেতৃত্বে বাংলাদেশ নৌবাহিনী, র্যাব–১৫, জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও জেলা পুলিশের অন্যান্য ইউনিট অংশ নেয়। দুর্গম পাহাড়ে পুলিশের সম্মুখভাগে অভিযান প্রায় ১৪ কিলোমিটার দুর্গম পাহাড়ি পথে পুলিশের বিশেষ দল সম্মুখভাগে থেকে অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে অপহরণকারী চক্রের ব্যবহৃত ৩টি ডেরা শনাক্ত করা হয়। এসব ডেরা পাহাড়ের গভীরে দীর্ঘদিন ধরে অপরাধ কার্যক্রম পরিচালনার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছিল বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
এ সময় পুলিশ একটি রাইফেলের ৫টি খালি কার্তুজের খোসা উদ্ধার করে, যা পাহাড়ি এলাকায় সশস্ত্র অপরাধীদের সক্রিয় উপস্থিতির প্রমাণ দেয়। পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার এক সক্রিয় সদস্য অভিযানের একপর্যায়ে পুলিশের তৎপরতায় অপহরণকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য মোহাম্মদ ইউনুছ মিয়া (৪০) কে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ সূত্র জানায়, তিনি পাহাড়ি এলাকায় চক্রের তথ্য আদান–প্রদান ও আশ্রয় ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতেন।
এ বিষয়ে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার (এসপি) বলেন, “টেকনাফের পাহাড়ি এলাকায় কোনো অপহরণকারী বা সন্ত্রাসী চক্রেরই নিরাপদ আশ্রয় থাকবে না। পুলিশের নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর অভিযান নিয়মিত চলবে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।”
তিনি আরও বলেন, “গ্রেপ্তারকৃত আসামীর দেওয়া তথ্য যাচাই করে চক্রের অন্যান্য সদস্যদের বিরুদ্ধে শিগগিরই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।” আইনানুগ ব্যবস্থা ও তদন্ত অব্যাহত গ্রেপ্তারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে উদ্ধারকৃত আলামত ও প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে অপহরণকারী চক্রের বাকি সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে পুলিশের তদন্ত কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।
পুলিশের অভিযানে ফিরছে জন আস্থা।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পুলিশের ধারাবাহিক অভিযান ও নজরদারির ফলে পাহাড়ি এলাকায় অপরাধীদের তৎপরতা কমে আসছে। তারা আশা প্রকাশ করেন, পুলিশ বাহিনীর এমন দৃঢ় অবস্থান অব্যাহত থাকলে টেকনাফের পাহাড়ি অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।
