ঢাকা মঙ্গলবার, ৬ই মে ২০২৫, ২৩শে বৈশাখ ১৪৩২


হাসনাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে ফ্যাসিস্টকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিয়োগ

হাসনাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে ফ্যাসিস্টকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিয়োগ


৫ মে ২০২৫ ২১:৩১

আপডেট:
৬ মে ২০২৫ ০১:১৪

কুড়িগ্রাম নাগেশ্বরী হাসনাবাদ ইউনিয়নে ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হাসনাবাদ আদর্শ জনতা বিদ্যা বিতান উচ্চ বিদ্যালয়ে আওয়ামী ফ্যাসিস্টকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে এডহক কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগের দোসর উমানান্দ রায়কে গোপনে নিয়োগ দেয়ায় গত ২২(এপ্রিল) শিক্ষক ও ছাত্র জনতার উপস্থিতিতে তার বিরুদ্ধে একটি মানবন্ধনও অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তার এ নিয়োগকে কেন্দ্র করে দু-পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির মত ঘটনাও ঘটেছে বলে জানাগেছে।

জানা গেছে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি আসলাম হোসেন সওদাগরের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ও হাসনাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা ও অত্র প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক উমানান্দ রায়কে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি মোছাঃ শাহিমা খাতুন ও তার স্বামী হাসনাবাদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা নুর মোহাম্মদ দুলাল।

গত ২১ এপ্রিল অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম খন্দকার অবসর গেলে প্রধান শিক্ষকের পদটি শুন্য হয়। তার এ নিয়োগকে কেন্দ্র করে অত্র বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

আওয়ামীলীগ সরকারে আমলে উমানান্দের বিরুদ্ধে শিক্ষকদের বিএনপি জামায়াত ট্যাগ দিয়ে কোণঠাসা করে রাখার অভিযোগ করেছেন বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক। বিদ্যালয়ের নথি সুত্রে দেখা যায় এমপিও ভুক্ত হওয়া বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মোঃ নুর হোসেন মিয়াকে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে নিয়োগ না দিয়ে তার তিন মাস পর এমপিও প্রাপ্ত জুনিয়র শিক্ষক উমানান্দ রায়কে নিয়োগ দিয়েছে কমিটি।

সদ্য বিদায়ী সাবেক প্রধান শিক্ষক ও আওয়ামী নেতা (পলাতক) মোঃ জাহাঙ্গীর আলম খন্দকার ও বিদ্যালয়ের সভাপতি শাহিমা খাতুনের যোগসাজসে রাতের অন্ধকারে ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্য নিয়োগ দিয়েছে বলে দাবি করছে স্থানীয়রা।

এদিকে সিনিয়র শিক্ষক মোঃ নুর হোসেন মিয়া দাবি করে বলেন আমি ৯৫ সালে ফেব্রæয়ারী মাসে এমপিও ভুক্ত হই আমার ইনডেক্স-২৫৬৮৫৫। অত্র প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক উমানন্দ একই সালের মে মাসে এমপিও ভুক্ত হয় তার ইনডেক্স-২৫৮৩৭৩ নথি সুত্রে জানা গেছে। অত্র প্রতিষ্ঠানের সভাপতি জ্যেষ্ঠতা না মেনে সম্পর্ণ অবৈধ নিয়ম বর্হিভূত ভাবে ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্য আমার জুনিয়র সহকারী শিক্ষককে নিয়োগ দিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

জাহাঙ্গীর আলম নিজের দূর্নীতি ধামাচাপা দিতে তার পরামর্শে সভাপতি শাহীমা খাতুন উমানান্দ রায়কে নিয়োগ দিয়েছেন তিনি দাবি করেন। এ বিষয় জানতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক উমানান্দ রায়ের সাথে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেস্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি ।

এডহক কমিটি কর্তৃক উমানান্দকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের বিষয় সত্যতা স্বীকার করে উপজেলা উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কামরুল ইসলাম বলেন জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নির্দেশ দিয়েছেন আমাকে আগামীকাল উভয়ের কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। বর্তমান উমানান্দ রায় বিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নিলেও বিদ্যালয়ে অনুস্থিত বলেও তিনি স্বীকার করেন।

অত্র বিদ্যালয়ের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দের টাকা আত্মসাতসহ নানা অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। সাবেক এই প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম খনন্দকার ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক উমানান্দ রায়ের যোগসাজশে আওয়ামী সরকারে আমলে প্রভাব খাটিয়ে দুর্নীতি করলেও এখনো বহাল তবিয়ত থেকে উমেনান্দ রায় অত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পদ বাগিয়ে নিয়েছেন।

এদিকে সাবেক প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম খন্দকার বিরুদ্ধে গত ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার উপর হামলার মামলায় গত ১১ ফেব্রুয়ারী ভুরুঙ্গামারী থানায় রেকর্ডকৃত ১৭ নম্বার এজহারভুক্ত পলাতক আসামী বলে জানা গেছে।