অভিনব রায়
গাছ লাগানো ও মসজিদ পরিষ্কারের শর্তে মিলল জামিন

মাদক সেবন ও বিক্রয়ের অভিযোগে আটক সাদ্দাম হোসেনকে ব্যতিক্রমধর্মী শর্তে জামিন দিয়েছেন সিলেটের একটি আদালত। আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, জামিনের শর্ত হিসেবে তাকে মসজিদ পরিষ্কার, কুরআনের ১০টি সুরা অর্থসহ মুখস্থ, রাসূল (স.)-এর জীবনী অধ্যয়ন এবং ৫০টি গাছ রোপণ ও পরিচর্যা করতে হবে।
জানা গেছে, সাদ্দাম হোসেন ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার কিসমত রসুলপুর গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে। বর্তমানে তিনি সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার সুপাতলা গ্রামে বসবাস করেন। মাদকাসক্ত এবং মাদক বিক্রয়ের অভিযোগে পুলিশ তাকে আটক করে কারাগারে পাঠায়।
বুধবার (৭ মে) এই জামিন মঞ্জুর করেন সিলেটের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৪র্থ আদালতের বিচারক। জামিনের শর্ত অনুযায়ী, প্রতি শুক্রবার নিয়মিত নামাজ আদায়ের পাশাপাশি স্থানীয় মসজিদে গিয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজে অংশ নিতে হবে।
আদালতের আদেশে আরও বলা হয়েছে, সাদ্দামকে আমপারার অন্তত ১০টি সুরা অর্থসহ মুখস্থ করতে হবে। তিনি যদি নিজে না পড়তে পারেন, তাহলে অন্যের মাধ্যমে শুনে তা আয়ত্ত করতে হবে। পাশাপাশি রাসূল (স.)-এর জীবনী পাঠ করতে হবে।
শুধু ধর্মীয় অনুশাসন নয়, পরিবেশ সুরক্ষার অংশ হিসেবেও শর্ত আরোপ করা হয়েছে। তাকে অন্তত ৫০টি গাছ রোপণ করতে হবে এবং নিয়মিতভাবে এসব গাছের যত্ন নিতে হবে।
আদালতের আদেশে বলা হয়েছে, পরবর্তী ১ বছর সাদ্দাম হোসেনকে প্রবেশন অফিসারের তত্ত্বাবধানে থাকতে হবে এবং তার সব নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। এই সময়কালে কোনো ধরনের অপরাধে জড়ানো যাবে না, বরং শান্তিপূর্ণ ও সদাচরণে জীবন পরিচালনা করতে হবে।
জামিনের শর্ত হিসেবে ৫০০ টাকার একটি বন্ড সম্পাদনের নির্দেশও দিয়েছেন বিচারক।
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন দিলু বলেন, আদালতের রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। সাদ্দাম ভুল পথে গিয়ে মাদকাসক্ত হয়েছিল। এখন সে নিজেকে শুধরে ভালো পথে চলতে চায়।
আদেশে আরও বলা হয়েছে, সাদ্দাম তার পরিবারের নির্ভরশীল সদস্যদের প্রতি যত্নবান হবেন এবং পারিবারিক বন্ধন বজায় রাখবেন। প্রবেশন কর্মকর্তার অনুমতি ছাড়া পেশা ও বাসস্থান পরিবর্তন করা যাবে না এবং সবসময় আদালতের স্থানীয় অধিক্ষেত্রের মধ্যে অবস্থান করতে হবে। মাদক সেবন, বিক্রয় এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখা যাবে না।