ঢাকা শুক্রবার, ৪ঠা জুলাই ২০২৫, ২০শে আষাঢ় ১৪৩২


গুচ্ছগ্রামের পরিত্যক্ত ঘরেও স্থান হলো না গৃহহীন মমেনা বেগমের


প্রকাশিত:
৩ জুলাই ২০২৫ ২০:৩১

শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে গুচ্ছ গ্রামের পরিত্যক্ত ঘরেও স্থান হলো না গৃহহীন মমেনা বেগমের। বিধবা নারী মমেনা বেগম ৪০ বছর ধরে অন্যের বাড়ির আশ্রিতা। শত আবেদন করেও মাথাগোঁজার ঠাই হলো হয়নি মমেনা বেগমের। সহায় সম্বল বলতে কিছুই নেই মমেনা বেগমের। মমেনা বেগম (৬৫) একজন দিনমজুর। বিধবা নারী মমেনা বেগম দিনমজুরি করে চলে তার সংসার। একদিন কাজে না গেলে তার ঘরে চুলা জ্বলে না। সেদিন থাকতে অনাহারে অর্ধাহারে। মাথাগোঁজার ঠাইয়ের কথাতো বলার মতো কোন ভাষাই নেই।

মমেনা বেগম জানান গত ৪০ বছরে কত জনের বাড়িতে তিনি থেকেছেন তার কোন হিসেব নেই। মমেনা বেগমের এসব দুঃখ দুর্দশার বিষয়ে সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় লেখা-লেখি প্রশাসনের দৃষ্টি গোচর হয়। পরে ১ জুলাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম রাসেল মমেনা বেগমকে গোমড়া গুচ্ছ গ্রামের একটি পরিত্যক্ত ঘরে তুলে দেন।

স্থানীয়রা জানান ২০১২ সালে গুচ্ছগ্রামটি নির্মাণের পর ঘর বরাদ্দ নিয়ে ফেলে রেখেছেন। গত ১০ বছর ধরে ৫টি ঘর পরিত্যক্ত অবস্থায় পরে আছে। জানা গেছে, এ গুচ্ছ গ্রামে টাকার বিনিময়ে বহিরাগতের পুনর্বাসন করা হয়। আবার কেউ কেউ ঘর বরাদ্দ নিয়ে বিক্রি করে দিয়েছেন। কেউ কেউ দিয়েছে আত্মীয় সজনকে।

অভিযোগ রয়েছে ওই পরিত্যক্ত ঘরে মমেনা বেগমকে তুলে দেয়া হলেও পরদিন ১০ বছর পুর্বের বসবাসকারী জাহেরা বেগম ও তার লোকজন ওই ঘর থেকে মমেনা বেগম বের করে দেয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশ অমান্য করে জাহেরা বেগমের লোকজন মমেনা বেগমকে উক্ত ঘর থেকে বের করে দিলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি।

প্রসংগত উল্লেখ্য যে জাহেরা বেগম অপ্রয়োজনে গুচ্ছ গ্রামের সরকারি ঘর বরাদ্দ নিয়ে গত ১০ বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় ফেলে রেখেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম রাসেল মমেনা বেগমকে ওই পরিত্যক্ত ঘরে স্থান দেয়ার খবর শুনে জাহেরা বেগম ঢাকা থেকে এলাকায় এসে জাহেরা বেগম ও তার লোকজন মমেনা বেগম ঘর থেকে বের করে দেয়। এ নিয়ে সচেতন মহলের মধ্যে নানা প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় একটি কূচক্রী মহল জাহেরা বেগমের পক্ষাশ্রিত হয়ে আগুনে ঘি ঢেলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে তুলার চেষ্টায় লিপ্ত থাকার অভিযোগে রয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম রাসেলের সাথে কথা হলে তিনি বলেন মমনা বেগমকে মাথাগোঁজার ঠাই করে দিতে চেষ্টা তো করাই হলো। এরপরেও তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে জানান।