গোপালগঞ্জে গুলিবিদ্ধদের ৩ জন ঢাকা মেডিকেলে

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পদযাত্রা ও সমাবেশ ঘিরে হামলা-সংঘর্ষের মধ্যে যারা আহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ তিনজনকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে।
বুধবার রাতে সুমন বিশ্বাস (২৫), রমজান মুন্সী (২৮) ও আব্বাস আলী সরকার (৩০) নামের এ তিনজনকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়।
সেখানকার পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক বলেন, “আহত যুবকদের হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।”
আহত সুমন বিশ্বাসের মা নিপা বিশ্বাস হাসপাতালে বলেন, সুমন পানি সরবরাহ প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। সেই কাজে গাড়িতে করে মাল নিয়ে যাওয়ার সময় গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার শিশু বন এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন। ডান কোমরের উপরে এবং ডান হাতের আঙুলে গুলি লেগেছে।
একইদিনে গোপালগঞ্জ সদরের লঞ্চ ঘাট এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন রমজান মুন্সী।
তার ভাই ইমরান মুন্সী বলেন, রমজান অটোরিকশা চালান। বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে অটোরিকশা নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি গুলিবিদ্ধ হন। তার ডান হাতের কব্জির উপর এবং ডান বগলে গুলি লেগেছে।
গোপালগঞ্জের লঞ্চঘাট এলাকায় গুলিবিদ্ধ আরেক অটোরিকশা চালক আব্বাস আলী সরকারকে রাত ২টার দিকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়।
আহতের স্ত্রী রহিমা বেগম বলেন, বুধবার বিকাল ৪টার দিকে রিকশা চালিয়ে যাওয়ার সময় আব্বাসের বাম পায়ের হাঁটুর উপরে গুলি লাগে।
গোপালগঞ্জে এনসিপির পদযাত্রা ও সমাবেশ ঘিরে মঙ্গলবার থেকেই উত্তেজনা বিরাজ করছিল। বুধবার এনসিপি নেতাকর্মীরা শহরের পৌর পার্ক মাঠে কর্মসূচি শুরুর আগেই সড়ক অবরোধকে কেন্দ্র করে পুলিশের গাড়িতে আগুন ও ইউএনওর গাড়িতে হামলা হয়। বেলা দেড়টার দিকে পৌর পার্কের মঞ্চে সমাবেশ শুরুর আগে হামলা হয়।
কিছুক্ষণ বাদে সেখানে সংক্ষিপ্ত কর্মসূচি করে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা পুলিশ ও সেনা পাহারায় মাদারীপুরের দিকে রওনা দিলে লঞ্চঘাট এলাকায় হামলার মুখে পড়েন। এ সময় পুলিশের সঙ্গে হামলাকারীদের সংঘর্ষ বেধে যায়।
দফায় দফায় হামলা, সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ ও গুলির শব্দে গোটা গোপালগঞ্জ শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষের পর অন্তত চারজনের লাশ গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে আসে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিকালে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। তাতেও কাজ না হলে সন্ধ্যার পর জারি করা হয় কারফিউ।
দেশজুড়ে ‘জুলাই পদযাত্রা’র ধারাবাহিক কর্মসূচির মধ্যে ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচিতে ‘ফ্যাসিস্ট মুজিববাদীরা’ হামলা চালায় বলে এনসিপি নেতারা অভিযোগ করেছেন। দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়ে বৃহস্পতিবার সারাদেশে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন। পাশাপাশি ‘জুলাই পদযাত্রা’র পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচিও বহাল রেখেছেন।