ঢাকা বুধবার, ২৩শে জুলাই ২০২৫, ৮ই শ্রাবণ ১৪৩২


তালায় মাদকাসক্ত ছেলেকে হত্যার অভিযোগে মা গ্রেফতার


প্রকাশিত:
২২ জুলাই ২০২৫ ১৮:৩২

ছবি : সংগৃহীত

সাতক্ষীরার তালায় মাদকাসক্ত ছেলে হাবিবুর রহমানকে খুন করার অভিযোগে হতভাগ্য মা পারুল বেগম গ্রেফতার হয়েছে।

তালা থানা পুলিশ সোমবার (২১ জুলাই) রাতে তাকে গ্রেফতার করেন। এ ঘটনায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক মা খুনের ঘটনা স্বীকার করেছেন। মাদকাসক্ত ভ্যান চালক ছেলে মটরসাইকেল না পেয়ে মাকে খুন করতে আসলে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ছেলে খুন হয়।

জানা গেছে, উপজেলার আটরই গ্রামের আব্দুল্লাহ মোড়লের ছেলে মো. হাবিবুর মোড়ল (৩০) পেশায় ভ্যানচালক এবং মাদকাসক্ত। মাদক সেবনের জন্য সে প্রায়ই তার কৃষি শ্রমিক বৃদ্ধ মা পারুল বেগম (৫৫) এবং স্ত্রীকে মারপিট করতো। একারনে ইতোপূর্বে তার ২টি স্ত্রী সংসার ছেড়ে চলে যায়।

নিহত হাবিবুরের বর্তমান স্ত্রী শান্তা খাতুন বলেন, তার স্বামী মাদক সেবন করে আবার কখনও মাদকের টাকার জন্য তাকে সহ শাশুড়ি পারুল বেগমকে মারপিট ও গালিগালাজ করতো। গত কিছুদিন ধরে স্বামী হাবিবুর মটোরসাইকেল কেনার জন্য শাশুড়ির কাছে টাকা চেয়ে চাঁপ দিচ্ছিল। কিন্তু দরিদ্র শাশুড়ি সেই টাকা দিতে পারেনি।

গতকাল সোমবার (২১ জুলাই) রাত ৯টার দিকে স্বামী হাবিবুর রহমান বাড়িতে এসে টাকার জন্য আমাকে ও আমার শাশুড়িকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ সহ মারপিট করে। এক পর্যায়ে আমি অচেতন হয়ে পড়ি এবং জ্ঞান ফেরার পর স্বামীকে রক্তাক্ত দেখি। এসময় তার কপাল, গলা ও বুকে কোপের চিহ্ন ছিল। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে স্বামী হাবিবুর রহমানকে তালা হাসপাতালে নিয়ে আসলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করেন।

ঘটনার সংবাদ পাওয়া মাত্র তালা থানা পুলিশ তালা হাসপাতালে এসে লাশ উদ্ধার করেন এবং ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেন। এসময় নিহত হাবিবুর রহমানের মা পারুল বেগম খুন করার কথা প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে ছেলের সাথে তার ধস্তাধস্তির করা স্বীকার করে বলেন- ছেলে আজও আমাকে গালিগালাজ করে এবং ধারালো হাসুয়া দিয়ে আমাকে জবাই করতে আসে। এসময় ধস্তধস্তির এক পর্যায়ে ছেলে হাবিবুরে গলায় ও বুকে হাসুয়ার কোপ লাগলে সে মারা যায়।

এ ব্যপারে তালা থানার ওসি মো. মাইনউদ্দিন বলেন, ঘটনার সংবাদ পেয়ে গত রাতে ঘটনাস্থল থেকে হত্যার আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। এঘটনায় নিহতের স্ত্রী শান্তা খাতুন বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা (১১/২৫) দায়ের করেছেন।

অপরদিকে গতরাতে তালা হাসপাতাল থেকে আটক মা পারুল বেগমকে মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সকালে আদালতের মাধ্যমে সাতক্ষীরা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া নিহত হাবিবুরের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।