প্রধান শিক্ষককে আটকে বেধড়ক মারধর, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায় বিদ্যালয়ে যাবার পথে প্রধান শিক্ষককে অটোরিকশায় বেধড়ক পিটিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এতে ওই শিক্ষকের ডান চোখ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি নিয়োগকে কেন্দ্র করে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন ওই শিক্ষক।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পটিয়া পৌরসদরের বিওসি রোডে এ ঘটনা ঘটে। হামলার খবর পৌঁছার পর বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন বিক্ষোভ শুরু করেছেন।
আক্রান্ত শ্যামল কান্তি দে পটিয়া উপজেলার হাঈদগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিদ্যালয়টির তিন শিক্ষক শ্যামল কান্তি দে, তানিয়া ইয়াসমিন ও প্রান্ত বড়ুয়া একই অটোরিকশায় করে যাচ্ছিলেন। পথে আগে থেকে ওঁত পেতে থাকা ৬–৭ জন সন্ত্রাসী অটোরিকশার গতিরোধ করে।
এসময় তারা শ্যামলকে টেনেহিঁচড়ে অটোরিকশা থেকে নামিয়ে বেধড়ক মারধর করে। এতে তিনি গুরুতর আহত হয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। সঙ্গে থাকা দুই শিক্ষকের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে গেলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।
হামলার সময় সন্ত্রাসীদের হাতে বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র দেখা গেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
এদিকে খবর পেয়ে বিদ্যালয় থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে যান। তারা আহত প্রধান শিক্ষককে নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে বিদ্যালয়ে যান। এতে স্থানীয় লোকজনও যোগ দেন।
খবর পেয়ে বেলা ১২টার দিকে পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওই বিদ্যালয়ে অ্যাম্বুলেন্স পাঠিয়ে আহত শিক্ষককে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। বর্তমানে সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন আছেন।
তবে বিদ্যালয় ও সামনের সড়কে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এলাকাবাসীসহ অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে যাচ্ছেন। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা শুরু হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পটিয়া থানা পুলিশ বিদ্যালয়ে অবস্থান করছে।
পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুজ্জামান বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকের ওপর হামলার বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। স্কুলেও ফোর্স গেছে। কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে সেটা আমরা তদন্ত শুরু করেছি। জড়িতদের শনাক্তের কাজ চলছে। তাদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।’
আহত প্রধান শিক্ষক শ্যামল দে সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিদ্যালয়ের সভাপতি নিয়োগকে কেন্দ্র করে এলাকার একটি প্রভাবশালী মহল দীর্ঘদিন ধরে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। আগেও আমাকে একাধিকবার প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে। জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে আমি পটিয়া থানায় দুটি সাধারণ ডায়েরিও করেছি।’
পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারহানুর রহমান বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকের ওপর হামলার বিষয়টি পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে জানানো হয়েছে। বিষয়টি আমরা সিরিয়াসলি নিয়েছি। ভুক্তভোগীর করা আগের জিডির প্রেক্ষিতে নিয়মিত মামলা হবে।’